চট্টগ্রামে ২০ সংগঠনকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানমঞ্চে তুলতে প্রশাসনের নিষেধ
Published: 13th, April 2025 GMT
‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ অভিযোগ তুলে প্রায় ২০টি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ডিসি হিলের পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মঞ্চে তুলতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসন থেকে সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সংগঠকদের কাছে এই তালিকা পাঠানো হয়। পরে ফোন করে তালিকাভুক্ত সংগঠনগুলোকে আগামীকাল সোমবারের অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ার জন্য বলা হয়।
এর আগে সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে সম্মিলিত বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন মঞ্চ নামে একটি সংগঠন মানববন্ধন করে। ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার চিহ্নিত দোসরদের নেতৃত্বে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান উদ্যাপন আয়োজনের প্রতিবাদে’ এই মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মূলত জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস), বিএনপির সহযোগী সংগঠন মিলে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক বরাবরে দেওয়া স্মারকলিপিতে এই সংগঠনগুলোকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনের বিষয়ে জাসাস চট্টগ্রামের সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ (শিপন) প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের দোসররা নববর্ষ অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। আমরা এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছি। ডিসিকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি। তারা নববর্ষের অনুষ্ঠান করতে পারবে না।’
সংগঠনগুলোর মধ্যে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, নরেন আবৃত্তি একাডেমি, খেলাঘর, রক্তকরবী, ওডিসি অ্যান্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট, স্কুল অব ওরিয়েন্টাল ড্যান্স, ঘুঙুর নৃত্য একাডেমি অন্যতম।
ডিসি হিলে আগামীকাল সকাল সাড়ে ৬টা থেকে নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এখানে প্রায় ৫৫টি সংগঠন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার জন্য নাম নিবন্ধন করেছে। শুরু থেকে ডিসি হিলে অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়েও দেনদরবার করতে হয় অনেক। এখন নতুন করে ২০টি সংগঠনকে বাদ দিতে বলায় বিপাকে পড়েছেন আয়োজকেরা।
সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সমন্বয়ক সুচরিত দাশ আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার আমাকে একটা তালিকা পাঠান। পরে ফোন দিয়ে বলা হয় এই সংগঠনগুলোকে মঞ্চে তোলা যাবে না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তারা নাকি ফ্যাসিস্টের দোসর।’
সুচরিত দাশ আরও বলেন, ‘স্টাফ অফিসারকে আমরা জানিয়ে দিয়েছি কোনো সংগঠনকে বাদ দিতে আমরা পারব না। প্রয়োজনে ডিসি হিলের অনুমতি বাতিল করে চিঠি দিয়ে দিক আমাদের। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাকে মঞ্চে তুলব না। কিন্তু সংগঠন বাদ দিতে পারব না।’
জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার মো.
সহকারী কমিশনার শাহীদ ইশরাক প্রথম আলোকে বলেন, নাগরিক কমিটি, রাজনৈতিক দলসহ সুশীল সমাজ থেকে কিছু সংগঠনের বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। তাদের অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধনও হয়েছে। তাদের একটি তালিকা আয়োজকদের দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা উদীচী কীভাবে ফ্যাসিস্টের দোসর হলো এমন এক প্রশ্নে শাহীদ ইশরাক বলেন, ‘আসলে বিষয়টা বিব্রতকর। আমরা নানামুখী ঝামেলায় আছি।’
তবে বর্ষবরণের অপর অনুষ্ঠান সিআরবির শিরীষতলার আয়োজকদের কাছে কোনো সংগঠনের তালিকা পাঠানো হয়নি বলে জানা গেছে। এই সংগঠনগুলোর অনেকে ওখানেও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অন ষ ঠ ন স গঠনগ ল নববর ষ স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ১৫ দফা দাবি
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে।
১০ ডিসেম্বর (আজ বুধবার) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। এ উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে মানবাধিকার সংগঠনটি। এ সময় জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগঠনটি ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে।
কর্মসূচিতে অংশ নেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাঁদের পরিবার এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘স্পিক আপ’ প্রকল্পের তরুণেরা। এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের এ দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে স্বীকৃত হয়, মানবাধিকার সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। জন্মস্থান, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস, অর্থনৈতিক অবস্থা কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে মানবাধিকার সর্বজনীন ও সবার জন্য সমান। প্রত্যেক মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের বাইরে গিয়েও প্রতিদিনই মানবাধিকার বিষয়ে জাগ্রত ও সোচ্চার থাকতে চাই। আইন ও সালিশ কেন্দ্র কখনো মানবাধিকার বিষয়ে কারও কাছে মাথা নত করেনি, কারও সঙ্গে আপস করেনি। যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, সেখানেই আইন ও সালিশ কেন্দ্র সব সময় সোচ্চারভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছে।’
নারী অধিকারের বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংস্থার এই উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘আইনের ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে কিন্তু নারী ও শিশুর প্রত্যয়ী সহিংসতাগুলো বন্ধ হয়নি। এটি নিয়েও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। আজ বুধবার, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে