৩০০ আসনে প্রার্থী মনোনয়নের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত এনসিপি: সারজিস আলম
Published: 4th, April 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। এমন চ্যালেঞ্জ নিতে আমরা অভ্যস্ত। জাতীয় নাগরিক পার্টির বয়স মাত্র এক মাস। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। শুক্রবার দুপুরে রংপুরের কেরামতিয়া মসজিদে জুমার নামাজ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে মসজিদে নামাজ শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন এনসিপির এই নেতা।
সারজিস আলম সাংবাদিকদের বলেন, আগে রাজনীতি ছিল টাকা দিয়ে মনোনয়ন কেনা, রাতের আঁধারে কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাওয়া। কিন্তু সেইদিন এখন নেই। এবার জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে, আমরা জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে সংসদে যেতে চাই।
উত্তরাঞ্চলের সাংগঠনিক টিম হিসেবে ৩২টি জেলায় যাওয়ার কথা জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা বলেন, আমরা মনে করি বিগত এক যুগ ধরে রাজনীতি গণমানুষের ছিল না। আমরা মাঠে, ঘাটে, অলিতে-গলিতে জনগণের কাছে যাব। আমরা যা করতে চাই, বাংলাদেশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখি সেই প্রত্যাশার কথা তাদের কাছে তুলে ধরব। আমাদের চোখের সামনে জুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত নিথর দেহ ছিল, লাশগুলো ছিল। সেগুলো যদি আমাদের সামনে রাখতে পারি তাহলে চব্বিশের জুলাইয়ের স্পিরিট থেকে কখনো বিচ্যুত হব না। জনগণের চাওয়া অনুযায়ী আগামীর বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যেতে পারবো। আমরা জনগণের জন্য কাজ করতে পারলে জনগণ তাদের রায় দিয়ে সংসদে নিয়ে যাবে।
এনসিপির কমিটির ধরন সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, আজ থেকে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ায় চলে যাব। এপ্রিল মাসেই জেলা ও উপজেলা কমিটি দেখতে পাবেন। জেলা-উপজেলায় আমাদের অসংখ্য শুভাকাঙ্খী রয়েছে, এই তরুণরা দেশের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং জেলা-উপজেলার নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা তাদের আছে।
তিনি বলেন, কমিটির নেতৃত্ব তরুণনির্ভর হলেও অগ্রজরা অবশ্যই থাকবেন। যেই জায়গায় যাদের গ্রহণযোগ্যতা, দক্ষতা ও সততা রয়েছে ওই এলাকায় তারা নেতৃত্বের জায়গায় আসবেন। আমাদের সামনে এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে তরুণদের সাহস, উদ্যম ও দৃঢ়তা দরকার। অগ্রজদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা আমাদের চলার জন্য বেশ প্রয়োজন। অগ্রজ ও তরুণরা মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ২৮ থেকে ২৯টি দেশ একসঙ্গে কাজ করছে। প্রতিটি রাষ্ট্রের আন্তঃদেশীয় ও আন্তঃঅঞ্চল ভিত্তিক আদান-প্রদানের সম্পর্ক থাকবে। তারা দেশের বন্দরগুলো ব্যবহার করে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন করবে। কিন্তু এগুলো সমতার ভিত্তিতে হতে হবে। রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক থাকতে হবে। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক হতে হবে শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে।
শেখ হাসিনার শাসনামলের কথা তুলে ধরে সারজিস আলম বলেন, বিগত এক যুগ ধরে আমরা ডমিনেন্স ফিল করে এসেছি। এই সম্পর্কে কেউ যদি কারও জায়গা থেকে ডমিনেট করার চেষ্টা করে আমরা সেই চোখ রাঙানি আর দেখবো না। আমি মনে করি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, চীন, আমেরিকা, রাশিয়াসহ যেকোনো দেশের সমতার সম্পর্ক থাকবে। আমরা পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধের সম্পর্কের ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে যাব।
বাজেট নিয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, গত ১৬ বছরে সকল বাজেট ছিল অঞ্চলভিত্তিক। বাজেটের বেশিরভাগ গেছে দক্ষিণবঙ্গে, উত্তরবঙ্গ শুধু দিয়েই গেছে। ফসল থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য উত্তরবঙ্গে উৎপাদন হয়। কিন্তু পাওয়ার সময় যতটুকু প্রাপ্য ততটুকু পাইনি। তাই আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উত্তরবঙ্গের জন্য যতুটুক বাজেট দরকার ততটুকু রাখবে। এই বিশ্বাস আমরা রাখতে চাই। কেননা বৈষম্য করে, অন্যায় করে যে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না, তার উদাহারণ হচ্ছে শেখ হাসিনা।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ, মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ ইমতি, সদস্যসচিব রহমত আলীসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প জনগণ র ক জ কর আম দ র কম ট র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন ১৮ কোটি মানুষের দাবি: জামায়াত
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কার্যকর করতে হবে, আর প্রয়োজনে গণভোট আয়োজন করা যেতে পারে। তবে তা অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। আলোচনায় জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদও উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
৩ দাবিতে জাস্টিস ফর জুলাইয়ের সংবাদ সম্মেলন
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে। ১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলনের পর দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সময়মতো বাস্তবায়ন হয়নি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমে তা সংবিধানে যুক্ত হয়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে বিচারপতি খায়রুল হকের প্রভাবিত রায়ের মাধ্যমে। জামায়াত মনে করে, বিচার বিভাগকে বিতর্কের মুখে না ফেলে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।
হামিদুর রহমান আযাদ জানান, ঐকমত্য কমিশনের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি চারটি বিকল্প প্রস্তাব করেছে, যার মধ্যে সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটিই সবচেয়ে শক্তিশালী। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মত দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনের ক্ষমতা সংসদের নেই। এ জন্য গণভোট প্রয়োজন। জনগণের ইচ্ছাই দেশের সর্বোচ্চ আইন।
ডাকসু নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণকে উদাহরণ হিসেবে টেনে তিনি বলেন, তরুণ সমাজ এখন নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পক্ষে এবং জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গেই তারা একাত্ম।
ঢাকা/এএএম/ফিরোজ