প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চার দিনের সরকারি সফরে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকায় আসছেন। সরকারি সূত্র জানায়, গুতেরেসকে বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট (ইকে-৫৮৬) বিকেল ৫টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। গুতেরেস ঢাকায় পৌঁছানোর পর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান শুক্রবার সকাল ৯টায় হোটেলে গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পরে, জাতিসংঘ প্রধান সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করবেন।

বৈঠকের পর গুতেরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে কক্সবাজার যাবেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাঁকে স্বাগত জানাবেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস দিনের শেষে গুতেরেসের সঙ্গে কক্সবাজারে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন।

এই অনুষ্ঠানে উভয় নেতা রোহিঙ্গা ইমাম এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ইফতারের আগে জাতিসংঘ মহাসচিব ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করবেন, যার মধ্যে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, লার্নিং সেন্টার, মাল্টি-পারপাস সার্ভিস সেন্টার এবং একটি পাট উৎপাদন কেন্দ্র। তিনি রোহিঙ্গা যুবক ও শিশুদের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে আশা করা হচ্ছে। গুতেরেস সন্ধ্যায় ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফিরে আসবেন। 

শনিবার,জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয় পরিদর্শন করবেন, যেখানে তিনি জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন করবেন, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখবেন এবং জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে একটি সভায় যোগ দেবেন। বিকেলে তিনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি তরুণদের সঙ্গে একটি সংলাপে অংশ নেবেন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের সাথেও সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

পরে হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে এক যৌথ মিডিয়া ব্রিফিংয়ে গুতেরেস বক্তব্য রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই দিনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতিসংঘ প্রধানের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন। রোববার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন গুতেরেস। ড. খলিলুর রহমান বিমানবন্দরে তাঁকে বিদায় জানাতে উপস্থিত থাকবেন।

এই সফর বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক মর্যাদা এবং বিশ্ব মঞ্চে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো বিভিন্ন বিষয়ে দেশটি যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তা তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইউনূসকে লেখা সাম্প্রতিক এক চিঠিতে গুতেরেস আশা প্রকাশ করেছেন যে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আসন্ন উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন নতুন করে বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদের দুর্দশার ব্যাপক ভিত্তিক সমাধান বের করতে সহায়তা করবে। গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংগঠিত করার প্রয়াস অব্যাহত রাখবে।’
 
জাতিসংঘ প্রধান বলেন, তিনি তার ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপকদের বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের স্থানীয় টিমগুলোকে রাখাইনের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক সহায়তা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য কীভাবে সর্বাধিক সহায়তা প্রদান করা যায় সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য করব ন ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

বন্ধুদের নিয়ে ‘উড়াল’

আট বছর আগে জোবায়দুর রহমানকে গল্পটা শুনিয়েছিলেন সম্রাট প্রামানিক। জোবায়দুর তখন সহকারী পরিচালক, স্বপ্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা হওয়া। কয়েক বছর পর সত্যি সত্যিই যখন সিনেমা নির্মাণের কথা ভাবলেন, শুরুতেই তাঁর সেই গল্পের কথা মনে পড়ল। সম্রাটকে ফোন করলেন জোবায়দুর, চায়ের দোকানে বসে আবারও গল্পটা শুনলেন। ঠিক করলেন, এ গল্প থেকেই ছবি বানাবেন তিনি।

পেশাদার কোনো প্রযোজকের কাছে যাননি জোবায়দুর, নিজেরাই স্বাধীনভাবে ছবিটি নির্মাণ করেছেন; পাশে ছিলেন ভাই-বন্ধুরা। নির্মাতা বললেন, ‘এটাই আমার প্রথম নির্মাণ, আগে কোনো কাজ করিনি। কী করা যায়? আশপাশের ভাই–বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। শরীফ সিরাজ, সম্রাট প্রামানিক, জহিরুল ইসলামসহ তিন-চারজন মিলে কাজটা শুরু করি।’ তাঁরা কেন বিনিয়োগ করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মাতা জোবায়দুর বলেন, ‘গল্পের কারণে আগ্রহী হয়েছেন তাঁরা।’

শুটিংয়র ফাঁকে তোলা ছবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ