আরেকটি এক-এগারো কখনো হতে দেব না: নাহিদ ইসলাম
Published: 22nd, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের কোনো ধরনের পরিকল্পনা হলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, ফ্যাসিজমের যত দোসর ও সুবিধাভোগী রয়েছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে কখনো আরেকটি এক-এগারো হতে দেওয়া হবে না।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বকশীবাজারে কারা কনভেনশন সেন্টারে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে কেবল আওয়ামী লীগকেই বিদায় করা হয়নি উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘৩ আগস্ট শহীদ মিনারে আমরা বলেছিলাম, আওয়ামী লীগ এবং এই ফ্যাসিবাদী ১৫ বছরের যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই এক-এগারোর বন্দোবস্ত থেকে। সেই এক-এগারোর বন্দোবস্তের ফলশ্রুতিতেই কিন্তু আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ক্ষমতা পেয়েছিল। আরেকটি এক-এগারো আমরা কখনো বাংলাদেশে হতে দেব না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আমরা বলেছিলাম, ছাত্র-জনতার সমর্থিত সরকারকেই অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র এবং পরিকল্পনার কথা আমরা বিভিন্ন জায়গায় শুনতে পাচ্ছি। আমরা খুবই স্পষ্টভাবে বলেছি এবং আজকের এই অনুষ্ঠান থেকে আবারও বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের কোনো ধরনের পরিকল্পনা করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, ফ্যাসিজমের যত দোসর রয়েছে, সুবিধাভোগী রয়েছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আমরা নিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
কোনো ধরনের বিরাজনীতিকরণ এবং সামরিকীকরণের চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি, রাজনৈতিক শূন্যতা থেকে সামরিক হস্তক্ষেপ হয়েছে। এর ফলাফল কখনোই গণতন্ত্রের জন্য ভালো হয়নি। তাই আমরা মনে করি, একটি গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, যেখানে জনগণ জেগে উঠেছে। জনগণ নিজের সিদ্ধান্ত, নিজের মালিকানা নিজে বুঝে নিতে চায়। জনগণের সেই মালিকানা, সেই অধিকার তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে।’
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এনসিপির লালবাগ জোনের সদস্য হোসেন মোহাম্মদ আনোয়ার। এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারাও বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব