‘সুখী সমৃদ্ধ আন্ডোরে রাজ্যের রাজা ছিলেন প্রিন্স ডেভিড। তিনি সবসময় প্রজাদের সুখ কামনা করতেন। প্রজারাও সুখী ছিলো। কিন্তু রাজার একজন শত্রু ছিলো। পাশের দেশ ইস্তানিয়ার রাজা প্রিন্স ট্রেন্ট। সে ডেভিডের সুখ-শান্তি দেখতে পারতো না। খুব হিংসে করতো। ট্রেন্ট একরাতে গোপনে হামলা চালিয়ে রাজা ডেভিডকে পরাজিত করে বন্দি করে। আন্ডোরে রাজ্য দখল করে নেয় এবং ডেভিডের সকল শুভাকাঙ্ক্ষীকে হত্যা করে। এভাবেই ট্রেন্ট সব দখল কর নেয়।
এদিকে বন্দি রাজা ডেভিড খুব হতাশ হয়ে পড়েন। কে বাঁচাবে তাঁকে ও তাঁর রাজ্যকে? কিন্তু ডেভিড জানতেন না যে, তাঁর প্রিয় সেনাপতি জোসেফ বেঁচে আছেন। ট্রেন্ট রাজ্য আক্রমণের আগে একটি কাজে জোসেফকে অন্য রাজ্যে পাঠিয়েছিলেন ডেভিড। এজন্যই তিনি বেঁচে যান।
জোসেফ তখন নিজ বুদ্ধিমত্তায় ও সাহসিকতায় রাজাকে উদ্ধারের উদ্যোগ নেন। তিনি তাঁর গায়ে বিশেষ এক ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করে বন্দিশালায় যান এবং সে ওষুধের গন্ধে প্রহরীদের অজ্ঞান করেন। এই কৌশল অবলম্বন করে বন্দি রাজাকে তিনি মুক্ত করেন এবং রাজার সঙ্গে পরামর্শ করে গোপনে গ্রামে গ্রামে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেন। তারপর একদিন বীরবিক্রমে ট্রেন্ট বাহিনীর ওপর হামলা চালালে শুরু হয় যুদ্ধ।’
তারপর? সে আমি বলতে পারবো না বাপু! বরং তোমরাই পড়ে নাও ‘আন্ডোরে রাজ্যের কাহিনি’ নামের বইটি। তোমাদের জন্য বইটি প্রকাশ করেছে শিশুপ্রকাশ। বইটির প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেছেন শিল্পী মনিরুজ্জামান পলাশ। আরে, লেখকের নামটাই তো বলা হয়নি! বইটি লিখেছেন তোমাদের মতোই এক ছোট্টমোট্ট লেখক রাইদাহ গালিবা। মন খারাপের কথা কি জানো, লেখক রাইদাহ এই বইটি দেখে যেতে পারেনি। বই প্রকাশের আগেই চলে গেছে আকাশের দেশে। তারা হয়ে জ্বলতে থাকা রাইদাহ নিশ্চয়ই দেখবে, তোমরা গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ছো তার বই! তা ১০০ টাকা দামের এই বইটি আশপাশের লাইব্রেরিতে খোঁজ করলেই পেয়ে যাবে। চাইলে অনলাইন থেকেও সংগ্রহ করতে পারবে। পড়ে জানিও আমাদের, কেমন লাগলো; ঠিক আছে?
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে’
৯ মাস আগে বিধবা লাকি রানী দের (৪০) গোয়ালঘরের তালা কেটে দুর্বৃত্তরা চারটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর কানাডাপ্রবাসী এক ব্যক্তি তাঁকে একটি গাভি কিনে দেন। পরে গাভিটি একটি বাছুরের জন্ম দেয়। বাছুরটির বয়স হয়েছিল প্রায় সাত মাস। গতকাল শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা আবারও তাঁর গোয়ালঘরের দরজার তালা লাগানোর শিকল কেটে বাছুরসহ গাভিটি চুরি করে নিয়ে গেছে।
লাকি রানীর বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে। তাঁর স্বামী প্রশান্ত দে প্রায় চার বছর আগে হঠাৎ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। লাকির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রিয়া রানী দে স্থানীয় তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। ছোট মেয়ে রুহি রানী দে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন লাকি। পাঁচটি গরু লালন-পালন করছিলেন। গরু বিক্রি করে সংসার আর দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাবেন ভেবেছিলেন। একটি গরু বিক্রিও করেন। এরই মধ্যে গত মার্চ মাসে বাকি চারটি গরু চুরি হয়ে যায়।
আজ শনিবার বিকেলে সরেজমিনে লাকির বাড়িতে গেলে তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে জেগে দেখেন, গোয়ালঘরের দরজায় তালা লাগানোর শিকল কাটা। ভেতরে গরু–বাছুর কোনোটাই নেই। জুড়ী থানার পুলিশের এক কর্মকর্তার মুঠোফোনের নম্বর ছিল তাঁর কাছে। ওই নম্বরে কথা বলে তাঁকে ঘটনাটি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাকি রানী বলেন, ‘গাইটা (গাভি) পাইয়া মনে কিছু শান্তি ফিরিয়া আইছিন। একটা বাছুরও পাইলাম। মনে করছিলাম, বাছুরটার বয়স ৯-১০ মাস হইলে বিক্রি করি দিমু। ৫০ হাজার টাকা লোন (ঋণ) করছিলাম বেশ আগে। ২০-২৫ হাজার টাকা পরিশোধের বাকি। বাছুর বিক্রি করে এই টাকাটা পরিশোধ করার চিন্তাভাবনা করছিলাম। চোর আমারে আবার পথে নামাই দিল। কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে?’
এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি লাকি। তিনি বলেন, ‘আগেরবার চুরির পরেও পুলিশরে জানাইয়া কোনো লাভ হইছে না। খামাখা করিয়া লাভ কিতা হইব? তবে কাইল (শুক্রবার) খবর জানানির পর তারা (পুলিশ) আইয়া খোঁজাখুঁজি করছে, চেষ্টা করছে।’
লাকি বলেন, ‘সংসারের নানা খরচ আছে। মেয়েরার লেখাপড়ায়ও খরচ লাগে। এইটা তো চালানি লাগব। এসএসসি পাসের পর আমার বিয়া হই গেছে। ৩-৪ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি পাইলে করতাম। কিন্তু এসএসসি পাসে তো চাকরি পাওয়াও কঠিন। কিতা করতাম, কিলা চলতাম—এইটাই খালি ভাবি। ঘরে বেকার বসি থাকলে সংসার চলব কেমনে?’
আরও পড়ুনশূন্য গোয়ালের সামনে কাঁদতে কাঁদতে লাকী রানী বললেন, ‘চোরে মরা মানুষরে মারিয়া গেল’০৩ মার্চ ২০২৫জুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ মিয়া বলেন, খবর পেয়ে তিনিসহ থানার আরেক এসআই মুজিবুর রহমান লাকি রানীর বাড়িতে যান। খোঁজাখুঁজি করেও চুরি হওয়া গরু ও বাছুরের সন্ধান মেলেনি। তবে তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।