মেয়েটির বয়স ১৬ বছর। প্রকাশ্যে বিয়ে দিতে গেলে অনেক ঝক্কি–ঝামেলা পোহাতে হবে। তাই অনেকটা গোপনেই তার বিয়ের আয়োজন করে পরিবার। মেয়েটির বাড়িতে হাজির হন বরযাত্রীরা। শুধু কাজি আসার অপেক্ষা। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হওয়ার কথা ছিল বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে ওই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে।

নেত্রকোনা সদর উপজেলার কালিয়ারা গাবরাগাতি ইউনিয়নের একটি গ্রামে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সেখানে হাজির হন স্থানীয় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিব উল আহসান। তিনি পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে বিয়েটি বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি ওই কিশোরীর বাবাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরীর সঙ্গে একই ইউনিয়নের পুবকান্দা গ্রামের এক যুবকের বিয়ের সম্বন্ধ হয়। গতকাল সন্ধ্যায় বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। অনেকটা গোপনেই বিয়ের আয়োজন করছিল মেয়েটির পরিবার। স্থানীয় এক যুবক জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসকে বাল্যবিবাহের বিষয়টি জানিয়ে দেন। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিব উল আহসান মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের লোকজন ও পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাল্যবিবাহটি বন্ধ করেন। এ সময় মেয়ের বাবাকে দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

এ ছাড়া উভয় পরিবারের সদস্যদের বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে জানানো হয়। পরে পরিবারের অভিভাবকদের মেয়েটির প্রাপ্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ না দেওয়ার জন্য মুচলেকা নেওয়া হয়।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিব উল আহসান বলেন, ‘বাল্যবিবাহের তথ্য পেয়ে ওই এলাকায় গিয়ে দেখি, শুধু বিয়ে পড়ানোর আনুষ্ঠানিকতা বাকি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কনের বাবাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়ে। মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার বিষয়ে মুচলেকা আদায় করা হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।

আরো পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।

যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।

লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।

বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ