ডিজিটাল দর্শনার্থী কার্ড চালু হচ্ছে শেবাচিমে
Published: 11th, March 2025 GMT
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) চালু হতে যাচ্ছে দর্শনার্থী কার্ড। সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে আগামী সপ্তাহে হাসপাতালের মেডিসিন ভবনে প্রাথমিকভাবে এই কার্ডটি চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা পুরো হাসপাতালে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চিকিৎসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং অতিরিক্ত দর্শনার্থী ঠেকাতে এই কার্ড চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা.
১৯৬৮ সালে মাত্র ৩৬০ শয্যার অবকাঠামো নিয়ে নির্মিত হয় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বর্তমানে এই হাসপাতালে প্রতি একজন রোগীর সঙ্গে ৪-৫ জন দর্শনার্থী অথবা স্বজন অবস্থান করেন। দিনদিন রোগী ও রোগীর স্বজনদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় হাসপাতালের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। ফলে মানুষের অতিরিক্ত চাপে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ কারণে হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসার পরিবেশ নিশ্চিত করতে দর্শনার্থী কার্ড চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
‘মাদক সেবন’ দেখে ফেলায় উপড়ে ফেলা হলো ২ চোখ
ডেলিভারি সময় নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন, তদন্ত কমিটি গঠন
শেবাচিম-এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর
হাসপাতালের মেডিসিন ভবনের দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল বলেন, “মশিউল মুনীর স্যার সম্প্রতি মেডিসিন ভবনে চিকিৎসক, সেবিকা ও রোগীদের জন্য একাধিক পৃথক টয়লেট ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে নতুন জানালার ব্যবস্থা করেছেন। এই ভবনে আরো সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই দর্শনার্থী কার্ড বা গেট পাশের ব্যবস্থা চালু করছেন পরিচালক স্যার। ইতোমধ্যে দর্শনার্থী কার্ড সম্পর্কে নিয়ম ও শর্তাবলি ব্যানার আকারে হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
দর্শনার্থী কার্ড ব্যবস্থার নিয়মে বলা হয়েছে- দর্শনার্থী কার্ড ব্যতীত হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। ১০০ টাকা দিয়ে কার্ড সংগ্রহ করতে হবে, কার্ড জমা দিয়ে ১০০ টাকা ফেরত নেওয়া যাবে। একজন রোগীর জন্য সর্বোচ্চ দুইটি কার্ড সংগ্রহ করা যাবে। কার্ডের মেয়াদ ৭দিন। মেয়াদ উত্তীর্ণ কার্ড ব্যবহার করলে ১০০টাকা জরিমানা আদায় করা হবে।
হাসপাতালের সরকারি পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোঃ মাহমুদ হাসান বলেন, “দর্শনার্থী কার্ড ব্যবস্থা চালু হলে এই হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার দর্শনার্থীর চাপ কমে যাবে। আগামী সপ্তাহেই প্রাথমিকভাবে মেডিসিন ভবনে দর্শনার্থী কার্ড ব্যবস্থা চালু হবে। পর্যায়ক্রমে হাসপাতালে পুরো অন্তঃবিভাগে এই নিয়ম চলবে।”
তিনি আরো বলেন, “হাসপতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর স্যারের নির্দেশে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে দর্শনার্থী কার্ড বিতরণ করা হবে। কম্পিউটারে কবে থেকে রোগীর লোকজন কার্ড ব্যবহার করছেন সেসব তথ্য লিপিবদ্ধ করা থাকবে।”
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, “অতিরিক্ত দর্শনার্থীর কারণে হাসপাতালে চিকিৎসার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হয়। সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালে যেন অতিরিক্ত দর্শনার্থী প্রবেশ না করতে পারে, সেজন্য দর্শনার্থী কার্ড ব্যবস্থা চালু করা হবে। ভিজিটিং আওয়ারে (বিকেল ৩টা থেকে ৫টা) দর্শনার্থীরা কার্ড ছাড়া হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবেন না। হাসপাতালের পরিবেশ উন্নয়নে সবার সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।”
ঢাকা/পলাশ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ড ব যবস থ ম ড স ন ভবন পর ব শ ন র পর ব শ ত ল র পর
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।