গোল করে ভাইকে স্মরণ দুঃখ পুষে রাখা গ্রিলিশের
Published: 3rd, April 2025 GMT
জ্যাক গ্রিলিশ আমুদে মানুষ। হাসিখুশি, উৎসব ও পানীয় ভালোবাসেন। ফর্মে থাকলে ডিফেন্স-চেরা দৌড়েও খুব পটু। সেই গ্রিলিশ ভেতরে-ভেতরে এতটা আবেগ পুষে রাখেন, তা জানত কে!
সেই আবেগ তাঁর ভাইয়ের জন্য। কিলান গ্রিলিশ। সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম (এসআইডিএস) রোগে ২০০০ সালে মাত্র ৯ মাস বয়সী এই ভাইকে হারান গ্রিলিশ। ভাইয়ের সেই মৃত্যুর শোক এখনো যে তাঁকে কুরে কুরে খায়, সেটা বোঝা গেল গতকাল রাতে প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যানচেস্টার সিটির ২-০ গোলে জয়ের পর।
আরও পড়ুনফ্রি কিকে ‘ফ্লপ’ মেসি, মায়ামির হার১ ঘণ্টা আগেগত ডিসেম্বরের পর গ্রিলিশকে প্রথমবারের মতো একাদশের হয়ে মাঠে নামান সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা। দ্বিতীয় মিনিটেই গোল করে কোচের প্রত্যাশার প্রতিদান দেন ২৯ বছর বয়সী এ উইঙ্গার। গোল উদ্যাপন দেখে মনে হয়েছে, গ্রিলিশ বুঝি একাদশে খেলার সুযোগ পাওয়া এবং ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পর লিগে নিজের প্রথম গোল উদ্যাপন করছেন! দুই হাত ওপরে তুলে আকাশে তাকিয়ে কী বা কাকে যেন স্মরণ করেন গ্রিলিশ।
ম্যাচ শেষে জানা গেল আসল ঘটনা। ২৫ বছর আগে এই দিনেই মারা যান তাঁর ভাই কিলান। স্কাই স্পোর্টসকে গ্রিলিশ বলেছেন, ‘আমার ছোট্ট ভাইটি ২৫ বছর আগে এই দিনে চলে গেছে। পরিবারের জন্য কঠিন একটা দিন। মা–বাবা এখানে (ইতিহাদ স্টেডিয়াম) এখানে আছেন। গোল করা এবং জয়টা তাই বিশেষ কিছু।’
কথাগুলো বলার সময় চোখের পানি আটকাতে পারেননি গ্রিলিশ। পরে নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে ভাইকে স্মরণ করে সিটি তারকা লিখেছেন, ‘এই দিনটা আমার জন্য সব সময়ই বিশেষ। ওটা (গোল) তোমার জন্য কিলান।’ এই ক্যাপশনের পাশাপাশি গোলের পর উদ্যাপনের একটি ছবিও পোস্ট করেন গ্রিলিশ।
আরও পড়ুনলিভারপুলকে কি তাহলে আর্সেনালই সবার আগে ‘গার্ড অব অনার’ দেবে১ ঘণ্টা আগেসিটি কোচ গার্দিওলা জানিয়েছেন, গ্রিলিশের এই বিশেষ দিনের বিষয়ে তিনি জানতেন না। তাঁর ২১ বছর বয়সী বোন হলিও সুস্থ নয়। মস্তিষ্ক ও শারীরিক সমস্যাজনিত রোগে (সেরিব্রাল পালসি) ভুগছেন। ভাইয়ের প্রতি গ্রিলিশের আবেগ নিয়ে গার্দিওলা বলেছেন, ‘জ্যাক অসাধারণ মানুষ। সে অবিশ্বাস্যরকম উদার। আমি এটা জানতাম না এবং ভাবতেও পারছি না তার মা, বাবা ও বোনের জন্য ব্যাপারটি মেনে নেওয়া কত কঠিন। এই দিনটা তাঁরা মনে রেখেছেন, সেটা ভালো। আমি নিশ্চিত, তারা প্রতিদিনই তাকে স্মরণ করেন। তবে গোল করাটা ভালো বিষয়।’
ভাইকে আগেও স্মরণ করেছেন গ্রিলিশ। ২০১৩-১৪ মৌসুমে নটস কাউন্টিতে ধারে খেলার সময় সিনিয়র দলে নিজের প্রথম গোলটি করার পর কিলানকে স্মরণ করেছিলেন গ্রিলিশ। ২০১৮ সালে অ্যাস্টন ভিলার হয়ে বার্মিংহাম সিটির বিপক্ষে জয়েও গোল করে ভাইকে স্মরণ করেন।
কিলানের মৃত্যুতে পাওয়া শোক কতটা গভীর, সে সম্পর্কে আগেই একবার বলেছেন গ্রিলিশের বাবা কেভিন, ‘মাত্র নয় মাস বয়স ছিল তার, দেবদূতের মতো। বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিলাম, আমরা সবাই। জ্যাক তখন অনেক ছোট। কিন্তু সে এখনো তাকে মনে রেখেছে নিজের সব অর্জনের সঙ্গে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই দ ন গ ল কর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী