জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। এমন চ্যালেঞ্জ নিতে আমরা অভ্যস্ত। জাতীয় নাগরিক পার্টির বয়স মাত্র এক মাস। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। শুক্রবার দুপুরে রংপুরের কেরামতিয়া মসজিদে জুমার নামাজ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে মসজিদে নামাজ শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন এনসিপির এই নেতা। 

সারজিস আলম সাংবাদিকদের বলেন, আগে রাজনীতি ছিল টাকা দিয়ে মনোনয়ন কেনা, রাতের আঁধারে কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাওয়া। কিন্তু সেইদিন এখন নেই। এবার জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে, আমরা জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে সংসদে যেতে চাই। 

উত্তরাঞ্চলের সাংগঠনিক টিম হিসেবে ৩২টি জেলায় যাওয়ার কথা জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা বলেন, আমরা মনে করি বিগত এক যুগ ধরে রাজনীতি গণমানুষের ছিল না। আমরা মাঠে, ঘাটে, অলিতে-গলিতে জনগণের কাছে যাব। আমরা যা করতে চাই, বাংলাদেশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখি সেই প্রত্যাশার কথা তাদের কাছে তুলে ধরব। আমাদের চোখের সামনে জুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত নিথর দেহ ছিল, লাশগুলো ছিল। সেগুলো যদি আমাদের সামনে রাখতে পারি তাহলে চব্বিশের জুলাইয়ের স্পিরিট থেকে কখনো বিচ্যুত হব না। জনগণের চাওয়া অনুযায়ী আগামীর বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যেতে পারবো। আমরা জনগণের জন্য কাজ করতে পারলে জনগণ তাদের রায় দিয়ে সংসদে নিয়ে যাবে।   

এনসিপির কমিটির ধরন সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, আজ থেকে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ায় চলে যাব। এপ্রিল মাসেই জেলা ও উপজেলা কমিটি দেখতে পাবেন। জেলা-উপজেলায় আমাদের অসংখ্য শুভাকাঙ্খী রয়েছে, এই তরুণরা দেশের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং জেলা-উপজেলার নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা তাদের আছে। 

তিনি বলেন, কমিটির নেতৃত্ব তরুণনির্ভর হলেও অগ্রজরা অবশ্যই থাকবেন। যেই জায়গায় যাদের গ্রহণযোগ্যতা, দক্ষতা ও সততা রয়েছে ওই এলাকায় তারা নেতৃত্বের জায়গায় আসবেন। আমাদের সামনে এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে তরুণদের সাহস, উদ্যম ও দৃঢ়তা দরকার। অগ্রজদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা আমাদের চলার জন্য বেশ প্রয়োজন। অগ্রজ ও তরুণরা মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব। 

তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ২৮ থেকে ২৯টি দেশ একসঙ্গে কাজ করছে। প্রতিটি রাষ্ট্রের আন্তঃদেশীয় ও আন্তঃঅঞ্চল ভিত্তিক আদান-প্রদানের সম্পর্ক থাকবে। তারা দেশের বন্দরগুলো ব্যবহার করে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন করবে। কিন্তু এগুলো সমতার ভিত্তিতে হতে হবে। রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক থাকতে হবে। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক হতে হবে শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে। 

শেখ হাসিনার শাসনামলের কথা তুলে ধরে সারজিস আলম বলেন, বিগত এক যুগ ধরে আমরা ডমিনেন্স ফিল করে এসেছি। এই সম্পর্কে কেউ যদি কারও জায়গা থেকে ডমিনেট করার চেষ্টা করে আমরা সেই চোখ রাঙানি আর দেখবো না। আমি মনে করি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, চীন, আমেরিকা, রাশিয়াসহ যেকোনো দেশের সমতার সম্পর্ক থাকবে। আমরা পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধের সম্পর্কের ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে যাব। 

বাজেট নিয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, গত ১৬ বছরে সকল বাজেট ছিল অঞ্চলভিত্তিক। বাজেটের বেশিরভাগ গেছে দক্ষিণবঙ্গে, উত্তরবঙ্গ শুধু দিয়েই গেছে। ফসল থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য উত্তরবঙ্গে উৎপাদন হয়। কিন্তু পাওয়ার সময় যতটুকু প্রাপ্য ততটুকু পাইনি। তাই আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উত্তরবঙ্গের জন্য যতুটুক বাজেট দরকার ততটুকু রাখবে। এই বিশ্বাস আমরা রাখতে চাই। কেননা বৈষম্য করে, অন্যায় করে যে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না, তার উদাহারণ হচ্ছে শেখ হাসিনা। 

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ, মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ ইমতি, সদস্যসচিব রহমত আলীসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প জনগণ র ক জ কর আম দ র কম ট র এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ 

আওয়ামীলীগ দেশের মানুষের অধিকার হনন করেছে। তাই, দেশে এক গণবিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছে। ২৪এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ এ দেশ থেকে বিতারিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও রূপগঞ্জ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ দুলাল হোসেন। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়নের আতলাপুর বাজার এলাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে মোহাম্মদ দুলাল হোসেন এসব কথা বলেন। 

লিফলেট বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ, বিএনপি-যুবদলসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

মোহাম্মদ দুলাল হোসেন আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে এ দেশের জনগণ একদলীয় শাসন ও ফ্যাসিবাদের শিকার হয়ে জিম্মি হয়ে ছিল। মানুষের বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের গণজাগরণের মধ্য দিয়ে জনগণ আবারও তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। এখন সময় এসেছে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার।”

তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমানের ৩১ দফা দেশের পুনর্গঠনের পথনির্দেশনা। এই দফাগুলোতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”

এসময় স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দও লিফলেট বিতরণে অংশগ্রহণ করেন। তারা সাধারণ মানুষকে বিএনপির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করেন যে, দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে তারা রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত এবং জনগণের পাশে থাকবে।

স্থানীয়রা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার। একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছেন তারা। এ ধরনের লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমে জনগণ আরও বেশি সচেতন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলতি বছরের শুরুতে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যেখানে রাষ্ট্র সংস্কার ও জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তুলে ধরা হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
  • জুলাই সনদে আমাদের যে সম্মতি সেটি আইনের ঊর্ধ্বে: সালাহউদ্দিন
  • সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত বন্দর গড়তে চাই : সাখাওয়াত
  • বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ 
  • জুলাই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়াবেন না: টুকু
  • সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে
  • জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ