কর্ণাটকে মুসলিমদের উন্নয়নে এক হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ
Published: 8th, March 2025 GMT
সংখ্যালঘু মুসলিমদের উন্নয়নে কল্পতরু ভারতের কর্ণাটক রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দাদারামাইয়া এবারের বাজেটে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উন্নয়ন খাতে ১ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ করেছেন। এর মধ্যে ১৫০ কোটি রুপি ওয়াকফ সম্পত্তি সংরক্ষণে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বাজেটে এমন ঘটনার পর সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলে রীতিমতো ফুঁসে উঠেছে বিরোধী দল বিজেপি। কংগ্রেস সরকারের বাজেটকে হালাল বাজেট বলেও কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
শুক্রবার (৭ মার্চ) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছে কংগ্রেস শাসিত ভারতের কর্ণাটক রাজ্য সরকার। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দাদারামাইয়া প্রায় ৪ লাখ ৯ হাজার ৫৪৯ কোটি রুপির বাজেট পেশ করেন। ওই বাজেটে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে করিডোর চায় মেঘালয়
হিন্দুদের রক্ষা করা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব: ভারত
সংখ্যালঘু উন্নয়নের জন্য ১ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে। বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ওয়াকফ সম্পত্তি এবং মুসলিম কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫০ কোটি রুপি। যে ওয়াকফ আইন বদলে ফেলতে উদ্যত হয়েছেন ভারতের নরেদ্র মোদি সরকার, সেই ওয়াকফ বোর্ডকেই বাড়তি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী।
এছাড়াও উর্দু স্কুলের জন্য ১০০ কোটি রুপি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় মুসলিমদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য মাল্টিপারপাস হল নির্মাণে ৫০ লাখ রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে। বিদেশে অধ্যয়নরত সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য রাষ্ট্রীয় সহায়তা ২০ লাখ রুপি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ লাখ রুপি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও রাজ্যের সব রেজিস্টার্ড ইমামদের জন্য মাসিক ৬ হাজার রুপি করে ভাতাও ঘোষণা করা হয়েছে কর্ণাটকের বাজেটে। মুয়াজ্জিনদের ভাতা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ হাজার রুপি।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাজেটে ক্যাটাগরি-২বি এর অধীনে সরকারি টেন্ডার এবং চুক্তিতে মুসলিমদের জন্য ৪ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে- যার লক্ষ্য অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি প্রচার করা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য ন্যায্য ব্যবসায়িক সুযোগ নিশ্চিত করা। বিধানসভা ভোটের আগে এই সংরক্ষণ বাতিল করেছিল তৎকালীন বিজেপি সরকার। সেটাই ফের চালু করলেন সিদ্দাদারামাইয়া।
সংখ্যালঘু মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় নতুন শিল্প প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (আইটিআই) স্থাপন করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে এই বাজেটে।
কর্ণাটক এক্সামিনেশন অথরিটির (কেইএ) অধীনে মুসলিম ছাত্রীদের জন্য ৫০ শতাংশ ফি ছাড়, উল্লাল শহরে মুসলিম ছাত্রীদের জন্য একটি আবাসিক প্রি-ইউনিভার্সিটি (পিইউ) কলেজ স্থাপন, বেঙ্গালুরুর হজ ভবনের সম্প্রসারণ, মুসলিম ছাত্রীদের জন্য আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ, মুসলিমদের বিবাহের জন্য ৫০ হাজার রুপি আর্থিক সহায়তাসহ একগুচ্ছ ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে বাজেটে।
যদিও কংগ্রেস সরকারের এই বাজেট ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম নিয়েছে। কর্ণাটকের বিরোধী দল বিজেপি এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করে এটিকে ‘হালাল বাজেট’ এবং ‘প্রকাশ্য তোষণ’ বলে অভিহিত করেছে।
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রদীপ ভান্ডারী এই বাজেটকে ‘আধুনিক মুসলিম লীগ বাজেট’ বলে কটাক্ষ করেছেন। পাশাপাশি কংগ্রেস-নেতৃত্বাধীন কর্ণাটক সরকারের নীতিগুলোকে পাকিস্তানে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর প্রশাসনের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
তবে বিজেপির এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে কর্ণাটকের ক্যাবিনেট মন্ত্রী জামির আহমেদ খান বলেন, “৪ লাখ ৯ হাজার কোটি রুপির বাজেট পেশ করা হয়েছে। রাজ্যে মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ হলো মুসলিম। কিন্তু সেখানে মাত্র ১ হাজার ৭০০ কোটি রুপি মুসলমানদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। জনসংখ্যা অনুযায়ী, ১৪ শতাংশের জন্য ৬০ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ করার কথা ছিল। তাহলে কী করে এটা সংখ্যালঘুদের বাজেট হয়? বিজেপির কিছু সাধারণ জ্ঞান থাকা উচিত।”
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র ন র জন য দ র জন য সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’
নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫