‘দল যতক্ষণ জিততেছে নিজের ব্যাটিং নিয়ে আমি ওইভাবে চিন্তা করছি না’
Published: 17th, March 2025 GMT
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিডিসিএল) রান খরায় ভুগছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী খেলছে শান্তর নেতৃত্বে। দল জয়ের ধারায় থাকায় নিজের রান নিয়ে ভাবছেন না শান্ত।
সোমবার (১৭ মার্চ) সংবাদমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার, “দল যতক্ষণ পর্যন্ত ম্যাচ জিততেছে, নিজের ব্যাটিং নিয়ে আমি ওইভাবে চিন্তা করছি না।”
এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন শান্ত। সর্বোচ্চ আসে ৩৭ রান। আর দুই ম্যাচে আউট হন ৯ ও ১২ রানে। এক ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি। পাঁচ ম্যাচে চার জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে ক্লাবটি।
আরো পড়ুন:
জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টি: টুর্নামেন্ট সেরা রনি
খুলনাকে ৮১ রানে গুঁড়িয়ে ফাইনালে ঢাকা মেট্রো
রান না পেলেও ঢাকা লিগ উপভোগ করছেন বলে জানিয়েছেন শান্ত, “খুব উপভোগ করছি। দল হিসেবে এখন পর্যন্ত আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলছি। তবু আমাদের যে দলটা আছে, আরও ভালো খেলা সম্ভব। পয়েন্ট টেবিলে খুব ভালো অবস্থানে আছি। ক্রিকেটাররা একেক ম্যাচে দায়িত্ব নিয়ে পারফর্ম করছে। খুব ইতিবাচক ব্যাপার।”
বরাবরের মতো জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গড়তে পারেনি আবাহনী। তবে একবারে যে নেই তাও নয়। বেশ শক্তিশালী দলই গড়েছেন তারা। আছেন তরুণ পেসার নাহিদ রানা। তরুণ ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও আছেন আবাহনীতে।
নিজের দল নিয়ে শান্ত বলেন, “অবশ্যই (জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের উপস্থিতি) খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছোটবেলা থেকে এই টুর্নামেন্টটা খেলে বড় হয়েছি আমরা। ওয়ানডে সংস্করণ ভালো করার অন্যতম কারণ এই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। সবাই খেলতে পারছে, এটা ভালো দিক। যেটা দেখে ভালো লাগছে, সবাই চেষ্টা করছে প্রতিদিন কীভাবে দলকে জেতাতে পারে, অবদান রাখতে পারে। এটা ইতিবাচক দিক।’’
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে’
৯ মাস আগে বিধবা লাকি রানী দের (৪০) গোয়ালঘরের তালা কেটে দুর্বৃত্তরা চারটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর কানাডাপ্রবাসী এক ব্যক্তি তাঁকে একটি গাভি কিনে দেন। পরে গাভিটি একটি বাছুরের জন্ম দেয়। বাছুরটির বয়স হয়েছিল প্রায় সাত মাস। গতকাল শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা আবারও তাঁর গোয়ালঘরের দরজার তালা লাগানোর শিকল কেটে বাছুরসহ গাভিটি চুরি করে নিয়ে গেছে।
লাকি রানীর বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে। তাঁর স্বামী প্রশান্ত দে প্রায় চার বছর আগে হঠাৎ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। লাকির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রিয়া রানী দে স্থানীয় তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। ছোট মেয়ে রুহি রানী দে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন লাকি। পাঁচটি গরু লালন-পালন করছিলেন। গরু বিক্রি করে সংসার আর দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাবেন ভেবেছিলেন। একটি গরু বিক্রিও করেন। এরই মধ্যে গত মার্চ মাসে বাকি চারটি গরু চুরি হয়ে যায়।
আজ শনিবার বিকেলে সরেজমিনে লাকির বাড়িতে গেলে তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে জেগে দেখেন, গোয়ালঘরের দরজায় তালা লাগানোর শিকল কাটা। ভেতরে গরু–বাছুর কোনোটাই নেই। জুড়ী থানার পুলিশের এক কর্মকর্তার মুঠোফোনের নম্বর ছিল তাঁর কাছে। ওই নম্বরে কথা বলে তাঁকে ঘটনাটি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাকি রানী বলেন, ‘গাইটা (গাভি) পাইয়া মনে কিছু শান্তি ফিরিয়া আইছিন। একটা বাছুরও পাইলাম। মনে করছিলাম, বাছুরটার বয়স ৯-১০ মাস হইলে বিক্রি করি দিমু। ৫০ হাজার টাকা লোন (ঋণ) করছিলাম বেশ আগে। ২০-২৫ হাজার টাকা পরিশোধের বাকি। বাছুর বিক্রি করে এই টাকাটা পরিশোধ করার চিন্তাভাবনা করছিলাম। চোর আমারে আবার পথে নামাই দিল। কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে?’
এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি লাকি। তিনি বলেন, ‘আগেরবার চুরির পরেও পুলিশরে জানাইয়া কোনো লাভ হইছে না। খামাখা করিয়া লাভ কিতা হইব? তবে কাইল (শুক্রবার) খবর জানানির পর তারা (পুলিশ) আইয়া খোঁজাখুঁজি করছে, চেষ্টা করছে।’
লাকি বলেন, ‘সংসারের নানা খরচ আছে। মেয়েরার লেখাপড়ায়ও খরচ লাগে। এইটা তো চালানি লাগব। এসএসসি পাসের পর আমার বিয়া হই গেছে। ৩-৪ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি পাইলে করতাম। কিন্তু এসএসসি পাসে তো চাকরি পাওয়াও কঠিন। কিতা করতাম, কিলা চলতাম—এইটাই খালি ভাবি। ঘরে বেকার বসি থাকলে সংসার চলব কেমনে?’
আরও পড়ুনশূন্য গোয়ালের সামনে কাঁদতে কাঁদতে লাকী রানী বললেন, ‘চোরে মরা মানুষরে মারিয়া গেল’০৩ মার্চ ২০২৫জুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ মিয়া বলেন, খবর পেয়ে তিনিসহ থানার আরেক এসআই মুজিবুর রহমান লাকি রানীর বাড়িতে যান। খোঁজাখুঁজি করেও চুরি হওয়া গরু ও বাছুরের সন্ধান মেলেনি। তবে তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।