খেলোয়াড়দের অভিযোগে ধারাভাষ্য থেকে বাদ ইরফান পাঠান
Published: 22nd, March 2025 GMT
২০২৫ আইপিএলের ধারাভাষ্যকারদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে গতকাল। ভারত ও ভারতের বাইরের বর্তমান ও সাবেক ৫০-এর বেশি ক্রিকেটার ম্যাচে ধারাভাষ্য দেবেন। তবে দীর্ঘ এই তালিকায় ভারতের সাবেক অলরাউন্ডার ইরফান পাঠানের নাম নেই। আগের আসরগুলোয় কাজ করলেও এবার পাঠানকে না রাখায় বিস্মিত অনেকেই।
ভারতের ক্রীড়া সংবাদমাধ্যম ‘মাই খেল’ বলছে, ভারতীয় কিছু ক্রিকেটার পাঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় তাঁকে ধারাভাষ্য প্যানেল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ওই ক্রিকেটারদের দাবি, ইরফান ব্যক্তিগত রোষ থেকে ধারাভাষ্যে তাঁদের নিয়ে সমালোচনামূলক কথা বলেন। এমনকি এক তারকা ক্রিকেটার পাঠানের ফোন নম্বর ব্লকও করে রেখেছেন।
সূত্রের বরাতে মাইখেল লিখেছে, পাঠান ধারাভাষ্যে ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনা থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত টেনে আনেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্রিকেটারেরা। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে পাঠানের নির্দিষ্ট এক ক্রিকেটারকে নিয়ে সমালোচনামূলক কথা সেই তারকা ভালোভাবে নেননি। ওই ক্রিকেটার তাঁকে ফোনে ব্লক করেছেন বলে জানিয়েছে সেই সূত্র। সংবাদমাধ্যমটি এ বিষয়ে পাঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও মন্তব্য পায়নি।
সূত্র আরও জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ও আইপিএল ম্যাচে নির্দিষ্ট কিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে আলাপচারিতায় সময় পাঠানের প্রচুর ‘অ্যাটিটিউড’ দেখানো ভালোভাবে নেয়নি বিসিসিআই। সূত্রটি বলেছেন, ‘এসব না হলে তার নাম (ধারাভাষ্য প্যানেলে) থাকত। গত দুই বছর ধরেই সে এটা করছে, নির্দিষ্ট কিছু খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত এজেন্ডা কায়েম করছে, যেটা ভালোভাবে নেওয়া হয়নি।’
ধারাভাষ্যকার হিসেবে বিসিসিআইয়ের অফিশিয়াল সম্প্রচারকদের কাছে চুক্তিপত্র না পাওয়া একমাত্র ব্যক্তি নন ইরফান। এর আগে ভারতের সঞ্জয় মাঞ্জরেকার ও হার্শা ভোগলেও ধারাভাষ্য প্যানেল থেকে বাদ পড়েছিলেন কিছু ক্রিকেটারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে। ধারাভাষ্যে তাদের কথায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি সেসব ক্রিকেটার।
ধারাভাষ্য প্যানেল থেকে বাদ ইরফান পাঠান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইরফ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।