আফগানিস্তান-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচেও বৃষ্টির শঙ্কা
Published: 27th, February 2025 GMT
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আগামীকাল আফগানিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ। অনেকেই এই ম্যাচকে নকআউট ম্যাচের সঙ্গে তুলনা করছে, কারণ এই ম্যাচের জয়ী দল চলে যাবে সেমিফাইনালে। তবে ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে লাভবান হবে অস্ট্রেলিয়া, আর আফগানিস্তানকে বিদায় নিতে হবে টুর্নামেন্ট থেকে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দলের লড়াই বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ৬ রানে জিতেছিল, যদিও নেট রানরেটে পিছিয়ে পড়ে তারা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়। পরের বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অবিশ্বাস্য ডাবল সেঞ্চুরিতে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। তবে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তান ২১ রানের জয় তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম জয় পায়। এবারও তাদের সামনে আরেকটি বড় সুযোগ।
অস্ট্রেলিয়ার জন্য ম্যাচটি বাঁচা-মরার লড়াই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ায় তাদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়নি। অন্যদিকে আফগানিস্তান ইংল্যান্ডকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিয়ে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে। এই ম্যাচে তাদের মূল শক্তি হবে স্পিন আক্রমণ। তবে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপেও স্পিন সামলানোর মতো দক্ষতা আছে, বিশেষ করে জশ ইংলিসের মতো ব্যাটার থাকায় তারা আত্মবিশ্বাসী।
তবে অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণ এবার তুলনামূলক দুর্বল, কারণ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তারা ১৯৮৩ সালের পর আইসিসির কোনো ওয়ানডে টুর্নামেন্টে সবচেয়ে অনভিজ্ঞ বোলিং লাইনআপ নিয়ে খেলেছে। আফগানিস্তানের পেস আক্রমণও শক্তিশালী না হলেও, ইনফর্ম ইব্রাহিম জাদরান তাদের ব্যাটিংয়ে বাড়তি আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছেন।
যদিও দুই দলেরই লক্ষ্য জয়, তবে বৃষ্টির কারণে ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে অস্ট্রেলিয়া। তাই আফগানিস্তান চাইবে ম্যাচ সম্পূর্ণ হোক এবং নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়াই করুক। ম্যাচের ফল যাই হোক না কেন, উত্তেজনার কমতি থাকবে না, সেটি বলাই যায়!
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন আফগ ন স ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।