বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে দেশে আজ চরম অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমরা সবাই মিলে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম, দেশে সুন্দর একটি পরিবেশ আসবে, তাঁরা সুন্দর একটি নির্বাচন দেবেন। কিন্তু পতিত সরকারের দোসররা আজ দেশের বিভিন্ন স্তরে রয়ে গেছে। সরকার তাদের কিছু করতে পারছে না। দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। দেশের মানুষ আজ না খেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরছে।’

বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথাগুলো বলেন।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়। নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান। সমাবেশ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

সমাবেশে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা চাই এই সরকার ব্যর্থ না হোক। তাহলে আমরা ব্যর্থ হয়ে যাব। এ জন্য তারেক রহমান আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখুন।’

ফ্যাসিস্ট সরকার আর ফিরতে পারবে না—উল্লেখ করে সেলিমা রহমান বলেন, ফ্যাসিস্টদের দোসররা এখনো দেশের বিভিন্ন স্তরে রয়ে গেছে। তাঁরা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, ক্ষতির ষড়যন্ত্র করছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন কলেজে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে। ফ্যাসিস্টদের দোসরদের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে আগস্ট অভ্যুত্থানের শক্তি পড়ে গেছে। এটা তাঁদের বুঝতে হবে।

হাসিনা ভারতের সঙ্গে অসম বিভিন্ন চুক্তি করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করেছে উল্লেখ করে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, দেশ ধ্বংস করেছে হাসিনা, দেশের টাকা লুট করে দেশের অর্থনীতি শেষ করে দিয়েছে হাসিনা। এখনো তারা ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে হলে দরকার বিএনপি ও দেশপ্রেমিক জনতাকে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আপনি বুঝতে চেষ্টা করুন, জবাবদিহিমূলক সরকার না হলে দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি, স্থিতিশীলতা আসে না।’ তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিএনপি ১৬ বছর সংগ্রাম করেছে। দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। এর পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশ ফুঁসে উঠেছিল। এর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছিল।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার। তিনি বলেন, ‘হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী জীবন দিয়েছে, গুম হয়েছে। আজও আমরা অপেক্ষায় থাকি আমাদের গুম হওয়া ভাইদের জন্য। বিএনপি যখন ১৬ বছর সংগ্রাম করে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করেছে, তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা আমাদের সঙ্গে শামিল হয়েছিল।’

মজিবর রহমান বলেন, ‘জনগণের কাছে জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা চাই তারেক রহমানের অবিলম্বে দেশে প্রত্যাবর্তন। আমরা চাই, বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হাসিনার সরকারের হাজার হাজার গায়েবি মামলা প্রত্যাহার। আমরা চাই, দেশের সবাই মিলে দেশের জন্য কাজ করবে, রাজনীতি করবে।’

সমাবেশ শুরুর আগে বরিশাল জেলার সব উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগদান করেন নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহাবুবুল হক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক রওনাকুল ইসলাম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শরফুদ্দিন আহমেদ, এবায়দুল হক, মোহাম্মদ দুলাল হোসেন, আবু নাসের রহমাতুল্লাহ, শহীদ হাসান প্রমুখ। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহিন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ষড়যন ত র র সদস য ব এনপ র সরক র র কম ট র আম দ র র রহম

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘স্বৈরাচারের পতন হলেও ষড়যন্ত্রের অবসান হয়নি’
  • ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে লুক্সেমবার্গও
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • ১৭ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজার সদস্য
  • ফরিদপুরে অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত
  • কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
  • আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের