পাবনার সাঁথিয়ায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নছিমন ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মখোমুখি সংঘর্ষে বাবা এবং তার শিশু সন্তান নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৪ জন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন-আটঘরিয়া উপজেলার কৈজুরী শ্রীপুর গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে আজিজুল ইসলাম (৪০) ও তার তিন বছর বয়সী ছেলে আবু হুরাইয়া।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে বাসচাপায় ভাই-বোনসহ নিহত ৩

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাক্টর ফুটপাতে, মেকানিক নিহত

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাঁথিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে সিএনজিচালত অটোরিকশা পাবনার দিকে যাচ্ছিল। পথে মাধপুর-সাঁথিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের নন্দনপুরে ইঞ্জিনচালিত নসিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এ সময় স্থানীয়রা আহত অবস্থায় ৬ জনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাক বাবা-ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ৪ জন চিকিৎসাধীন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, “ঘটনা শোনার পর পুলিশ সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। একজন শিশুসহ ২ জন মারা গেছে। কেউ অভিযোগ দেয়নি।”

তিনি বলেন, “আহতদের চিকিৎসা চলছে। ঘটনার পর নসিমনের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। নসিমনটি জব্দ করা হয়েছে।”

পাবনা/শাহীন/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

‘কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে’

৯ মাস আগে বিধবা লাকি রানী দের (৪০) গোয়ালঘরের তালা কেটে দুর্বৃত্তরা চারটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর কানাডাপ্রবাসী এক ব্যক্তি তাঁকে একটি গাভি কিনে দেন। পরে গাভিটি একটি বাছুরের জন্ম দেয়। বাছুরটির বয়স হয়েছিল প্রায় সাত মাস। গতকাল শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা আবারও তাঁর গোয়ালঘরের দরজার তালা লাগানোর শিকল কেটে বাছুরসহ গাভিটি চুরি করে নিয়ে গেছে।

লাকি রানীর বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে। তাঁর স্বামী প্রশান্ত দে প্রায় চার বছর আগে হঠাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। লাকির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রিয়া রানী দে স্থানীয় তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। ছোট মেয়ে রুহি রানী দে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন লাকি। পাঁচটি গরু লালন-পালন করছিলেন। গরু বিক্রি করে সংসার আর দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাবেন ভেবেছিলেন। একটি গরু বিক্রিও করেন। এরই মধ্যে গত মার্চ মাসে বাকি চারটি গরু চুরি হয়ে যায়।

আজ শনিবার বিকেলে সরেজমিনে লাকির বাড়িতে গেলে তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে জেগে দেখেন, গোয়ালঘরের দরজায় তালা লাগানোর শিকল কাটা। ভেতরে গরু–বাছুর কোনোটাই নেই। জুড়ী থানার পুলিশের এক কর্মকর্তার মুঠোফোনের নম্বর ছিল তাঁর কাছে। ওই নম্বরে কথা বলে তাঁকে ঘটনাটি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাকি রানী বলেন, ‘গাইটা (গাভি) পাইয়া মনে কিছু শান্তি ফিরিয়া আইছিন। একটা বাছুরও পাইলাম। মনে করছিলাম, বাছুরটার বয়স ৯-১০ মাস হইলে বিক্রি করি দিমু। ৫০ হাজার টাকা লোন (ঋণ) করছিলাম বেশ আগে। ২০-২৫ হাজার টাকা পরিশোধের বাকি। বাছুর বিক্রি করে এই টাকাটা পরিশোধ করার চিন্তাভাবনা করছিলাম। চোর আমারে আবার পথে নামাই দিল। কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে?’

এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি লাকি। তিনি বলেন, ‘আগেরবার চুরির পরেও পুলিশরে জানাইয়া কোনো লাভ হইছে না। খামাখা করিয়া লাভ কিতা হইব? তবে কাইল (শুক্রবার) খবর জানানির পর তারা (পুলিশ) আইয়া খোঁজাখুঁজি করছে, চেষ্টা করছে।’

লাকি বলেন, ‘সংসারের নানা খরচ আছে। মেয়েরার লেখাপড়ায়ও খরচ লাগে। এইটা তো চালানি লাগব। এসএসসি পাসের পর আমার বিয়া হই গেছে। ৩-৪ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি পাইলে করতাম। কিন্তু এসএসসি পাসে তো চাকরি পাওয়াও কঠিন। কিতা করতাম, কিলা চলতাম—এইটাই খালি ভাবি। ঘরে বেকার বসি থাকলে সংসার চলব কেমনে?’

আরও পড়ুনশূন্য গোয়ালের সামনে কাঁদতে কাঁদতে লাকী রানী বললেন, ‘চোরে মরা মানুষরে মারিয়া গেল’০৩ মার্চ ২০২৫

জুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ মিয়া বলেন, খবর পেয়ে তিনিসহ থানার আরেক এসআই মুজিবুর রহমান লাকি রানীর বাড়িতে যান। খোঁজাখুঁজি করেও চুরি হওয়া গরু ও বাছুরের সন্ধান মেলেনি। তবে তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ