চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম নগর শাখার আমির শাহজাহান চৌধুরী। আজ রোববার বেলা ১১টায় চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির কাছে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে এবং বন্দরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার দাবিতে নগর জামায়াতে ইসলামী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এতে লিখিত বক্তব্যে চট্টগ্রাম নগর আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বিদেশি বিনিয়োগ চাই। দেশের উন্নয়নের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ অপরিহার্য। কিন্তু সেই বিনিয়োগ হোক গ্রিন ফিল্ডে। যেমন দেশের বিভিন্ন স্থানে ইকোনমিক জোনগুলোতে বিদেশিরা এসে বিনিয়োগ করছে। কিন্তু আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরিকৃত টার্মিনাল, যেখানে কোনো বিনিয়োগের দরকার নেই; কেন বিদেশিদের দেওয়া হবে তা বোধগম্য নয়।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই টার্মিনালের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর বিশাল রাজস্ব আয় করছে। চট্টগ্রাম বন্দরের মোট হ্যান্ডলিংয়ের ৫৫ শতাংশ এনসিটি টার্মিনালে হয়। চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক ও উন্নতমানের নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয় করে। যার বর্তমান বাজারমূল্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এই টার্মিনালে কোনো ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নগরের নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সেক্রেটারি মুহাম্মদ নুরুল আমিন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি খাইরুল বাশার, মোহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ, মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান হেলালী, এ কে এম ফজলুল হক প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে পাঁচ জেটির এই টার্মিনাল নির্মাণে বন্দরের ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৪৬৯ কোটি টাকা। তবে বারবার আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের হস্তক্ষেপে টার্মিনালটি আট বছরেও পুরোপুরি চালু করা যায়নি। সব মিলিয়ে এই টার্মিনালে জেটি ও যন্ত্রপাতি খাতে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেরা সব বিনিয়োগের পর এখন দেশি অপারেটর দিয়ে নিউমুরিং টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনা করছে। তবে টার্মিনালে দেশি বিনিয়োগের পর নতুন করে বিদেশি অপারেটরের হাতে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি টার্মিনালের মধ্যে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) সবচেয়ে বড়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই ট র ম ন ল ম হ ম মদ ইসল ম এনস ট

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ‍্যাদেশে পরিবর্তন ঘটিয়ে আমলাতন্ত্রের করায়ত্ত করা হয়েছে: টিআইবি

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ‍্যাদেশটির ওপর ‘চাপিয়ে দেওয়া’ বিধান, বিশেষ করে বাছাই কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত বাতিল করে অনতিবিলম্বে নতুন করে অধ‍্যাদেশটি ঢেলে সাজাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ‍্যাদেশে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মৌলিক পরিবর্তন ঘটিয়ে কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া আমলাতন্ত্রের করায়ত্ত করা হয়েছে। এর ফলে সরকারি প্রভাবের বাইরে থেকে কমিশন গঠনের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ হয়েছে। এতে টিআইবি গভীর উদ্বিগ্ন ও হতাশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বহুল প্রত্যাশিত সংস্কারপ্রক্রিয়াকে কীভাবে আমলাতান্ত্রিক অনমনীয়তা, এমনকি অন্তর্ঘাতের মাধ্যমে জিম্মি করা হচ্ছে তার উদাহরণ হিসেবে অধ‍্যাদেশ প্রণয়নপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত অংশীজনকে অন্ধকারে রেখে বাছাই কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে শুধু এই প্রক্রিয়ায় সরকারি নিয়ন্ত্রণের কর্তৃত্ববাদী চর্চা অব্যাহত রাখার জন‍্য; যা সংস্কারবিরোধী আমলাতন্ত্রের স্বার্থান্বেষী মহলের কাছে সরকারের আত্মসমর্পণের বিব্রতকর দৃষ্টান্ত বলেও মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।

গত ৯ নভেম্বর জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করা হয়। বিষয়টি উল্লেখ করে বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশের পর টিআইবিসহ সব অংশীজন এতে কিছু দুর্বলতা সত্ত্বেও আশান্বিত হয়েছিল, আমলাতন্ত্রের হাতে জিম্মিদশা কাটিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জনপ্রত‍্যাশা ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গঠিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু ঠিক এক মাসের মধ্যে ৮ ডিসেম্বর যে বাছাই কমিটি এই সম্ভাবনা বাস্তবায়নের মূল ভিত্তি হতে পারত, সেই কমিটিকেই সরকারি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। বাছাই কমিটিতে এই পরিবর্তন বস্তুত ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মানবাধিকার কমিশনসহ বাংলাদেশের অন‍্য সব কমিশনের অকার্যকরতার পেছনে যেভাবে সরকারি প্রভাব দীর্ঘকাল যাবৎ ভূমিকা রেখেছে, সেই একই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার ষড়যন্ত্রের একটি দৃষ্টান্তমাত্র, কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।’

আরও পড়ুনদেশে মানবাধিকার কমিশন এখনো অকার্যকর১০ ডিসেম্বর ২০২৫

বাছাই কমিটির ওপর আমলাতান্ত্রিক জবরদখল ও সরকারের তা মেনে নেওয়া চরম হতাশাজনক উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এই সংশোধনের মাধ্যমে নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর আচরণ প্রতিহত করার লক্ষ‍্যে জাতীয় প্রতিরোধব‍্যবস্থা বিভাগ প্রতিষ্ঠার যে প্রশংসনীয় বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে, তার এবং সার্বিকভাবে এ আইনের ভিত্তিতে গঠিতব‍্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা ও কার্যকরতার সব সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করার জন‍্য শুধু বাছাই কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের অন্তর্ভুক্তিই যথেষ্ট।’

এ ছাড়া কমিশনের আদেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে গৃহীত পদক্ষেপ কমিশনকে অবহিত করার বাধ্যবাধকতার পরিবর্তে ‘অবহিত করা যাইবে’ প্রতিস্থাপন করার মতো আরও কিছু বিধান সংযোজন করার ফলে অধ‍্যাদেশটির মাধ্যমে প্রত‍্যাশিত সব ইতিবাচক সম্ভাবনা পদদলিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইফতেখারুজ্জামান।

অনতিবিলম্বে আমলাতন্ত্রের অন্তর্ঘাতমূলক সংস্কারবিরোধী চক্রের কাছে আত্মসমর্পণের বিব্রতকর অবস্থান থেকে সরে এসে নতুন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ‍্যাদেশটি ঢেলে সাজানোর জন‍্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।

টিআইবি বলেছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠনের জন‍্য ৬২ নম্বর অধ্যাদেশ, যা ৯ নভেম্বর ২০২৫ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়, তার ৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত বাছাই কমিটিতে আমলাতন্ত্রের কোনো প্রতিনিধি ছিল না, যা মানবাধিকার কমিশনের অকার্যকরতার দীর্ঘদিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সরকারসহ সব অংশীজনের স্বীকৃতির পরিচায়ক। অথচ ৮ ডিসেম্বরের গেজেটে প্রকাশিত সংশোধিত অধ্যাদেশ ৭৪-এ বাছাই কমিটিতে আমলাতান্ত্রিক আধিপত্য নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে এ অধ‍্যাদেশ প্রণয়নপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব অংশীজনকে অন্ধকারে রেখে একতরফাভাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুনজাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনের আহ্বান টিআইবির০২ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনেকে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে, ষড়যন্ত্র ভয়াবহ রূপ নিতে পারে: তারেক রহমান
  • ওসমান হাদীর উপর গুলির ঘটনায় মাসুদুজ্জামানের গভীর নিন্দা 
  • জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ‍্যাদেশে পরিবর্তন ঘটিয়ে আমলাতন্ত্রের করায়ত্ত করা হয়েছে: টিআইবি
  • ওসমান হাদিকে গুলি: সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার সিদ্ধান্ত
  • হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: সালাহউদ্দিন 
  • ষড়যন্ত্র ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে দলগুলোর সাড়া
  • জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান
  • ইবিতে হাদি হামলায় মহাসড়ক অবরোধ
  • ষড়যন্ত্র রুখতে পারে গণতন্ত্রের প্র্যাকটিস: তারেক
  • যে সরকার মামলা প্রত্যাহার করেছে, তাকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছি, এটা অবিশ্বাস্য: আদালতে শওকত মাহমুদ