শুক্রবার খোলা থাকছে সরকারি চার ব্যাংক
Published: 27th, March 2025 GMT
আগামীকাল শুক্রবার রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক খোলা থাকবে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বেতন তোলার সুবিধার জন্য এ দিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সব শাখা খোলা থাকবে। অফিস চলবে ৩টা পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা ব্যাংকগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাংক হিসাবে ইএফটিএন পদ্ধতিতে বেতন–ভাতা চালু করতে গিয়ে বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন ডিজিট ভুলের কারণে গত ডিসেম্বর থেকে অনেকের বেতন-ভাতা আটকে ছিল। জটিলতা নিরসন করে আজ বৃহস্পতিবার অনেকেই বেতন পেয়েছেন। ঈদের আগে আজ ছিল শেষ লেনদেন। এদিন শেষ মুহূর্তে অনেকের অ্যাকাউন্টে বেতন যাওয়ায় অনেকে টাকা তুলতে পারেননি। এদিকে শুক্রবার থেকে টানা ৯ দিন ছুটি থাকবে। যে কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক এ নির্দেশনা দিয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ২৮ মার্চ শুক্রবার ছুটির দিন সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা খোলা রাখতে হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত লেনদেন হবে। আর খোলা থাকবে ৩টা পর্যন্ত।
এর মধ্যে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত জুমাতুল বিদার বিরতি থাকবে। ছুটির দিনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিধি অনুযায়ী ভাতা দিতে বলা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক রব র
এছাড়াও পড়ুন:
‘সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশের’ শর্তে রাজসাক্ষী মামুনকে ক্ষমার আদেশ ট্রাইব্যুনালের
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যার ঘটনায় নিজের এবং মামলার প্রধান আসামির অপরাধ সম্পর্কিত ‘সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশের’ শর্তে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ক্ষমা করার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গত বৃহস্পতিবার দুই পৃষ্ঠার এ লিখিত আদেশ দেন। যা শনিবার গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের আদেশে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট ৫টি অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ জুলাই তিন অভিযুক্ত- শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ধারা ৩(২)(এ), ৩(২)(জি), ৩(২)(এইচ), ৪(১), ৪(২), ৪(৩) এর অধীনে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আদেশের দিন অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। অপর দুই আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক।
অভিযোগ গঠন করার পর তা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে পড়ে শোনানো হয় এবং তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি দোষী স্বীকার করবেন কি না। তখন তিনি দোষ স্বীকার করেন এবং জানান যে, তিনি সংশ্লিষ্ট অপরাধসমূহ এবং এই অপরাধ সংঘটনে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তির সম্পর্কে তার জ্ঞাতসারে জানা সব তথ্য ‘সৎভাবে ও সম্পূর্ণভাবে’ প্রকাশ করতে ইচ্ছুক। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে তার আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ ক্ষমা প্রদান করার জন্য একটি আবেদন করেন ট্রাইব্যুনালে।
আদেশে এ বিষয়ে বলা হয়, প্রধান কৌঁসুলি এই শর্তে ক্ষমা প্রদানের বিষয়ে সম্মতি প্রদান করেন যে- অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ‘সম্পূর্ণ ও সত্য তথ্য প্রদান করবেন’, যা অভিযোগের অপরাধের বিচার কার্যক্রমে সহায়ক হবে। উপর্যুক্ত তথ্য ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ট্রাইব্যুনাল মনে করে যে, অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ক্ষমা প্রদান করা উপযুক্ত এবং সেই মোতাবেক তাকে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা প্রদান করা হয়েছে যে- তিনি সংশ্লিষ্ট অপরাধসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি সম্পর্কে তার জানা সব তথ্য ‘সম্পূর্ণ ও সত্যভাবে’ প্রকাশ করবেন। ‘অভিযুক্ত এ শর্তে ক্ষমা গ্রহণ করেছেন এবং সে অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল তাকে সাক্ষী হিসেবে পরবর্তীতে সাক্ষ্যদানের জন্য ডাকবে।’
আদেশে বলা হয়, ‘চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন যেহেতু ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং তা গ্রহণ করেছেন, তাই তাকে কারাগারে অন্যান্য বন্দিদের থেকে আলাদা রাখার প্রয়োজন। সে মোতাবেক সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হলো যেন তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাকে অন্য বন্দিদের থেকে আলাদা করে রাখা হয়।’
এই আদেশের একটি অনুলিপি সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করতে এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ১০ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছিল।
আদেশের সময় ট্রাইব্যুনাল সাবেক আইজিপিকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি অভিযোগ স্বীকার করছেন কি না? এরপরই মামুন নিজের অভিযোগ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন। পরে আদালত মামুনের আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
আদালতে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।’