জাতীয় ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াত ঐক্যবদ্ধ থাকবে
Published: 19th, April 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াত যেভাবে গত ১৬ বছর নির্যাতন সহ্য করে আন্দোলনের মাধ্যমে হাসিনাকে উৎখাত করেছে, সেভাবেই সামনে যে কোনো জাতীয় ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ১৫ বছর আমাদের নেতাদের হত্যা করে হাসিনা ও তাঁর সহযোগীরা দেশকে রক্তের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছেন। তাদের বিচার হতে হবে। বিচার দৃশ্যমান করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে এবং জামায়াতে ইসলামী সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল জানান, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা স্থানান্তরের একটি ডেডলাইন ইতোমধ্যে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ সময়ের মধ্যে সব সংস্কার করে, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
এ ছাড়া গতকাল কুমিল্লার লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা ও লাকসাম পৌরসভার কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন গোলাম পরওয়ার। এ সময় তিনি বলেন, দেশে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর মতো নির্বাচন জনগণ হতে দেবে না। প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ন্যূনতম সংস্কার ও গণহত্যার দায়ে সহযোগীসহ শেখ হাসিনার বিচার দ্রুত দৃশ্যমান করুন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের অবস্থানের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। কিন্তু আমিরে জামায়াত বৃহস্পতিবারও প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনি ২০২৬ সালের জুন অথবা চলতি বছরের ডিসেম্বরের যে সময়সীমা দিয়েছেন, তার মধ্যে নির্বাচন করুন। এ সময়ের মধ্যে সংস্কার ও মানবতাবিরোধীদের বিচার করুন। আমরা নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত রয়েছি।’
লাকসাম পৌর জামায়াতের আমির জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারির সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মা’ছুম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবদুর রব, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমির মুহাম্মদ শাহজাহান, কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর পিপি মুহাম্মদ বদিউল আলম সুজন প্রমুখ।
পরে গোলাম পরওয়ার আগামী সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৮ আসনে অধ্যক্ষ শফিকুল আলম হেলাল, কুমিল্লা-৯ আসনে ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ গ ল ম পরওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।