বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) কেন্দ্রে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদের আওতাধীন বিভিন্ন ভবন, ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে অবস্থিত স্কুল ও কলেজ মিলিয়ে মোট ২২টি অঞ্চলের ২৪৬টি কক্ষে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

বাকৃবি কেন্দ্রের পরীক্ষায় মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৬৬৫ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ১১ হাজার ৫১১ জন পরীক্ষার্থী। উপস্থিতির হার দাঁড়ায় ৯০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

পরীক্ষা চলাকালীন বিভিন্ন কেন্দ্রের কক্ষ পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এ.

কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. শহীদুল হক, রেজিস্ট্রার ও কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব কৃষিবিদ মো. হেলাল উদ্দীন, প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবদুল আলীম, নিরাপত্তা শাখার পরিচালক অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম, সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শন শেষে উপাচার্য বলেন, ‘অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনার কথা জানা যায়নি। অন্যান্য কেন্দ্রের বিষয়েও খোঁজ নিয়েছি। সারা বাংলাদেশেই সুশৃঙ্খলভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ১৫ এপ্রিল পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।’

আরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদনের সময় আবার বৃদ্ধি, ১০০ নম্বরের এমসিকিউ, মেধাতালিকা ২০০ নম্বরে০৯ এপ্রিল ২০২৫

ভবিষ্যতে বাকৃবি কৃষি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘বাকৃবি এ বছরই কৃষি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার সব প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু সরকারের অনুরোধকে সম্মান জানিয়ে এবং দেশের পরিস্থিতিতে বাস্তবতাকে স্বীকার করে বাকৃবি এ বছর কৃষি গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত থেকেছে। ভবিষ্যতেও যদি এ ধরনের অনুরোধ আসে, তাহলে বাকৃবির হাতে ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব দিতে হবে। গুচ্ছে যদি থাকতেই হয় তাহলে আগামী পাঁচ বছর বাকৃবিকে ভর্তি পরীক্ষার নেতৃত্ব দিতে হবে। আমরা আর কোনোভাবেই পরীক্ষা বা প্রশ্নপত্রের মানে ছাড় দেব না।’

ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মান নিয়ে সন্তুষ্ট পরীক্ষার্থীরাও। তাঁরা জানিয়েছেন, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের প্রশ্ন ছিল অনেকটাই মানসম্মত। তবে শর্ট সিলেবাসের বাইরেও কিছু প্রশ্ন এসেছে বলে মন্তব্য করেন কয়েকজন।

নেত্রকোনা থেকে ছোটবোনকে পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসেছিলেন আয়েশা। তিনি বলেন, ‘গুচ্ছ পদ্ধতি থাকার কারণে নিজ এলাকাতেই পরীক্ষার কেন্দ্র বেছে নেওয়ার সুযোগ হয়েছে। এতে যাতায়াতের যেমন সুবিধা হয়েছে, তেমনি খরচও কমে গেছে।’

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় সারা দেশে মোট ৩ হাজার ৮৬৩টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেন ৯৪ হাজার ২০ জন শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৯টি কেন্দ্র এবং ১৩টি উপকেন্দ্রে একযোগে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক আসনসংখ্যা হলো—বাকৃবিতে ১১১৬, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩৫, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০৫, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭৫, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৮০, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪২৩, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৯ এবং কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০টি।

আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৪ কোর্সে মাস্টার্স, ডিগ্রি পাসেও আবেদন৭ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ত পর ক ষ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ