Prothomalo:
2025-11-02@01:07:29 GMT

জামিল স্যার

Published: 28th, April 2025 GMT

জামিল স্যারকে (জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী) আমি ঠিক কবে থেকে চিনি, মনে করতে পারব না। তবে ২০১১ সালে আমার লেখা ৮টি ভ্রমণকাহিনির সংকলন প্রকাশনার উৎসবে প্রধান অতিথি হয়ে যখন অনুষ্ঠানে আসেন, সেদিন তাঁকে আমার সবচেয়ে কাছ থেকে দেখা। এরপর আরও ভালো করে দেখার সুযোগ পেলাম যখন ২০১৬ সালে তাঁকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র বানাতে হুকুম দিল বুয়েট অ্যালামনাই। একুশে পদকপ্রাপ্তির সম্মাননা অনুষ্ঠানে এটা দেখানো হয়। এরপর তাঁকে আরও কয়েকবার আমার ক্যামেরায় নিয়েছি। কখনো তিনি ডেকে নিয়েছেন কোনো কিছু রেকর্ড করতে, কখনোবা অন্যরা বলেছে তাঁর কিছু ধারণ করে দিতে।

বুয়েট অ্যালামনাই একটা বড় রকমের প্রামাণ্যচিত্র আমাকে দিয়ে বানায়। ‘আমাদের বুয়েট, আগামীর বুয়েট’ নামে এই প্রামণ্যচিত্র বানানোর কাজের জন্য প্রায় এক মাস একসঙ্গে কয়েকবার আমাদের বসা হয়েছে। ২০১৬ সালে বুয়েটকাল নামে আমার যে স্মৃতিচারণামূলক বই প্রকাশিত হয়, তার পেছনের ফ্ল্যাপের জন্য তিনি লিখেও দেন। এরপর প্রথম আলো একবার ঢাকার নগরায়ণ বিষয়ে তাঁর একটা সাক্ষাৎকার নিতে আমাকে পাঠায় তাঁর কাছে। সেখানেও তিনি অকুতোভয় অনেক কথা খোলামেলা বলেন। সবশেষে তাঁর সঙ্গে আমার মোলাকাত হয় ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি। সিলেট মহানগরীতে একটা বড় পরিসরের ডিজাইন করেছে আমাদের প্রতিষ্ঠান। সিলেটের মেয়র ঢাকায় এসেছেন এ বিষয়ে তাঁর মতামত নিতে। তিনি ঢাকার সব বড় বড় স্থপতিকে নিয়ে এটা দেখে মতামত দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছিলেন। এ–ই শেষ। আর দেখা হলো না।

২০১১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত কাছাকাছি থেকে তাঁকে যেমন দেখেছি, তাতে আমার যা মনে হয়েছে, তা হলো—

● প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী।

● ছোটবেলায় খেলোয়াড় ছিলেন।

● ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যানুরাগী ছিলেন এবং শেষ বয়সেও প্রতিদিন কিছু না কিছু অকারিগরিবিষয়ক লেখা পড়তেন।

● আগাগোড়া মেধাবী।

● শুধু কারিগরি বিষয়ই নয়, সমসাময়িক যেকোনো বিষয়েই তিনি অগাধ জ্ঞান রাখতেন।

● কোনো বিষয়ে বা কারও সম্পর্কে কথা বলতে গেলে আগে তিনি অনেক হোমওয়ার্ক করে যান।

● তাঁর বন্ধু কেমন আছে জানি না, তবে তাঁর কোনো নিন্দুক আমি খুঁজে পাইনি।

● তাঁর ব্যক্তিগত সততা কখনোই প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুনিনি।

● তাঁর অনেকগুলো কথা আমার কাছে রেকর্ড করা আছে। কথা বলেছিলাম রাজউক, ভূমি ব্যবস্থাপনা আর নগরায়ণ নিয়ে। খুব স্পস্ট কথা বলতেন তিনি।

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষ দিকে নগরাঞ্চলে পানির গতি রোধ করতে পারে, এমন কিছু স্থাপনা থাকতে পারবে না বলে একটা সুপারিশ করেছিলেন। এটা বাস্তবায়নের কথা ছিল রাজউকের। কিন্তু তিনি দেখলেন, রাজউক নিজেই ডেভেলপার হয়ে সেখানে পানির প্রবাহ বন্ধ করে হাউজিং করে ফেলেছে। পরিষ্কারভাবে এটা স্বার্থের সংঘাত। তিনি তখন বলেছিলেন, রাজউক কিন্তু গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন। এখন মন্ত্রী যদি নির্দেশ দেন এটা করেন, তারা করে ফেলে। তাদের হয়তো দ্বিমত ব্যক্ত করার সুযোগ আছে, ক্ষমতা আছে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন—তারা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই চলে।

ভূমিদস্যুদের নিয়েও তাঁর খেদ ছিল। বলেছিলেন, ২০১১ সালে একবার মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ল্যান্ড ডেভেলপারদের বলেছিলেন, ‘আপনারা ভূমিদস্যুরা রাত্রে ঘুমান কীভাবে?’ তার কিছুদিন পর দেখি তিনি অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। আমরা বলেছিলাম, বেআইনিভাবে যেগুলোতে মাটি ভরাট করা হয়েছে, কোনো দালান বানানো হয়নি, সেগুলোতে মাটিটা সরিয়ে ফেললেই হয়। পেশায় আইনজীবী মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বললেন, আমাদের আইনে একটা কথা আছে, ‘একটা অবৈধ শিশু যদি জন্মগ্রহণ করে, তাঁর বেঁচে থাকার অধিকার আছে, তাকে বেচে থাকার সুযোগ দিতে হবে।’ তারপর তো আর এই ড্যাপের বাস্তবায়ন হলো না। ল্যান্ড ডেভেলপারস আর এক্সট্রিমলি পাওয়ারফুল। এদের বিরুদ্ধে কথা বললে জীবনের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হতে পারে।

জামিল স্যার খেদ করে রাজউক নিয়ে বলেছিলেন, টাকাপয়সা বা ক্ষমতার বিনিময়ে যেকোনো কিছুর অনুমোদন আনা যায়। 

দুর্ভাগ্যবশত আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থাও দুর্নীতিগ্রস্ত হচ্ছে, এ অভিযোগ সরকার থেকেই আসছে।

জামিল স্যার নেই আজ পাঁচ বছর। আমাদের রাজউক, আমাদের ভূমিদস্যু— এদের তেমন পরিবর্তন দেখতে পেলে হয়তো জামিলুর রেজা চৌধুরীর আত্মা শান্তি পেত।

শাকুর মজিদ: স্থপতি, লেখক ও নির্মাতা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ছ ল ন মন ত র আম দ র র জউক

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার দেখা পেতে বোমা ছুঁড়ে গ্রেপ্তার প্রেমিক

রাগ করে কথা বন্ধ করেছিল প্রেমিকা। রাগ ভাঙিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে, একটু কথা বলতে ইউটিউব থেকে বোমা তৈরিত কৌশল শিখেছিল প্রেমিক। বোম ফাটার শব্দে যদি প্রেমিকা বেরিয়ে আসে... এই আশায়। এক্সপার্টের মতো বানিয়েও ফেলে বোমা। কিন্তু বোমা ফাটার তীব্র সেই শব্দে আতঙ্কিত হয়ে প্রেমিক ও তার বন্ধুরা পালিয়ে যায় নিজেরাই। 

গত ২৮ অক্টোবর, ছট পূজার রাতে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বৈদ্যবাটি এক আবাসিক এলাকা গভীর রাতে বোমা বিস্ফোরণের তীব্র আওয়াজে কেঁপে উঠে। বোমা মারার সেই ঘটনা দুষ্কৃতী আক্রমণ ভেবে লেগেছিল রাজনৈতিক রং, তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক। হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে খবরের শিরোনাম। স্বাভাবিকভাবেই দুষ্কৃতীদের ধরতে চাপে পড়ে পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু তদন্তে প্রেমিক প্রেমিকার রাগ ভাঙানোর তথ্যে তদন্ত যেন মোড় নিয়েছে আশ্চর্যের এক প্রেমের গল্পে। 

আরো পড়ুন:

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে ভারতীয় পাসপোর্টের অবনতি কেন?

জঙ্গি সন্দেহে ভারতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি ‘মুফতি মাসুদ’

পুলিশ জানায়, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড মালিরবাগান খামারডাঙা এলাকায় একটি বাড়িতে বোমা ছোঁড়া হয়। বাড়িটির দেয়ালে লাগে বোমা, জানালার কাঁচ ভেঙে যায়।

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বাড়িটির বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু কোনো সূত্র পাওয়া যায় না। এরপর এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি সিসিটিভির ফুটেজে একটি বাইকের ছবি দেখে তার সন্ধান শুরু করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মালিরবাগান এলাকায় যেখানে বোমাবাজি হয়েছিল সেখানে এক তরুণীর সঙ্গে চাঁপদানীর স্থানীয় যুবক সাগর মালিকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কে অবনতি হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে প্রেমিক প্রেমিকার দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছিল না। এর মধ্যেই প্রেমিক বন্ধুদের মারফত জানতে পারে প্রেমিকা অন্য এক যুবকের সঙ্গে মেলামেশা করছে। এদিকে সাগরের ফোন ধরা বন্ধ করে দেয় তরুণী।

কী করে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করা যায় সেটাই ভাবতে থাকে প্রেমিক। এরপরেই বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখা করার বুদ্ধি বের করে সাগর। ইউটিউব দেখে বেশ কয়েক ধরনের পটকার উপদান দিয়ে বোমা বানায়। সেটি ফাটানোর পরিকল্পনা করা হয় প্রেমিকার বাড়ির পাশে। 

বোমা ফাটার আওয়াজে তরুণী প্রেমিকা যদি বেরিয়ে আসে তাহলে তার সঙ্গে কথা বলবে- এই উদ্দেশ্য নিয়ে ছট পূজার রাতে চার বন্ধু পৌঁছে যায় মালিরবাগান এলাকায়। বোমা ছোঁড়ে একটি বাড়ির দেওয়ালে। এতটাই জোরে শব্দ হয় যে তারা নিজেরাই ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে পুলিশ ওই তরুণীর সঙ্গে সাগরের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে তার খোঁজ শুরু করে। পাশাপাশি বাইকের নম্বর দেখে খোঁজ শুরু করে। সাগর এবং তার বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ জানতে পারে যে, তারা ঘটনার পর থেকে আর বাড়িতে থাকছিল না। ঘটনার পর চার বন্ধুই কল্যাণীতে পালিয়ে গিয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গতকাল শুক্রবার পুলিশ তাদেরকে ব্যারাকপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, আটক সাগর মালিক, প্রিন্স যাদব, প্রণীত পাল, আয়ুস যাদব, চারজনেরই বয়স ১৮-২০ বছর।ইতিমধ্যেই তাদের শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হয়েছে। আরো জিজ্ঞাসাবাদ জন্য পুলিশ তাদের রিমান্ডে নিয়েছে।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার দেখা পেতে বোমা ছুঁড়ে গ্রেপ্তার প্রেমিক
  • যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
  • বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম
  • বায়ার্নের টানা ১৪ ম্যাচ জয়ের অবিশ্বাস্য রেকর্ড
  • মাহিমা চৌধুরী-সঞ্জয় মিশ্রা বিয়ে করেছেন?