‘বন্ধুদের সঙ্গে টেকনাফ ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে রাতে থাকার পরিকল্পনা ছিল, তাই আশপাশে ঘুরে দেখছিলাম আমি। হঠাৎ কয়েকজন এসে আমাকে ধরে নিয়ে যান। এরপর একটা অন্ধকার রুমে বন্দী করে রাখেন। সেখানে আটকে রেখে পরিবারের কাছ থেকে এক লাখ আদায় করেন। পরে আমাকে নৌকায় মিয়ানমার নিয়ে যান। সেখানে পাঁচ থেকে সাত দিন রাখার পর একটি মালয়েশিয়াগামী নৌকায় তুলে দেওয়া হয়। তবে যাওয়ার পথে মিয়ানমারে আটক হই আমরা।’

কথাগুলো বলছিলেন মো.

নজরুল ইসলাম। নিজের হিসাবে তাঁর বয়স ২০ পেরিয়েছে আগেই। তবে সরকারি নথিপত্রে তাঁর বয়স লেখা ১৭। কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা তিনি। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০২৩ সালের জুনে মিয়ানমারে আটক হন নজরুলসহ ২০ বাংলাদেশি। গতকাল মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন তাঁরা।

এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কথা হয় নজরুলের সঙ্গে। এর আগে সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস সমুদ্র অভিযানে চট্টগ্রামের ঈশা খান জেটিতে নামেন এই ২০ কিশোর-তরুণ। সন্ধ্যায় তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

২২ মাস কারাভোগ করে ফিরেছেন এই ২০ জন। পরিবার থেকে দূরে প্রায় দুই বছর অন্য দেশের কারাগারে থাকতে হয়েছে তাঁদের। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে এই ২০ বাংলাদেশিকে। যদিও এই আনুষ্ঠানিকতা পরে পেছানো হয় আরও প্রায় এক ঘণ্টা।

সরেজমিন দেখা যায়, দুপুর থেকেই স্বজনেরা অপেক্ষা করছেন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই মাহমুদা খাতুন। তিনি নজরুলের মা। মাহমুদা খাতুন বলেন, টেকনাফে ঘুরতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি নজরুল। এক মাস পর খবর পান ছেলে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। এরপর নেওয়া হয়েছে মিয়ানমারের কারাগারে। পরে আর ছেলের খবর পাননি।

মিয়ানমারের কারাগার থেকে ফেরা ২০ বাংলাদেশিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের উদ্দেশে বাস থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র ক ছ নজর ল

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার