বন্দী করে টাকা আদায়, এরপর তোলা হয় মালয়েশিয়াগামী নৌকায়
Published: 16th, April 2025 GMT
‘বন্ধুদের সঙ্গে টেকনাফ ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে রাতে থাকার পরিকল্পনা ছিল, তাই আশপাশে ঘুরে দেখছিলাম আমি। হঠাৎ কয়েকজন এসে আমাকে ধরে নিয়ে যান। এরপর একটা অন্ধকার রুমে বন্দী করে রাখেন। সেখানে আটকে রেখে পরিবারের কাছ থেকে এক লাখ আদায় করেন। পরে আমাকে নৌকায় মিয়ানমার নিয়ে যান। সেখানে পাঁচ থেকে সাত দিন রাখার পর একটি মালয়েশিয়াগামী নৌকায় তুলে দেওয়া হয়। তবে যাওয়ার পথে মিয়ানমারে আটক হই আমরা।’
কথাগুলো বলছিলেন মো.
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কথা হয় নজরুলের সঙ্গে। এর আগে সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস সমুদ্র অভিযানে চট্টগ্রামের ঈশা খান জেটিতে নামেন এই ২০ কিশোর-তরুণ। সন্ধ্যায় তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
২২ মাস কারাভোগ করে ফিরেছেন এই ২০ জন। পরিবার থেকে দূরে প্রায় দুই বছর অন্য দেশের কারাগারে থাকতে হয়েছে তাঁদের। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে এই ২০ বাংলাদেশিকে। যদিও এই আনুষ্ঠানিকতা পরে পেছানো হয় আরও প্রায় এক ঘণ্টা।
সরেজমিন দেখা যায়, দুপুর থেকেই স্বজনেরা অপেক্ষা করছেন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই মাহমুদা খাতুন। তিনি নজরুলের মা। মাহমুদা খাতুন বলেন, টেকনাফে ঘুরতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি নজরুল। এক মাস পর খবর পান ছেলে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। এরপর নেওয়া হয়েছে মিয়ানমারের কারাগারে। পরে আর ছেলের খবর পাননি।
মিয়ানমারের কারাগার থেকে ফেরা ২০ বাংলাদেশিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের উদ্দেশে বাস থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র র ক ছ নজর ল
এছাড়াও পড়ুন:
বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম
ভারতের উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে এক তরুণ তাঁর বোনকে খুন করে লাশ একটি বস্তায় ভরে রেখেছিলেন। ওই বস্তা নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকে ভেতরে কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘এর মধ্যে গম আছে।’
উত্তর প্রদেশের ৩২ বছর বয়সী রাম আশিস নিষাদ তাঁর ১৯ বছর বয়সী বোন নীলমকে খুন করেন।
ওই এলাকায় একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। আশিসের বাবা চিংকু নিষাদ সেখানে সরকারের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ছয় লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, ওই ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া অর্থের ভাগাভাগি নিয়েই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই রুপি বোনের বিয়েতে খরচ করা হবে জেনে রাম আশিস ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাম আশিস একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে বোন নীলমকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর নীলমের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙে ফেলে দেহটি একটি বস্তায় ভরেন। পরে বাইকের সঙ্গে বেঁধে তিনি গোরখপুর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে কুশীনগরের একটি আখখেতে বস্তাটি ফেলে আসেন।
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে অভিযুক্ত
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে রাম আশিসকে একটি বস্তা নিয়ে যেতে দেখা যায়। সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই বস্তার মধ্যে ছিল তাঁর বোনের লাশ। কুশীনগর যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁকে থামিয়ে বস্তায় কী আছে জানতে চেয়েছিল।
রাম আশিস পুলিশকে জানান, বস্তায় গম আছে। পরে আবার তিনি কুশীনগরের দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান। সেখানে তিনি আখখেতে নীলমের লাশ ফেলে দেন।
এরপর নীলমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর বাবা প্রথমে ধরে নেন, মেয়ে ছটপূজার জন্য কোথাও গেছে। তবে প্রতিবেশীরা যখন জানান, সোমবার রাম আশিস একটি বস্তা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তখন পরিবারের সন্দেহ হয় এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।
পুলিশ প্রথমে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ও তদন্ত শুরু করে। গত মঙ্গলবার নীলমের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়, রাম আশিসই নীলমকে খুন করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাম আশিস প্রথমে কিছু না জানার ভান করেন। তবে পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পরে বোনকে খুনের কথা স্বীকার করেন। গত বুধবার রাতে আখখেত থেকে নীলমের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
আগামী জানুয়ারি মাসেই নীলমের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের সবকিছু ঠিকঠাকও হয়ে গিয়েছিল।
রাম আশিসের বাবা চিংকু অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই ছয় লাখ রুপি মেয়ের বিয়েতে খরচ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ কারণে রাম ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। কারণ, তিনি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই রুপির ভাগ চেয়েছিলেন।