ডলফিনের বুদ্ধি, সামাজিক আচরণ ও মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ইতিহাস বেশ পুরোনো। ডলফিনের মস্তিষ্ক অন্য অনেক প্রাণীর তুলনায় বেশ বড় ও জটিল। ডলফিনের সেরেব্রাল করটেক্স বা মস্তিষ্কের বহিরাবরণ ভাঁজযুক্ত যা জাইরিফায়েড নামে পরিচিত। মস্তিষ্কের এই গঠনের কারণে ডলফিন জটিল চিন্তাভাবনা, সমস্যা সমাধান ও যোগাযোগ করতে পারে। আর তাই দেখতে ভীষণ আদুরে ডলফিনকে সমুদ্রের সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী বলা হয়।

মানুষ ও অন্যান্য উচ্চ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রাণীর মস্তিষ্কে স্পিন্ডল নিউরন নামের বিশেষ কোষ রয়েছে। এই কোষ আবেগ, সামাজিক আচরণ, বিচার ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সঙ্গে যুক্ত। ডলফিনের মস্তিষ্কেও এই স্পিন্ডল নিউরন রয়েছে। এ ছাড়া ডলফিনের শ্রবণ ও শব্দ প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতা বেশ শক্তিশালী। শুধু তা–ই নয়, দলবদ্ধভাবে শিকার করার পাশাপাশি একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারে ডলফিন।

আরও পড়ুনডলফিন কি সত্যিই নিজেদের নাম ধরে ডাকতে পারে ২৩ জানুয়ারি ২০২৪

ডলফিন খেলাধুলাপ্রিয় ও কৌতূহলী প্রাণী। তারা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন বস্তু নিয়ে খেলা করে। এমন আচরণ ডলফিনের সামাজিক বন্ধনকে দৃঢ় করে এবং নতুন দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করে। ডলফিনরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য শিস, ক্লিক আর ব্রাস্ট পালস কৌশল ব্যবহার করে থাকে। ক্লিকের মাধ্যমে মূলত ইকো লোকেশন বা প্রতিধ্বনি দিয়ে দিক নির্ণয় করে শিকার খুঁজে বের করে ডলফিন।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, প্রতিটি ডলফিন স্বতন্ত্র শিস বাজাতে পারে, যা অনেকটা মানুষের নামের মতো কাজ করে। তারা একে অপরকে শনাক্ত ও সম্বোধন করতে এই শিস ব্যবহার করে। এমনকি মা ডলফিন বাচ্চাকে তার নিজস্ব শিস শিখিয়ে দেয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে ডলফিনরা বহু বছর পরও তাদের পুরোনো সঙ্গীদের শিস মনে রাখতে পারে। গুগলের গবেষণা প্রকল্প ডলফিনগামা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ডলফিনের ভাষার কাঠামো বোঝার চেষ্টা করছে।

সূত্র: ডলফিন ওয়ে ও উইকিপিডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ডলফ ন র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা
  • এক শো, দুই তারকা
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের