শ্যালকের ধাওয়ায় বাড়ি থেকে পালালেন, পরে নদীর চরের গাছে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
Published: 24th, March 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বাইনগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় ইয়াসিন আলম (৩২) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার কালিঞ্চি এলাকার মাদার নদীর চর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ইয়াছিন কৈখালী ইউনিয়নের জয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বরিশালে একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মোল্যা। তবে তাঁকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে নাকি আত্মহত্যা করেছেন—বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন বলেন, বরিশাল থেকে বাড়িতে এসেছিলেন ইয়াছিন। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার জেরে গতকাল রোববার বিকেলে বাড়ির পাশে ইয়াসিনকে মারধর করেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ও শ্যালক। একপর্যায়ে রাতে বাড়িতে ফিরলে স্ত্রীকে মারধর করেন ইয়াসিন। খবর পেয়ে তাঁর শ্যালকসহ অন্যরা ধাওয়া দিলে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। আজ সকালে মাদার নদীর অপর প্রান্তে কালিঞ্চি এলাকার নদীর চরে বাইনগাছে তাঁর মরদেহ ঝুলতে দেখা যায়। পরে পুলিশকে খবর পাঠানো হয়।
শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ইয়াসিন আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাঁকে মেরে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধে বড় ফাটল, ঝুঁকিতে ১৫ গ্রামের মানুষ
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে বাঁধ সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সিংহড়তলী ও চুনকুড়ি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের হাজারো মানুষ।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পেলে হঠাৎ করে ফাটল ধরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ ঘটনায় চুনকুড়ি নদী তীরবর্তী এলাকার গ্রামবাসীর মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দ্রুত তারা ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে হরিনগর বাজারের কাছে সিংহরতলী গ্রামের চুলকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধের ৩০-৩৫ মিটার এলাকাজুড়ে বড় ফাটল দেখা দেয়। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বেড়িবাঁধের ফাটল পয়েন্টে আধুনিক মানের জিও টিউব দিয়ে বাঁধের ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু করেন।
কিন্তু এ ঘটনার একদিন পরেই গতকাল দুপুরের জোয়ারের সময় নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে হঠাৎ করে ফাটল দেখা দেওয়া বাঁধের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। দ্রুত এই ভাঙনপয়েন্ট সংস্কার করতে না পারলে নদীর প্রবল স্রোতে সম্পূর্ণ বাঁধ ভেঙে মুন্সিগঞ্জ ও হরিনগর ইউনিয়নসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়তে পারে। ক্ষতি হতে পারে বসতবাড়ি, চিংড়িঘের, মিঠা পানির পুকুর, ফসলি জমি, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব হোসেন বলেন, বাঁধের ফাটলের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে এখনো জোয়ার বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্রোতের টানে বাঁধের বাকি অংশ যদি ভেঙে যায়; তাহলে শ্যামনগর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পরবে।
তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড চেষ্টা করছে বাঁধটি সংস্কার করার জন্য। কিন্তু জানি না কয়দিন লাগবে। বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের জন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এদিকে উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধে ফাটলের খবর শুনে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার (এসও) প্রিন্স রেজাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সিংহড়তলী এলাকার ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন।
সাতক্ষীরা পাউবো-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সালাউদ্দীন সানি বলেন, চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধে গত শনিবার ৩০-৩৫ মিটার জায়গাজুড়ে ফাটল শুরু হয়। এরপর থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। হঠাৎ করে গতকাল রোববার সকালে বাঁধের একাংশ ভেঙে নদীতে দেবে যায়। ফলে ৩০ মিটার এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যাতে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে না পারে সেজন্য জিও টিউব দিয়ে ৫০/৬০ মিটার বিকল্প রিং বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই কাজ শেষ হবে। এছাড়াও শ্যামনগরের কয়েকটি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে, সেগুলোর কাজও শুরু করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর বাজারের কাছে সিংহরতলী গ্রামে চুনকুড়ি নদীর উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেয়।