সীমান্তে ১০ বছরে বিএসএফের হাতে ৩০৫ বাংলাদেশি নিহত
Published: 10th, March 2025 GMT
সীমান্তে ১০ বছরে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে কমপক্ষে ৩০৫ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৮২ জন।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরে বলেছে, এ চিত্র সীমান্তের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি নাজুক পরিস্থিতি নির্দেশ করে। ভারতের বারবার প্রতিশ্রুতি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এমন ঘটনা বছরের পর বছর ধরে ঘটে চলছে।
এইচআরএসএস আজ সোমবার গণমাধ্যমে ওই বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং এইচআরএসএসের সংগৃহীত তথ্য মিলিয়ে ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে সীমান্তে হতাহতের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এইচআরএসএস জানিয়েছে, সীমান্তে ২০২৪ সালে ৫৭টি ঘটনায় বিএসএফের হাতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ১৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করে বিএসএফ। একই সময়ে সীমান্তে ৯ জন বাংলাদেশির লাশ পাওয়া যায়, যাঁরা ভারতের নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় নিহত হন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত সীমান্তে ১৫টি ঘটনায় বিএসএফের হাতে ৪ বাংলাদেশি নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৫ জনকে। এ সময়ে সীমান্তে ভারতের নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় ৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
এইচআরএসএস সীমান্তে সব হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে। মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, সীমান্ত হত্যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অন্যতম স্পর্শকাতর বিষয়। দুই দেশের সীমান্তে প্রায়ই বাংলাদেশি হত্যার ঘটনা ঘটে। উভয় সরকারই সীমান্তে বেসামরিক জীবন রক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছে। বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হলেও এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে।
কোন বছরে কতজন নিহত হয়েছেন
এইচআরএসএসের তথ্য অনুযায়ী, সীমান্তে গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটে ২০২০ সালে। ওই বছর ৫১ বাংলাদেশি নিহত হন। আহত হন ২৫ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিহত হন ২০১৫ সালে। ওই বছর ৪৩ জন বাংলাদেশি নিহত হন। আহত হন ৫৪ জন। ২০১৯ সালে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪২ বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। একই বছর আহত হন ২৫ বাংলাদেশি।
এ ছাড়া ২০২৪ সালে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ২৫ জন আহত হন। ২০২৩ সালে নিহত হন ৩০ জন ও আহত হন ৩১ জন; ২০২২ সালে নিহত ২৩ জন ও আহত ৩১ জন; ২০২১ সালে নিহত ১৭ জন ও আহত ১৪ জন; ২০১৮ সালে নিহত হন ১৫ জন ও আহত হন ১২ জন; ২০১৭ সালে নিহত হন ৩০ জন ও আহত হন ৩৭ জন এবং ২০১৬ সালে ২৮ বাংলাদেশি নিহত হন, আহত হন ২৮ জন।
এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে। তিনি সীমান্ত এলাকায় সব সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতিগুলোকে মেনে চলার আহ্বান জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন ও আহত ব এসএফ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
আইএসআইয়ের সাবেক প্রধান ফয়েজ হামিদের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার–সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি সামরিক আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
ফয়েজ হামিদ ২০২৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইএসআইয়ের প্রধান ছিলেন। ওই সময় পাকিস্তানের সরকারপ্রধান ছিলেন ইমরান খান। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান এখন কারাগারে আছেন।
ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন ফয়েজ হামিদ। ইমরান খান তাঁকে আইএসআইয়ের প্রধান করেছিলেন। ২০২২ সালে পার্লামেন্টের অনাস্থা ভোটে হেরে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হলে নির্ধারিত সময়ের আগে অবসরে যান গোয়েন্দাপ্রধান ফয়েজ হামিদ।
পাকিস্তানের সামরিক প্রেক্ষাপটে সেনাপ্রধানের পর আইএসআইয়ের প্রধানকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়। দেশটিতে এর আগে আইএসআইয়ের কোনো প্রধানকে কখনোই সামরিক আদালতে বিচার করা হয়নি।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট এ বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে পাকিস্তানের সামরিক আইনের আওতায় বিচার কার্যক্রম চলেছে।
ফয়েজ হামিদের আইনজীবী মিয়া আলি আশফাক বলেন, বর্তমানে সেনা হেফাজতে থাকা তাঁর মক্কেল ‘এক হাজার শতাংশ’ নির্দোষ। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তিনি।
আরও পড়ুনপাকিস্তানে প্রথমবারের মতো বিচারের মুখে সাবেক আইএসআই প্রধান১২ আগস্ট ২০২৪