জেদ্দাফেরত যাত্রীর কাছে মিলল অর্ধকোটি টাকার সোনার চুড়ি
Published: 12th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদি আরবের জেদ্দাফেরত এক যাত্রীর কাছ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ১২টি সোনার চুড়ি জব্দ করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) তল্লাশি করে এসব চুড়ি জব্দ করেছে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বুধবার সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজে সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে ওই যাত্রী চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরের গ্রিন চ্যানেল অতিক্রম করার সময় এনএসআই কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। এ সময় তাঁরা শাহিন আল মামুন নামের ওই যাত্রীর পায়জামার পকেট তল্লাশি করে ৪০০ গ্রাম সোনার চুড়ি উদ্ধার করেন।
মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল আরও বলেন, এসব সোনার চুড়ি বিমানবন্দর কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক যাত্রী শফিক আল মামুনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙামাটিতে।
ব্যাগেজ নীতিমালা অনুযায়ী, একজন যাত্রী সর্বোচ্চ বিনা শুল্কে ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার আনতে পারেন। তবে শুল্ককর দিয়ে ১১৭ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের বার আনা যায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে’
৯ মাস আগে বিধবা লাকি রানী দের (৪০) গোয়ালঘরের তালা কেটে দুর্বৃত্তরা চারটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর কানাডাপ্রবাসী এক ব্যক্তি তাঁকে একটি গাভি কিনে দেন। পরে গাভিটি একটি বাছুরের জন্ম দেয়। বাছুরটির বয়স হয়েছিল প্রায় সাত মাস। গতকাল শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা আবারও তাঁর গোয়ালঘরের দরজার তালা লাগানোর শিকল কেটে বাছুরসহ গাভিটি চুরি করে নিয়ে গেছে।
লাকি রানীর বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে। তাঁর স্বামী প্রশান্ত দে প্রায় চার বছর আগে হঠাৎ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। লাকির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রিয়া রানী দে স্থানীয় তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। ছোট মেয়ে রুহি রানী দে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন লাকি। পাঁচটি গরু লালন-পালন করছিলেন। গরু বিক্রি করে সংসার আর দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাবেন ভেবেছিলেন। একটি গরু বিক্রিও করেন। এরই মধ্যে গত মার্চ মাসে বাকি চারটি গরু চুরি হয়ে যায়।
আজ শনিবার বিকেলে সরেজমিনে লাকির বাড়িতে গেলে তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে জেগে দেখেন, গোয়ালঘরের দরজায় তালা লাগানোর শিকল কাটা। ভেতরে গরু–বাছুর কোনোটাই নেই। জুড়ী থানার পুলিশের এক কর্মকর্তার মুঠোফোনের নম্বর ছিল তাঁর কাছে। ওই নম্বরে কথা বলে তাঁকে ঘটনাটি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাকি রানী বলেন, ‘গাইটা (গাভি) পাইয়া মনে কিছু শান্তি ফিরিয়া আইছিন। একটা বাছুরও পাইলাম। মনে করছিলাম, বাছুরটার বয়স ৯-১০ মাস হইলে বিক্রি করি দিমু। ৫০ হাজার টাকা লোন (ঋণ) করছিলাম বেশ আগে। ২০-২৫ হাজার টাকা পরিশোধের বাকি। বাছুর বিক্রি করে এই টাকাটা পরিশোধ করার চিন্তাভাবনা করছিলাম। চোর আমারে আবার পথে নামাই দিল। কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে?’
এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি লাকি। তিনি বলেন, ‘আগেরবার চুরির পরেও পুলিশরে জানাইয়া কোনো লাভ হইছে না। খামাখা করিয়া লাভ কিতা হইব? তবে কাইল (শুক্রবার) খবর জানানির পর তারা (পুলিশ) আইয়া খোঁজাখুঁজি করছে, চেষ্টা করছে।’
লাকি বলেন, ‘সংসারের নানা খরচ আছে। মেয়েরার লেখাপড়ায়ও খরচ লাগে। এইটা তো চালানি লাগব। এসএসসি পাসের পর আমার বিয়া হই গেছে। ৩-৪ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি পাইলে করতাম। কিন্তু এসএসসি পাসে তো চাকরি পাওয়াও কঠিন। কিতা করতাম, কিলা চলতাম—এইটাই খালি ভাবি। ঘরে বেকার বসি থাকলে সংসার চলব কেমনে?’
আরও পড়ুনশূন্য গোয়ালের সামনে কাঁদতে কাঁদতে লাকী রানী বললেন, ‘চোরে মরা মানুষরে মারিয়া গেল’০৩ মার্চ ২০২৫জুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ মিয়া বলেন, খবর পেয়ে তিনিসহ থানার আরেক এসআই মুজিবুর রহমান লাকি রানীর বাড়িতে যান। খোঁজাখুঁজি করেও চুরি হওয়া গরু ও বাছুরের সন্ধান মেলেনি। তবে তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।