বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) চালু হতে যাচ্ছে দর্শনার্থী কার্ড। সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে আগামী সপ্তাহে হাসপাতালের মেডিসিন ভবনে প্রাথমিকভাবে এই কার্ডটি চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা পুরো হাসপাতালে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

চিকিৎসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং অতিরিক্ত দর্শনার্থী ঠেকাতে এই কার্ড চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা.

এ কে এম মশিউল মুনীর। 

১৯৬৮ সালে মাত্র ৩৬০ শয্যার অবকাঠামো নিয়ে নির্মিত হয় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বর্তমানে এই হাসপাতালে প্রতি একজন রোগীর সঙ্গে ৪-৫ জন দর্শনার্থী অথবা স্বজন অবস্থান করেন। দিনদিন রোগী ও রোগীর স্বজনদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় হাসপাতালের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। ফলে মানুষের অতিরিক্ত চাপে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ কারণে হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসার পরিবেশ নিশ্চিত করতে দর্শনার্থী কার্ড চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

‘মাদক সেবন’ দেখে ফেলায় উপড়ে ফেলা হলো ২ চোখ

ডেলিভারি সময় নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন, তদন্ত কমিটি গঠন  

শেবাচিম-এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর 

হাসপাতালের মেডিসিন ভবনের দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল বলেন, “মশিউল মুনীর স্যার সম্প্রতি মেডিসিন ভবনে চিকিৎসক, সেবিকা ও রোগীদের জন্য একাধিক পৃথক টয়লেট ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে নতুন জানালার ব্যবস্থা করেছেন। এই ভবনে আরো সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই দর্শনার্থী কার্ড বা গেট পাশের ব্যবস্থা চালু করছেন পরিচালক স্যার। ইতোমধ্যে দর্শনার্থী কার্ড সম্পর্কে নিয়ম ও শর্তাবলি ব্যানার আকারে হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

দর্শনার্থী কার্ড ব্যবস্থার নিয়মে বলা হয়েছে- দর্শনার্থী কার্ড ব্যতীত হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। ১০০ টাকা দিয়ে কার্ড সংগ্রহ করতে হবে, কার্ড জমা দিয়ে ১০০ টাকা ফেরত নেওয়া যাবে। একজন রোগীর জন্য সর্বোচ্চ দুইটি কার্ড সংগ্রহ করা যাবে। কার্ডের মেয়াদ ৭দিন। মেয়াদ উত্তীর্ণ কার্ড ব্যবহার করলে ১০০টাকা জরিমানা আদায় করা হবে।

হাসপাতালের সরকারি পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোঃ মাহমুদ হাসান বলেন, “দর্শনার্থী কার্ড ব্যবস্থা চালু হলে এই হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার দর্শনার্থীর চাপ কমে যাবে। আগামী সপ্তাহেই প্রাথমিকভাবে মেডিসিন ভবনে দর্শনার্থী কার্ড ব্যবস্থা চালু হবে। পর্যায়ক্রমে হাসপাতালে পুরো অন্তঃবিভাগে এই নিয়ম চলবে।” 

তিনি আরো বলেন, “হাসপতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর স্যারের নির্দেশে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে দর্শনার্থী কার্ড বিতরণ করা হবে। কম্পিউটারে কবে থেকে রোগীর লোকজন কার্ড ব্যবহার করছেন সেসব তথ্য লিপিবদ্ধ করা থাকবে।”

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, “অতিরিক্ত দর্শনার্থীর কারণে হাসপাতালে চিকিৎসার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হয়। সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালে যেন অতিরিক্ত দর্শনার্থী প্রবেশ না করতে পারে, সেজন্য দর্শনার্থী কার্ড ব্যবস্থা চালু করা হবে। ভিজিটিং আওয়ারে (বিকেল ৩টা থেকে ৫টা) দর্শনার্থীরা কার্ড ছাড়া হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবেন না। হাসপাতালের পরিবেশ উন্নয়নে সবার সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।”

ঢাকা/পলাশ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ড ব যবস থ ম ড স ন ভবন পর ব শ ন র পর ব শ ত ল র পর

এছাড়াও পড়ুন:

ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী

খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী দাবি করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব ছবি ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বানানো। তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে একটি মহল এগুলো ছড়াচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী এ দাবি করেন।

সম্প্রতি কৃষ্ণ নন্দীর কয়েকটি ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসুর সঙ্গে কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সঙ্গে তাঁর কয়েকটি ছবি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে আজ তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ভারতে অবস্থানরত বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসু মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছে। সে একজন আন্তর্জাতিক চাঁদাবাজ। সে আমার মোবাইল নম্বর ম্যানেজ করে বিভিন্ন কৌশলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং জীবননাশের হুমকি দিয়ে বলে, “আমি হিন্দু হয়ে কেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করে হিন্দুধর্মকে বিতর্কিত করছি।”’

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই প্রার্থী বলেন, ‘আমাকে প্রার্থী করায় হিন্দুদের মনে শান্তি ফিরে এসেছে। হিন্দুরা মনে করছে, জামায়াত ইসলামী একটা অসাম্প্রদায়িক দল। জামায়াত ক্ষমতায় এলে হিন্দু-মুসলমান সবাই ভালো থাকবে। আমাকে যদি মানুষ সংসদে পাঠায়, তখন হিন্দুদের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করব।’

শিপন কুমার বসু ও বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘তাঁর বাসায় গিয়ে খেয়েছি। তবে এরপর যে সে ব্ল্যাকমেল করবে, সেটা বুঝিনি। বিদেশি কোনো গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে আমার আদৌ কোনো সংযোগ নেই। কোনো কথা হয় না।’

লিখিত বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী শ্রেণির যোগসাজশে আমার ব্যক্তিগত ইমেজ ও জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করার জন্য মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচারসহ বেশ কিছু ছবি এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করে অপপ্রচার করছে। আমি এসব অপপ্রচারের জোর প্রতিবাদ জানাই। সাথে এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ করছি।’

কৃষ্ণ নন্দী আরও বলেন, ‘আমাকে খুলনা-১ আসনে জামায়াত মনোনীত দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে আরও স্পষ্টভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে প্রমাণিত হয়, জামায়াতে ইসলামী একটি অসাম্প্রদায়িক দল। দলটির কাছে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, উপজাতি কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। আমাকে প্রার্থী করায় সারা বাংলাদেশের হিন্দুদের দাঁড়িপাল্লার পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াত আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার পরই একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে, যা প্রমাণ করে, এটা গভীর ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।’

মনোনয়ন পরিবর্তন নিয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার আগে খুলনা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ছিলেন বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ। তাঁকে পরিবর্তন করে আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পরপরই মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আবু ইউসুফ আমাকে সমর্থন করেন এবং আমরা একসঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছি। আমাদের ভেতর কোনো ভুল–বোঝাবুঝি নেই। আমি তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা রাখি।’

সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ চন্দের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ব্যবসার কারণে মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমি একজন ব্যবসায়ী, তিনি একজন মন্ত্রী। জামায়াতে ইসলামী করি বলে আমাকে কোণঠাসা করে রেখেছিল।’

সংবাদ সম্মেলনে বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ বলেন, জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রে অমুসলিম সম্প্রদায়েরও জামায়াতের রাজনীতি করার সুযোগ আছে। ফলে তাঁদের নির্বাচন করারও সুযোগ আছে। দেশের অনেক জায়গাতেই জামায়াতের অমুসলিম কমিটি আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় হামাসের সিনিয়র কমান্ডার নিহত
  • যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রতিনিধি
  • ক্যানসার, ৩৬ অস্ত্রোপচার—গানে ফেরার গল্প শোনাবেন ‘বেজবাবা’
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ১১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ কারবারি গ্রেপ্তার
  • পাবনায় বিষাক্ত মদপানে ২ যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
  • রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় একজন গ্রেপ্তার
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণাহীনতা: উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা
  • বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক
  • কালো পতাকার মানুষ
  • ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী