বলিউডের তারকা জুটি কারিনা কাপুর ও শহিদ কাপুর। তাদের রুপালি পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়িয়েছিল। দীর্ঘদিন চুটিয়ে প্রেম করার পরও ভেঙে যায় সেই সম্পর্ক।

প্রেমের ভাঙন কারিনা-শহিদের মনে তিক্ততা তৈরি করে। মুখ দেখাদেখিও বন্ধ ছিল তাদের। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন কারিনা কাপুর খান ও শহিদ কাপুর। ঝলমলে এই অনুষ্ঠানে কথা তো দূরের কথা, শহিদ কাপুরকে পাত্তাই দেননি কারিনা। এবার সেই শহিদ কাপুরকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন কারিনা।

গতকাল জয়পুরে অনুষ্ঠিত হয় আইফা অ্যাওয়ার্ডের সংবাদ সম্মেলন। সেই মঞ্চের একটি ভিডিও ক্লিপ এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। তাতে দেখা যায়, মঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়ানো করন জোহর, শহিদ কাপুরসহ অনেকে। মঞ্চে গিয়ে শহিদকে জড়িয়ে ধরেন কারিনা। এরপর খানিকটা সময় তারা কথাও বলেন।

আরো পড়ুন:

ছাবা ঝড়: ২৩ দিনে আয় ১ হাজার কোটির দুয়ারে

সবচেয়ে বেশি আয় করা নারীকেন্দ্রিক পাঁচ সিনেমা

এ দৃশ্য দেখে বিস্মিত নেটিজেনরা। একজন লেখেন, “ওহ মাই গড, শহিদ-কারিনা একসঙ্গে।” আরেকজন লেখেন, “কি রসায়ন।” জুনায়েদ নামে একজন লেখেন, “নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে অন্তর্জালে।

কারিনাকে জড়িয়ে ধরা ও তার সঙ্গে কথা বলার ব্যাপার নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে পড়েন শহিদ। এ অভিনেতা বলেন, “আমাদের জন্য এটি নতুন কিছু নয়। আমাদের আজ মঞ্চে দেখা হয়েছে। কিন্তু আমরা এখানে-সেখানে একে অপরের সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি করি। এটা আমাদের জন্য সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ব্যাপার। মানুষ যদি এটাকে ভালোভাবে নেয় তাহলে এটা ভালো।”

বলিউডের অন্যতম আলোচিত জুটি শহিদ ও কারিনা কাপুর। তাদের প্রেম কাহিনিও ঠিক তেমন। ২০০৩ সালে ‘ইশক ভিশক’ সিনেমার মাধ্যমে নায়ক হিসেবে শহিদের বলিউডে অভিষেক হয়। তাকে দেখে প্রেমে পড়েন কারিনা। ‘কফি উইথ করন’ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় সিজনে হাজির হয়ে এ অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, শহিদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাকে কল করতেন, মেসেজ পাঠাতেন। এমনকি, এই অভিনেতাকে বিয়েও করতে চান বলে জানান।

বাস্তবে তাদের প্রেমের গল্প মধুর হলেও শুরুতে রিল লাইফে তাদের রসায়ন দর্শকের খুব একটা মনে ধরেনি। তাদের প্রেমের গুঞ্জন যখন বলিপাড়ায় উড়ছে তখন, ‘ফিদা’ (২০০৪) সিনেমায় প্রথম জুটিবদ্ধ হন তারা। কিন্তু বক্স অফিসে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। ২০০৬ সালে ‘থার্টি সিক্স চায়না টাউন’ ও ‘চুপ চুপ কে’ সিনেমায় একসঙ্গে পর্দায় হাজির হলেও বক্স অফিস মাতাতে পারেননি তারা। তবে এই জুটিকে দর্শকের মন মতো পর্দায় তুলে ধরতে পেরেছিলেন নির্মাতা ইমতিয়াজ আলী। ‘জব উই মেট’ সিনেমায় তাদের রসায়ন আজও ভক্তদের মনে গেঁথে রয়েছে। কিন্তু পর্দায় রসায়ন জমে উঠলেও ততদিনে ম্লান হয়ে যায় তাদের বাস্তব জীবনের প্রেম। এই সিনেমার সেটেই তাদের ব্রেকআপ হয়। এমনকি সিনেমার ‘তুমসে হি’ গানের শুটিংও আলাদাভাবে করেন শহিদ-কারিনা।

তবে কী কারণে তাদের সম্পর্কে ভাঙন ধরেছিল তা আজও অজানা। গুঞ্জন শোনা যায়, শহিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি কারিনার মা ববিতা কাপুর। তা ছাড়া সিনেমায় নায়কের চরিত্রে শহিদকে নেওয়ার সুপারিশ করতেন কারিনা। তার মা সেটিও পছন্দ করতেন না। এছাড়া ব্যক্তিত্বের দিক থেকে শহিদ ও কারিনা ছিলেন সম্পূর্ণ আলাদা। শহিদ চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে কারিনা হাসিখুশি থাকেন ও একটু বেশি কথা বলতে পছন্দ করেন। প্রেমে পড়ার পর তাদের এই ব্যাপারগুলো সম্মুখে আসে। তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো, বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল এবং এ সকল কারণে তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে।

২০০৭ সালে ‘কিসমত কানেকশন’ সিনেমার শুটিং করতে বিদ্যা বালানের সঙ্গে কানাডা যান শহিদ। অন্যদিকে ভারতের লাদাখে সাইফ আলী খানের সঙ্গে ‘তাশান’ সিনেমার শুটিং করছিলেন কারিনা। সেই সময় বিদ্যার সঙ্গে শহিদ কাপুরের প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়, যা শুনে কষ্টে পেয়েছিলেন কারিনা। সেই সময় এই অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়ান সাইফ আলী খান। পরবর্তীতে তাদের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হতে থাকে। এরপর প্রেম। এদিকে ‘কামিনে’ সিনেমা করতে গিয়ে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান শহিদ। তবে এই অভিনেতার সেই সম্পর্কও বেশিদিন টেকেনি।

২০১৬ সালে অভিষেক চৌবের ‘উড়তা পাঞ্জাব’ আবারো এক মঞ্চে হাজির করে শহিদ-কারিনাকে। সিনেমাটিতে তাদের একসঙ্গে কোনো দৃশ্য ছিল না। কিন্তু ট্রেইলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে একসঙ্গে হাজির হয়েছিলেন তারা।

ব্যক্তিগত জীবনে বর্তমানে শহিদ ও কারিনা দুজনই নিজ নিজ পরিবার নিয়ে সুখী। ২০১২ সালে সাইফকে বিয়ে করেন কারিনা। এই দম্পতির দুটো পুত্রসন্তান রয়েছে। অন্যদিকে অনেক জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০১৫ সালের ৭ জুলাই মিরা রাজপুতকে বিয়ে করেন শহিদ কাপুর। ২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট এ দম্পতির মেয়ে মিশা এবং ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাদের পুত্র জেইন কাপুরের জন্ম হয়।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন একসঙ গ

এছাড়াও পড়ুন:

যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়

একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েই বিয়ে করেন দুজন ব্যক্তি; কিন্তু একসঙ্গে থাকতে শুরু করার পর সবচেয়ে আপন এই মানুষের সঙ্গেও নানা কারণে তৈরি হয় মতবিরোধ। এক কথা, দুই কথায় বাধে ঝগড়া। বয়োজ্যেষ্ঠদের মতে, স্বামী–স্ত্রীর ঝগড়া আসলে এক জায়গায় রাখা দুটি বাসনের ঠোকাঠুকির মতো। এগুলো জীবনেরই অংশ; কিন্তু এই ঠোকাঠুকি বাড়তে দিলেই বিপত্তি। তাই দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া কমিয়ে আনতে চাইলে প্রথমে মতবিরোধের কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে। বিশ্বজুড়ে কী কারণে দাম্পত্যে ঝগড়া হয় বেশি, চলুন আগে সেটিই জেনে নেওয়া যাক।

১. বোঝাপড়ার অভাব

নাবিলা ও রাফি (ছদ্মনাম) দুজনেই চাকরিজীবী। কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে ক্লান্ত নাবিলা আশা করেন, স্বামী তাঁর কাছে জানতে চাইবেন সারা দিন কেমন কাটল। কিন্তু তা না করে চুপচাপ নিজের মনে ফোন স্ক্রল করেন রাফি।

স্বামীর এমন আচরণে কষ্ট পান নাবিলা। অন্যদিকে রাফি ভাবেন, সারা দিন কাজের পর স্ত্রীর হয়তো কথা বলতে ইচ্ছা করছে না, ও একটু নিজের মতো থাকুক। দুজনের চাওয়া ভিন্ন। এভাবে নিজের প্রত্যাশার কথা না জানিয়ে দিনের পর দিন কাটাতে থাকলে মনের ভেতর ক্ষোভ জমা হতে থাকে।

আবার বাসার বাড়তি বিল নিয়ে রাফি যখন চিন্তিত, সেটিকে পাত্তা না দিয়ে হেসে উড়িয়ে দিলেন নাবিলা। এভাবে অপর পক্ষকে কষ্ট দিতে না চেয়েও কষ্ট দিচ্ছেন তাঁরা। দাম্পত্য কলহ নিয়ে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে গবেষণা করা মার্কিন মনোবিজ্ঞানী জন গটম্যান জানান, ৬৯ শতাংশ বৈবাহিক দ্বন্দ্বের কারণ পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব।

আরও পড়ুনধনীদের ৮টি অভ্যাস, যা মধ্যবিত্তদের চোখে ধরা পড়ে না১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫২. অর্থনৈতিক হিসাব

একজন বাইরে খেতে ভালোবাসেন, অন্যজন সঞ্চয়ে বিশ্বাসী। আর এতেই বাধে বিপত্তি। এ ছাড়া দুজনেই আয় করলে কে কোন খাতে ব্যয় করবেন, তা নিয়েও ঝগড়া করেন দম্পতিরা। দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্য বিচ্ছেদ নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম।

অভিজ্ঞতার আলোকে এই আইনজীবী বলেন, ‘কেউ নিজের শখ পূরণ করতে গিয়ে অন্যের দিকটা ভাবছেন না, কেউ আবার নিজের ইচ্ছা–অনিচ্ছায় ক্রমাগত ছাড় দিয়েই যাচ্ছেন। সংসারে বারবার একপক্ষীয় অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে যিনি ছাড় দিচ্ছেন, তাঁর মনে অসন্তুষ্টি তৈরি হয়, যা একসময় বড় ঝগড়ায় রূপ নেয়।’

এ ছাড়া ছোটখাটো অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়েও ঝগড়া করেন দম্পতিরা। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা বলছে, টাকাপয়সা নিয়ে ঝগড়া করা দম্পতিদের ৩০ শতাংশই সম্পর্কে খুশি থাকেন না।

৩. সময় না দেওয়াসঙ্গীকে সময় না দিলে দ্বন্দ্ব বাড়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট
  • ঝগড়া থেকে দেয়ালে মাথা ঠোকা, সালমান-ঐশ্বরিয়ার সম্পর্কের বিষয়ে প্রকাশ্যে আনলেন প্রতিবেশী
  • কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরদের কাজ কি শুধু ভাইভা নেওয়া
  • কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস 
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • স্মার্ট সিটি হবে চট্টগ্রাম, একসঙ্গে কাজ করবে গ্রামীণফোন-চসিক
  • অনলাইন জীবন আমাদের আসল সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-গ্রামবাসীতে বিদ্বেষ কেন
  • প্রেমিকের সঙ্গে বাগদান সারলেন হুমা কুরেশি!
  • চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড: ট্রাম্প কি দাঙ্গা–ফ্যাসাদকেই নীতি হিসেবে নিয়েছেন