ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী
Published: 11th, December 2025 GMT
খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী দাবি করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব ছবি ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বানানো। তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে একটি মহল এগুলো ছড়াচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী এ দাবি করেন।
সম্প্রতি কৃষ্ণ নন্দীর কয়েকটি ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসুর সঙ্গে কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সঙ্গে তাঁর কয়েকটি ছবি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে আজ তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ভারতে অবস্থানরত বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসু মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছে। সে একজন আন্তর্জাতিক চাঁদাবাজ। সে আমার মোবাইল নম্বর ম্যানেজ করে বিভিন্ন কৌশলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং জীবননাশের হুমকি দিয়ে বলে, “আমি হিন্দু হয়ে কেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করে হিন্দুধর্মকে বিতর্কিত করছি।”’
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই প্রার্থী বলেন, ‘আমাকে প্রার্থী করায় হিন্দুদের মনে শান্তি ফিরে এসেছে। হিন্দুরা মনে করছে, জামায়াত ইসলামী একটা অসাম্প্রদায়িক দল। জামায়াত ক্ষমতায় এলে হিন্দু-মুসলমান সবাই ভালো থাকবে। আমাকে যদি মানুষ সংসদে পাঠায়, তখন হিন্দুদের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করব।’
শিপন কুমার বসু ও বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘তাঁর বাসায় গিয়ে খেয়েছি। তবে এরপর যে সে ব্ল্যাকমেল করবে, সেটা বুঝিনি। বিদেশি কোনো গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে আমার আদৌ কোনো সংযোগ নেই। কোনো কথা হয় না।’
লিখিত বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী শ্রেণির যোগসাজশে আমার ব্যক্তিগত ইমেজ ও জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করার জন্য মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচারসহ বেশ কিছু ছবি এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করে অপপ্রচার করছে। আমি এসব অপপ্রচারের জোর প্রতিবাদ জানাই। সাথে এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ করছি।’
কৃষ্ণ নন্দী আরও বলেন, ‘আমাকে খুলনা-১ আসনে জামায়াত মনোনীত দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে আরও স্পষ্টভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে প্রমাণিত হয়, জামায়াতে ইসলামী একটি অসাম্প্রদায়িক দল। দলটির কাছে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, উপজাতি কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। আমাকে প্রার্থী করায় সারা বাংলাদেশের হিন্দুদের দাঁড়িপাল্লার পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াত আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার পরই একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে, যা প্রমাণ করে, এটা গভীর ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।’
মনোনয়ন পরিবর্তন নিয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার আগে খুলনা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ছিলেন বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ। তাঁকে পরিবর্তন করে আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পরপরই মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আবু ইউসুফ আমাকে সমর্থন করেন এবং আমরা একসঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছি। আমাদের ভেতর কোনো ভুল–বোঝাবুঝি নেই। আমি তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা রাখি।’
সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ চন্দের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ব্যবসার কারণে মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমি একজন ব্যবসায়ী, তিনি একজন মন্ত্রী। জামায়াতে ইসলামী করি বলে আমাকে কোণঠাসা করে রেখেছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ বলেন, জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রে অমুসলিম সম্প্রদায়েরও জামায়াতের রাজনীতি করার সুযোগ আছে। ফলে তাঁদের নির্বাচন করারও সুযোগ আছে। দেশের অনেক জায়গাতেই জামায়াতের অমুসলিম কমিটি আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ষ ণ নন দ মন ত র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
চার নায়িকার ‘ট্রাইব্যুনাল’, দেখা যাবে ঈদে
তরুণ নির্মাতা রায়হান খান নির্মাণ করছেন নতুন সিনেমা ‘ট্রাইব্যুনাল’। এরই মধ্যে সিনেমাটির প্রায় ৬৫ শতাংশ শুটিং শেষ হয়েছে। বাকি অংশের কাজ ও পোস্ট প্রোডাকশন শেষ করে আগামী ঈদুল ফিতরে সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নির্মাতারা।
পরিচালক রায়হান খান জানান, ২০১১ সালে চট্টগ্রামে কেরোসিন ঢেলে এক নারীকে পুড়িয়ে হত্যার যে নৃশংস ঘটনা সারাদেশে আলোড়ন তুলেছিল—সেই বাস্তব ঘটনার অনুপ্রেরণায় তৈরি হয়েছে ‘ট্রাইব্যুনাল’। গল্পে ন্যায়বিচার, নৈতিকতা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং আদালতকেন্দ্রিক টানাপড়েনকে কেন্দ্র করেই নির্মিত হচ্ছে সিনেমাটি।
আরো পড়ুন:
‘খুকুমণির’ বিয়ে
রণবীরকে কেন ‘নির্লজ্জ’ বললেন পীযূষ?
রায়হান খান বলেন, “একেবারেই ভিন্ন আঙ্গিকে বানানো হচ্ছে ‘ট্রাইব্যুনাল’। শিগগিরই বাকি শুটিং শেষ করব। সব ঠিক থাকলে ঈদে মুক্তি দেব। তবে পোস্ট-প্রোডাকশন শেষে যদি মনে হয় আরো সময় দরকার, তাহলে সময় নেব।”
আগে কেবল নুসরাত ফারিয়ার নাম প্রকাশ করা হলেও, এবার জানানো হলো পূর্ণাঙ্গ শিল্পীর তালিকা। নির্মাতা জানান, সিনেমাটিতে ব্যারিস্টারের ভূমিকায় দেখা যাবে নুসরাত ফারিয়াকে। লন্ডন থেকে গ্র্যাজুয়েট, বুদ্ধিমতী ও স্টাইলিশ একজন আইনজীবী তিনি। আসামিপক্ষের হয়ে মামলাটি লড়বেন ফারিয়া।
এছাড়াও নানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করছেন—তারিক আনাম খান, সাবেরী আলম, মৌসুমী হামিদ, তানিয়া বৃষ্টি, সায়রা আক্তার জাহান, আদর আজাদ, শাহেদ আলী, মিলন ভট্টাচার্য, অশোক ব্যাপারী, রাকিব হোসেন ইভন, উপমাসহ অনেকে।
নিজের চরিত্র নিয়ে মৌসুমী হামিদ বলেন, “গল্প শুনেই রাজি হয়েছি। এরকম গল্প আগে পাইনি। এটি মূলত মার্ডার–কোর্টরুম ড্রামা। এখানে ২৬ জন সাক্ষী আর একজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিল; সেই প্রতক্ষদর্শীর ভূমিকায় আমি অভিনয় করেছি।”
এ সিনেমার মাধ্যমে ১০ বছর পর রুপালি পর্দায় ফিরছেন তানিয়া বৃষ্টি। এ অভিনেত্রী বলেন, “প্রায় ১০ বছর পর সিনেমায় ফিরছি। গল্প আর নির্মাতা—এই দুই কারণেই কাজটি করতে রাজি হয়েছি। আমার চরিত্রটি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি, অসাধারণ একটি চলচ্চিত্র হতে যাচ্ছে।”
রায়হান খান একজন সিনেমাটোগ্রাফার, চিত্রনাট্যকার ও নির্মাতা। তার চিত্রনাট্যেই ২০২১ সালে মুক্তি পায় ‘মৃধা বনাম মৃধা’। পরে হইচই–এ মুক্তিপ্রাপ্ত তার নির্মিত সিরিজ ‘দৌড়’ ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত