অসীমে শূন্যের ভেতর উড়ে গেলেন কবি দাউদ হায়দার
Published: 27th, April 2025 GMT
নির্বাসিত জীবন। ফেরার আকাঙ্ক্ষা ছিল। তা আর হলো না। বিদেশের মাটিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। অসীমে শূন্যের ভেতর উড়ে চলে গেলেন কবি দাউদ হায়দার। স্থানীয় সময় গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় জার্মানির রাজধানী বার্লিনের এক প্রবীণ নিরাময়কেন্দ্রে তাঁর মৃত্যু হয়। কবির অনুজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলার অধ্যাপক আরিফ হায়দার সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দাউদের জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, পাবনায়। সত্তর দশকের শুরুতে তাঁর কাব্যপ্রতিভার উন্মেষ। ১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক সংবাদে তাঁর দীর্ঘ কবিতা ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ প্রকাশিত হয়। এরপর তিনি ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি ও সংগঠনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন।
ঢাকার এক কলেজ শিক্ষকের মামলায় ১১ মার্চ গ্রেপ্তার হন কবি। কিছু দিন পর মুক্ত হন। ১৯৭৪ সালের ২১ মে তাঁকে উড়োজাহাজে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের সহায়তায় পরে জার্মানিতে বসবাস শুরু করেন। দেশভ্রমণে পাসপোর্টের পরিবর্তে জাতিসংঘের বিশেষ ট্র্যাভেল পাস ব্যবহার করতেন। ১৯৮৯ সাল থেকে জার্মানিতে সাংবাদিকতা করতেন। শেষ বয়সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত কবিতা রচনায় ছেদ পড়েনি। সমকালে ‘ইউরোপের চিঠি’ নামে নিয়মিত কলাম লিখতেন।
তাঁর মৃত্যুতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলা ভাষাভাষীরা শোক জানিয়েছেন। আরেক কবি ফরিদ কবির সমকালকে বলেন, ‘ভাবা যায়, কবিতার একটা পঙ্ক্তির জন্য তাঁকে মাত্র ২২ বছর বয়সে দেশছাড়া হতে হয়েছিল! বাকি প্রায় ৫১ বছর কাটাতে হয়েছে প্রবাসে নিঃসঙ্গ!’
তাঁর প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’, ‘সম্পন্ন মানুষ নই’, ‘যে দেশে সবাই অন্ধ’, ‘সংস অব ডেস্পায়ার’, ‘সমস্ত স্তরে ক্ষতচিহ্ন’ উল্লেখযোগ্য।
কবির অনুজ অধ্যাপক আরিফ হায়দার জানান, রাষ্ট্রীয় প্রতিবন্ধকতার কারণে তাঁর মরদেহ এ দেশে আনা সম্ভব না। বার্লিনে সমাহিত করার আইনি প্রক্রিয়া চলছে। সেটা সম্পন্ন হতে দু-একদিন লাগতে পারে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচন সামনে রেখে ৭ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাদে অন্য কোনো নির্বাচনে নিউইয়র্কে এটাই সর্বোচ্চ আগাম ভোট পড়ার ঘটনা। আগামীকাল ৪ নভেম্বর নিউইয়র্ক নগরে মেয়র পদে ভোট গ্রহণ হতে যাচ্ছে।
গতকাল রোববার ছিল আগাম ভোট দেওয়ার শেষ দিন। এদিন প্রায় ১ লাখ ৫১ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। নগরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, আগাম ভোট গ্রহণ শুরুর পর থেকে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ ভোট পড়ার ঘটনা। তা ছাড়া এদিন ৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের উপস্থিতিও বেশি ছিল। এর মধ্য দিয়ে আগাম ভোট দেওয়া ভোটারদের গড় বয়সও কমে এসেছে। গড় বয়স ৫০ বছরে নেমে এসেছে।
আগের সপ্তাহের প্রথম দিকে কম বয়সী ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল। ওই সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৮০ হাজার নিউইয়র্কবাসী ভোট দিয়েছিলেন। তবে গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত এই সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৩৫ বছরের কম বয়সী ১ লাখের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন, যার মধ্যে শুধু গতকাল রোববারই এ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজারের বেশি।
আরও পড়ুনমামদানিকে বারাক ওবামার ফোন, করলেন নির্বাচনী প্রচারের প্রশংসা০২ নভেম্বর ২০২৫নিউইয়র্কে চলতি বছর মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চারগুণের বেশি। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো ও কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে এগিয়ে আছেন।
নিউইয়র্কে চলতি বছর মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চারগুণের বেশি। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো ও কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে এগিয়ে আছেন।নিউইয়র্কে সর্বপ্রথম মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয় ২০২১ সালে। ওই নির্বাচনে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। তবে ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যায়নি। ওই নির্বাচনে এরিক অ্যাডামস তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্লিওয়াকে দ্বিগুণের বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন।
অবশ্য চলতি বছর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের সংখ্যা গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগাম ভোটকে ছাড়াতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১০ লাখ মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তুলনায় মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের বয়স তুলনামূলক কম। এটা অবাক করা বিষয়। কারণ, সাধারণত যারা আগাম ভোট দেন তাঁদের গড় বয়স মোট নিবন্ধিতদের গড় বয়সের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায়ও অনেক বেশি। ওই সময় নিউইয়র্কে প্রায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। সে সময় আগাম ভোট দেওয়া ভোটারের অধিকাংশের বয়স ছিল ৫৫ বছরের বেশি।
চলতি বছরের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায়ও অনেক বেশি। ওই সময় নিউইয়র্কে প্রায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। সে সময় আগাম ভোট দেওয়া ভোটারদের অধিকাংশের বয়স ছিল ৫৫ বছরের বেশি।গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের গড় বয়স ছিল ৫১ বছর। তবে এবার মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটারদের গড় বয়স আরও কমে ৫০ বছরে নেমেছে।