গাজীপুরে বনভূমি থেকে ৫৬টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
Published: 26th, April 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে সংরক্ষিত বনভূমি জবরদখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে ৫৬টি বসতবাড়ি ও অন্যান্য অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
অভিযানটি পরিচালনা করেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ। এতে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও বন বিভাগের চার শতাধিক সদস্য অংশ নেন।
উচ্ছেদকৃত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অনেক ঘরবাড়ি। অসহায় মানুষের চোখে-মুখে হতাশা, শিশুরা কাঁদছে, কেউ খোলা আকাশের নিচে বসে আছে।
গাজীপুরের শ্রীপুরে সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ অভিযান
উপজেলা প্রশাসন জানায়, ৫ আগস্টের পরপরই শ্রীপুর রেঞ্জের সাতখামাইর বিটের তালতলী পেলাইদ ও সাইটালিয়া গ্রামে অবৈধভাবে বনভূমি দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ শুরু হয়। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.
তবে উচ্ছেদ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। অনেকের অভিযোগ, পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা ছাড়াই তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।
পোশাক শ্রমিক আকলিমা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “গার্মেন্টসে দিনরাত পরিশ্রম করে যা উপার্জন করেছি, তা দিয়েই একটি ঘর তুলেছিলাম। আজ সব শেষ। আমার মতো গরিবের ঘরটাই চোখে পড়ল?”
শ্রীপুরে সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
নূরুল ইসলাম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। নিজের কোনো জমি নেই। কষ্ট করে একটা ঘর বানিয়েছিলাম। আমাদের আশপাশে তো কোনো গাছপালা নেই, বনই নেই। তাহলে কেন আমাদের ঘর ভাঙা হলো?”
এ বিষয়ে ইউএনও সজীব আহমেদ বলেন, “বনভূমি রক্ষায় আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। ৫ আগস্টের পর থেকে এই এলাকায় পরিকল্পিতভাবে বনভূমি দখলের চেষ্টা চলছিল। আজকের অভিযানে আমরা সেসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি।”
ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বশিরুল আল মামুন বলেন, “৫ আগস্টের পর একটি মহল বনভূমি দখল করে হাজার হাজার স্থাপনা নির্মাণ করেছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সব ভেঙে বনভূমি মুক্ত করব।”
ঢাকা/রফিক/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুরে বেশি দামে সার বিক্রি: ২ ব্যবসায়ীকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা
শেরপুরে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করায় দুই সার ব্যবসায়ীকে প্রায় সোয়া লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেরপুর পৌর শহরের আখের মাহমুদ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় এক বিএডিসি সার ডিলারকে ১ লাখ টাকা ও লাইসেন্সবিহীন সার বিক্রি করায় আরেক ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরো পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে মহাসড়কে ১০০০ স্থাপনা উচ্ছেদ
ঝিনাইদহে ২৫০টি অবৈধ জাল জব্দ, বাঁধ উচ্ছেদ
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া আদালত পরিচালনা করেন। তিনি জরিমানার তথ্য জানান।
ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া বলেন, ‘‘সার বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই অসাধু ব্যাবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। কৃষকের উপর জুলুম মেনে নেওয়া হবে না।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের বিভিন্ন সোর্স এ সব অসাধু ব্যবসায়ীদের খোঁজখবর রাখছেন। যার বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’’ জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
অভিযানকালে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসলিমা খানম নীলু, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে কৃত্রিম সার সংকট দেখিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করছেন। বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের আখের মাহমুদ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে বেশি দামে সার বিক্রির প্রমাণ পেয়ে বিএডিসি সার ডিলার মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। একইসঙ্গে লাইসেন্সবিহীন সার বিক্রয় করায় একই বাজারের কীটনাশক বিক্রেতা শিশির এন্টারপ্রাইজকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসলিমা খানম নীলু বলেন, ‘‘আমন মৌসুসে সারের দাম ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষায় আমরা নিয়মিত অভিযান করছি। আমরা যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি, সেখানে অভিযান পরিচালনা করছি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রির সুযোগ নেই।’’
ঢাকা/তারিকুল/বকুল