বাউফলে সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন, যুবদল নেতাকে শোকজ
Published: 10th, April 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফলে এক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন হয়। এদিকে সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ওই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
যুবদলের ওই নেতার নাম মো.
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. জলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন, বাউফল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক জি এম মিলন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় যুবদল নেতা হুমায়ুন কবিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এদিকে হুমকির ঘটনায় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে যুবদল নেতা হুমায়ুন কবিরকে সশরীর উপস্থিত হয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলামের সামনে মৌখিক ও লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার বাউফল পৌরসভার পশ্চিম বাউফল নূরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন একটি ভবনের অনিয়মের বিষয়ে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করতে যান বাউফল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানসহ কয়েকজন সাংবাদিক। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে যুবদল নেতা হুমায়ুন কবির মুঠোফোনে সিদ্দিকুরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। সাংবাদিক ও যুবদল নেতার মুঠোফোনে কথোপকথনের অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরও যুবদল নেতা হুমায়ুন কবির দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। অনেক অসৌজন্যমূলক ও অশালীন আচরণ করেন। তিনি এ বিষয়ে তাঁর ইউনিটির সদস্যদের সঙ্গে জরুরি সভা করে রাতেই সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
জানতে চাইলে হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মুঠোফোন থেকেই কথা হয়েছে। তবে তিনি হুমকি দেননি। তাঁর মুঠোফোন দিয়ে তাঁর বন্ধু সোহেল যিনি কাজের ঠিকাদার, তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন। এ ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন ট র স য বদল ন ত য বদল র র রহম ন ঘটন য় ব উফল
এছাড়াও পড়ুন:
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ
জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।”
চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।
২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা