বন্দরে ২৬ নং ওয়ার্ডের  যুবদলের সাবেক সভাপতি সফর আলী (৫২)কে হত্যার চেষ্টাসহ নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। 

এ ঘটনায় আহত সাবেক যুবদল নেতার ভাগ্নি সোনিয়া আক্তার বাদী হয়ে বুধবার (৯ এপ্রিল) বাদী হয়ে হামলাকারি রাসেল, মনির, আলামিন, জিসান, মামুন, আনু, সেলিম,সজিব, রাজ খান পলাশ, সারোয়ার, হাসান, শাহআলম, কবির, জাবেদ, আলামিনসহ ৪০/৫০ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

এর আগে গত ২৮ মার্চ  বিকেলে পৌনে ৬টায়  ও গত ১ এপ্রিল রাত ১টায় বন্দর থানার রামনগর ইস্পাহানী  এলাকায় দুই দফা সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।

অভিযোগের তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বন্দর থানার রামনগর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল করিম মিয়ার ছেলে  সাবেক যুবদল নেতা সফর আলী সাথে একই এলাকার  মতি মিয়ার ছেলে রাসেলের দীর্ঘ দিন ধরে  বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পূর্ব শত্রুতা চলছিল।

এর জের ধরে গত ২৮ মার্চ বিকেল রাসেল, আলামিন,জিসান, মামুন, আনু, সেলিম,সজিব, রাজ খান পলাশ, সারোয়ার, হাসান, শাহআলম, কবির, জাবেদ, আলামিনসহ অজ্ঞাত নামা ৪০/৫০ জন  দেশীয় অস্ত্র, রামদা, চাইনিজ চাপাতি, ছুরি, দা, লোহার রড় ও লাঠি সোটা নিয়ে সাবেক যুবদলের নেতাকো  হত্যার  উদ্দেশ্যে অতর্কিত ভাবে হামলা করে।

ওই সময় হামলাকারি ৩নং আসামী আলামিন সাবেক যুবদল নেতা সফর আলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে মাথায় কোপ মারে, উক্ত কোপ মাথার মাঝ বরাবর লেগে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়। 

৭ নং আসামী আনু তার হাতে থাকা চাইনিজ চাপাতি দিয়ে যুবদল নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ মারিলে  উক্ত কোপ তার ডান কাধে লেগে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়।

পরবর্তীতে জখমপ্রাপ্ত যুবদল নেতাকে  ১ নং আসামী রাসেল  হাসপাতালে গিয়ে পূনরায় কিল ঘুষি মেরে নিচের ঠোটে রক্তাক্ত ও গুরুত্বর জখম করে এবং হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র ছিনিয়ে নেয়, যাতে করে ভিকটিম আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে না পারে। 

এ ছাড়া যুবদল নেতার ভাই  রশিদকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৫নং আসামী মামুন উক্ত সাক্ষীর ঘাড়ের ডান পাশে চাপাতি দিয়ে কোপিয়ে জখম করে। আহত রশিদকে ৮নং আসামী মোঃ সেলিম তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে ডান হাতের কবজির উপর কোপ মারিয়া গুরত্বর রক্তাক্ত জখম করে, যার ফলে  ডান হাতের রগ কেটে যায়।

৩নং সাক্ষী মোঃ সফিকুল ইসলামকে ৫নং আসামী জিসান উক্ত সাক্ষীকে মারিয়া বাম হাতের তর্জনীয় আঙ্গুল কাটা জখম করে। ।

এ ছাড়াও  গত ১ এপ্রিল রাত ১টায় প্রতিপক্ষ রাসেলের  হুকুমে উল্লেখিতরা  বাড়ির মহিলাদের ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিতে স্ট্রিলের আলমারীর ডয়ারে থাকা অভিযোগকারীর নানী মোসা: জোহরা বেগমের ২ ভরি স্বর্নের গহনা (২টি হাতের বালা, গলার চেন ১টি, কানের এক জোড়া দুল) এবং অভিযোগকারীর, চার মামীর মোট ৯ ভরি স্বনের গহনা, সর্বমোট ১১ ভরি গহনা ও নগদ ৫ লাখ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরে তারা বাড়িঘর ভাংচুর করে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য য বদল ন র য়ণগঞ জ স ব ক য বদল ন ত আল ম ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে’

৯ মাস আগে বিধবা লাকি রানী দের (৪০) গোয়ালঘরের তালা কেটে দুর্বৃত্তরা চারটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর কানাডাপ্রবাসী এক ব্যক্তি তাঁকে একটি গাভি কিনে দেন। পরে গাভিটি একটি বাছুরের জন্ম দেয়। বাছুরটির বয়স হয়েছিল প্রায় সাত মাস। গতকাল শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা আবারও তাঁর গোয়ালঘরের দরজার তালা লাগানোর শিকল কেটে বাছুরসহ গাভিটি চুরি করে নিয়ে গেছে।

লাকি রানীর বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে। তাঁর স্বামী প্রশান্ত দে প্রায় চার বছর আগে হঠাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। লাকির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রিয়া রানী দে স্থানীয় তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। ছোট মেয়ে রুহি রানী দে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন লাকি। পাঁচটি গরু লালন-পালন করছিলেন। গরু বিক্রি করে সংসার আর দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাবেন ভেবেছিলেন। একটি গরু বিক্রিও করেন। এরই মধ্যে গত মার্চ মাসে বাকি চারটি গরু চুরি হয়ে যায়।

আজ শনিবার বিকেলে সরেজমিনে লাকির বাড়িতে গেলে তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে জেগে দেখেন, গোয়ালঘরের দরজায় তালা লাগানোর শিকল কাটা। ভেতরে গরু–বাছুর কোনোটাই নেই। জুড়ী থানার পুলিশের এক কর্মকর্তার মুঠোফোনের নম্বর ছিল তাঁর কাছে। ওই নম্বরে কথা বলে তাঁকে ঘটনাটি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাকি রানী বলেন, ‘গাইটা (গাভি) পাইয়া মনে কিছু শান্তি ফিরিয়া আইছিন। একটা বাছুরও পাইলাম। মনে করছিলাম, বাছুরটার বয়স ৯-১০ মাস হইলে বিক্রি করি দিমু। ৫০ হাজার টাকা লোন (ঋণ) করছিলাম বেশ আগে। ২০-২৫ হাজার টাকা পরিশোধের বাকি। বাছুর বিক্রি করে এই টাকাটা পরিশোধ করার চিন্তাভাবনা করছিলাম। চোর আমারে আবার পথে নামাই দিল। কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে?’

এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি লাকি। তিনি বলেন, ‘আগেরবার চুরির পরেও পুলিশরে জানাইয়া কোনো লাভ হইছে না। খামাখা করিয়া লাভ কিতা হইব? তবে কাইল (শুক্রবার) খবর জানানির পর তারা (পুলিশ) আইয়া খোঁজাখুঁজি করছে, চেষ্টা করছে।’

লাকি বলেন, ‘সংসারের নানা খরচ আছে। মেয়েরার লেখাপড়ায়ও খরচ লাগে। এইটা তো চালানি লাগব। এসএসসি পাসের পর আমার বিয়া হই গেছে। ৩-৪ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি পাইলে করতাম। কিন্তু এসএসসি পাসে তো চাকরি পাওয়াও কঠিন। কিতা করতাম, কিলা চলতাম—এইটাই খালি ভাবি। ঘরে বেকার বসি থাকলে সংসার চলব কেমনে?’

আরও পড়ুনশূন্য গোয়ালের সামনে কাঁদতে কাঁদতে লাকী রানী বললেন, ‘চোরে মরা মানুষরে মারিয়া গেল’০৩ মার্চ ২০২৫

জুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ মিয়া বলেন, খবর পেয়ে তিনিসহ থানার আরেক এসআই মুজিবুর রহমান লাকি রানীর বাড়িতে যান। খোঁজাখুঁজি করেও চুরি হওয়া গরু ও বাছুরের সন্ধান মেলেনি। তবে তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ