সামরিক শাসন জারি করে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলের পর পাকিস্তানের রাজধানী করাচি থেকে ইসলামাবাদে স্থানান্তর করেন আইয়ুব খান। ওই সময় পরিকল্পনা হয়, পূর্ব পাকিস্তানে দ্বিতীয় রাজধানী গড়ে তোলা হবে। দ্বিতীয় রাজধানীর জায়গা নির্ধারিত হয় বর্তমান ঢাকার শেরেবাংলা নগর। জায়গাটার নতুন নাম করা হয় আইয়ুব নগর। এত বড় শহর তৈরি করা তো আর চাট্টিখানি কথা না। তৎকালীন পাকিস্তানের সেরা স্থপতিদের কাছ থেকে চাওয়া হয় স্থপতিদের নাম। স্থপতি মাজহারুল ইসলাম তিনজন স্থপতির নাম প্রস্তাব করেন—ল্য করব্যুজিয়ে, আলভার আইতো ও লুই আই কান। ব্যস্ততা ও বয়সের কারণে প্রস্তাব থেকে বাদ পড়ে করব্যুজিয়ে ও আইতোর নাম। আর প্রস্তাবটি লুফে নেন লুই আই কান।
কারণ কয়েক বছর আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া শহরের উন্নয়নের জন্য একটি পরিকল্পনা জমা দিয়েছিলেন লুই আই কান। কিন্তু সেই প্রস্তাব আলোর মুখ দেখেনি। তখন থেকেই তাঁর মাথায় নতুন একটা শহর তৈরির পরিকল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছিল। ঠিক সেই সময়ে শেরেবাংলা নগর তৈরির প্রস্তাব তাঁকে আকৃষ্ট করে। ফলে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের প্রস্তাব তিনি ফেলতে পারেননি। নতুন শহরের জন্য বরাদ্দ ছিল ৮৪০ একর জমি, যার বেশির ভাগই ছিল নিচু ধানি জমি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ শুরুর জন্য তাঁকে দেওয়া হয় ২০০ একর জমি।
কাজ শুরুর আগে জায়গাটাকে তো কাছ থেকে দেখতে হবে। মৌখিক চুক্তি শেষে ১৯৬২ সালে ঢাকা আসেন লুই আই কান। প্রকৃতি ও আলো ছায়া নিয়ে খেলা করা কানের চোখে ধরা পড়ে অপূর্ব এক বাংলাদেশ। পাল যুগের পাহাড়পুর থেকে শুরু করে ব্রিটিশ আমলের আহসান মঞ্জিল—এই অঞ্চলে লাল ইট বেশ সমাদৃত। ঢাকার লালবাগ দূর্গ, লাল ইট, নদী ও সবুজকে মাথায় রেখে পরিকল্পনা শুরু করেন কান। একই সঙ্গে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি, সুপ্রিম কোর্ট, জনপ্রতিনিধিদের থাকার জায়গা, সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বাসস্থান, প্রেসিডেন্ট প্যালেস, স্টেডিয়াম, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি শহর তৈরির পরিকল্পনা ছিল তৎকালীন কর্তৃপক্ষের। সেসব মাথায় রেখেই প্রথম মাস্টারপ্ল্যান জমা দিয়েছিলেন লুই কান।
কানের নকশায় স্বপ্নের শহরখাতা–কলমে সংসদ ভবনের নকশা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিপ্রবিতে ‘ফ্রম ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার’ বিষয়ক সেমিনার
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবিপ্রবি) ক্যারিয়ার গঠনে ‘ফ্রম ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-১ এর সভা কক্ষে ম্যানেজমেন্ট বিজনেস সোসাইটির (এমবিএস) আয়োজনে এবং খাগড়াছড়ির অ্যাডুলাইফ আইটি ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
জুলাই সনদে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি: ইউপিডিএফ
রাঙামাটিতে পিসিসিপির ডাকা হরতাল প্রত্যাহার
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, “যেকোনো ক্যারিয়ারে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গকে- অন্তর্ভুক্তি, স্বাধীনতা এবং প্রাধিকার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। যে চাকরিতে এই তিনটি জিনিস থাকবে, সেসব চাকরি স্বাচ্ছন্দ্য ও মর্যাদাপূর্ণ হবে।”
শিক্ষার্থীদেরকে তাদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্কিলে উন্নত করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, “দক্ষতার ঘাটতিগুলো শনাক্ত করে সেগুলো কাটিয়ে উঠে নিজের দক্ষতা, যোগ্যতা ও সততা দিয়ে ক্যারিয়ারে সফল হতে হবে। এছাড়াও নিজেদের যে পেশায় আগ্রহ ও দক্ষতা আছে, তা বেছে নিতে হবে।”
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জুনাইদ কবির, প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক সাদ্দাম হোসেন, ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রহিম উদ্দিন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সূচনা আখতার প্রমুখ।
এছাড়া অ্যাডুলাইফ আইটি ইনস্টিটিউটের সিইও আমির হোসেন রোজেলসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তারা ক্যারিয়ার গঠনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
ঢাকা/শংকর/মেহেদী