মিষ্টি ভুট্টায় সফলতার স্বপ্ন দেখছেন স্কুল শিক্ষক মনি
Published: 18th, March 2025 GMT
খাগড়াছড়িতে মিষ্টি ভুট্টার চাষ করে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছোট মনি চাকমা। আর্থিকভাবে লাভবান হলে আগামীতে এই ফসলটি আরো বেশি পরিমাণে চাষ করবেন বলে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন জেলা সদরের খবংপুড়িয়া গ্রামের এই বাসিন্দা।
ছোট মনি চাকমা খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার লেমুছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি আধুনিক কৃষিতে ঝোঁক রয়েছে তার। তিনি খাগড়াছড়ি পৌরসভার খবংপড়িয়া এলাকার নিজ জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করে সফলতা পেয়েছিলেন। ২০১৫-২০১৬ সালে ৪০ শতক জায়গায় প্রায় চার লাখ টাকার স্ট্রবেরি চাষ করেন তিন। উৎপাদিক স্ট্রবেরি বিক্রি করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ করেন তিনি।
এরপর বিদেশি ফল ড্রাগন চাষ করেও লাভবান হন এই শিক্ষক। তিনি জানান, ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই ফলটির চাষ করেছেন তিনি। একবার গাছ লাগালে কয়েক বছর ফল পাওয়া যায়। তার দেড় লাখ টাকার মতো খরচ হয় ড্রাগন গাছের পেছনে। তিনি প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার ফল ও চারা বিক্রি করেছেন।
আরো পড়ুন:
তামাকের রাজ্যে পরিণত হচ্ছে দীঘিনালা
‘টমেটো এখন পাখিদের খাদ্য’
একদিন স্কুল থেকে ফেরার সময় দুই কেজি মিষ্টি ভুট্টা কিনে এনেছিলেন ছোট মনি চাকমা। সেই ভুট্টা খাওয়ার পর থেকেই তার মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহ দেখা দেয়। খাগড়াছড়ি বাজারের বীজের দোকানগুলোতে মিষ্টি ভুট্টার বীজ না পেয়ে, পরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে প্রতিকেজি বীজ চার হাজার টাকায় সংগ্রহ করেন তিনি। পরে নিজের ৪০ শতক জমিতে রোপণ করেন ভুট্টার বীজ। এখন তার ক্ষেতের একেকটি গাছে দুই থেকে তিনটি ভুট্টার সবল মোচা ধরেছে।
ছোট মনি চাকমা জানান, তিনি বিগত কয়েক বছর ধরে বরই চাষ করছেন। এবারও বরই চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। বরইয়ের পাশাপাশি এবার শসা, ব্রকোলি, বিট রুট পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছেন। অন্য একটি জমিতে মিষ্টি ভুট্টার চাষও করেছেন তিনি। এই ফসলটি বিক্রি করে লাভবান হতে পরলে আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করবেন।
চোট মনি চাকমার প্রতিবেশী প্রিয় লাল চাকমা বলেন, “তাকে দেখে আমরাও আগামীতে এই মিষ্টি ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছি। বর্তমানে ছোট মনি চাকমা প্রতিকেজি মিষ্টি ভুট্টা ১০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।”
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ বাছিরুল আলম বলেন, “ছোট মনি চাকমা একই উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। তার কৃষির প্রতি ভালোবাসা আছে। এ বছর এই শিক্ষক মিষ্টি ভুট্টা চাষ করেছেন। তার ক্ষেতে ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “মিষ্টিার ভুট্টার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বাজারে বীজের দাম বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক এই ফসলটি চাষ করতে পারেন না। সরকারিভাবে যদি বীজ সরবরাহ করা হয়, তাহলে কৃষকদের মধ্যে মিষ্টি ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়বে।”
ঢাকা/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল ছ ট মন চ ষ কর কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।