রমজানে কোরআন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি শাসনতন্ত্রের
Published: 1st, March 2025 GMT
রমজান মাসে শিক্ষার সর্বস্তরে কোরআন শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর।
তিনি বলেছেন, “পবিত্র মাহে রমযান মাস কোরআন নাজিলের মাস। শিক্ষার সর্বস্তরে এ মাসে কোরআন শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করুন। কোরআনের শিক্ষা না থাকায় সমাজে বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, অস্থিরতা ও সহিংসতা তৈরি হচ্ছে। কোরআনের শিক্ষা থাকলে একটি শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।
শনিবার (১ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে মাহে রমজানের স্বাগত জানিয়ে আয়োজিত র্যালিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “রমজান আত্মশুদ্ধির মাস, আত্মগঠনের মাস, কোরআন নাজিলের মাস। এ মাসে মুমিনের জন্য রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সুসংবাদ রয়েছে। অথচ দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশে রমজান আসলেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বাজার সিন্ডিকেটের অরাজকতা ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ব্যয় প্রকট আকার ধারণ করে। এটি একটি চরম অনৈতিক ও অমানবিক প্রবণতা।”
তিনি আরো বলেন, “রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী চক্রকে আইনের আওতায় আনতে সরকারকে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা শুধু ব্যক্তিগত দায়িত্ব নয়, এটি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বও। যুবসমাজকে ইসলামী মূল্যবোধে গড়ে তোলা, সমাজে অপসংস্কৃতি ও মাদকমুক্ত পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করাও ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব “
কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, “রমজানের শিক্ষা নিয়ে আমাদের ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সত্য-ন্যায়ের পতাকা সমুন্নত রাখতে হবে। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ শিক্ষার্থীদের দ্বীন ও নৈতিকতার আলোকে প্রস্তুত করার পাশাপাশি সর্বদা ইসলামী মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
কেন্দ্রীয় সভাপতি আরো বলেন, “দেশে নতুন রাজনৈতিক শক্তি আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু তাদের নীতি-আদর্শ এখনো স্পষ্ট নয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশে ইসলামই সবচেয়ে বড় বাস্তবতা ও রাজনৈতিক অনুপ্রেরণা। জুলাই আন্দোলন ও আগস্টে ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানেও ইসলাম ছিল চেতনা ও লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু। সুতরাং, ইসলামবিরোধী কোনো এজেন্ডা এ দেশের জনসাধারণ কখনো গ্রহণ করবে না। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হলে ইসলামকে সম্মানের জায়গায় রাখতে হবে।”
তিনি বলেন, “রাখাল রাহাসহ কতিপয় ব্যক্তি আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে চরম কটূক্তি ও গালিগালাজ করলেও এখনো তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ স্পষ্ট ভাষায় বলতে চায়- আমরা আমাদের প্রিয় নবীকে (সা.
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ানের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুনতাছির আহমাদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসাইন নূর, খায়রুল আহসান মারজান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক হোসাইন ইবনে সরোয়ার, তথ্য-গবেষণা ও প্রযুক্তি সম্পাদক মুহাম্মাদ ফয়জুল ইসলাম, দাওয়াহ ও দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ ইবরাহীম খলীল, অর্থ ও কল্যাণ সম্পাদক এসএম কামরুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক মাইমুন ইসলাম।
আরো উপস্থিত ছিলেন, যোগাযোগ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক ইউসুফ পিয়াস, স্কুল ও কলেজ সম্পাদক মুহাম্মাদ আশিক আনোয়ার, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক রাগিব ওমর রাসেল, কওমি মাদরাসা সম্পাদক শেখ মাহদী ইমাম, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক আব্দুল আজিজ নোমান, কার্যনির্বাহী সদস্য মুহাম্মাদ তুহিন মালিক, ইবরাহীম নাসরুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত, ঢাকা মহানগর পূর্ব সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি আরিয়ান ইমন, ঢাকা মহানগর পশ্চিম সহ-সভাপতি সিফাতুল্লাহ, ঢাবি সাধারণ সম্পাদক সাইফ মুহাম্মাদ আলাউদ্দিন প্রমুখ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রআন ইসল ম রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।