আটক, জেল, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়াসহ অনেক নাটকীয়তার পর বকশীগঞ্জের দশানী নদীতে পাশাপাশি অবৈধ দুটি বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে আইড়মারী নতুনপাড়া ও বকশীগঞ্জের সীমানাঘেঁষা দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের খাপড়াপাড়া এলাকার বাঁধ দুটি ভেঙে ফেলেন এলাকাবাসী। এতে অন্তত ২০ গ্রামের কৃষকের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
জানা গেছে, মাস খানেক আগে বাহাদুরাবাদ ও মেরুরচর ইউনিয়নের সীমানায় খাপড়াপাড়া এলাকায় দশানী নদীর শাখাতে একটি বাঁধ নির্মাণ করেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, নদী ভাঙন রোধে একাধিকবার আবেদন করা হলেও কোনো কাজ হয়নি। তাই তারা নিজেরাই বাঁধ নির্মাণ করেছেন।
খাপড়াপাড়া গ্রামে বাঁধ নির্মাণের পর আধা কিলোমিটার দূরে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চরআইড়মারী নতুন পাড়ায় আরেকটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পাশাপাশি দুটি বাঁধের কারণে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় নদীতে। প্রশাসনের বাধার মুখেই বাঁধ দুটি নির্মাণ করা হয়। বাঁধের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেন কয়েক গ্রামের মানুষ। পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধনও করেন তারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধ অপসারণের বিষয়ে বলা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের ফলে কয়েকদিন আগে অন্তত ১৫টি গ্রামে ধানসহ নানা ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চলে দেখা দেয় কৃত্রিম বন্যা। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন যৌথ বৈঠক করে। গত বৃহস্পতিবার বকশীগঞ্জ উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বৈঠকে বাঁধ দুটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী ওইদিন বিকেলে পুলিশ নিয়ে চরআইড়মারী এলাকায় বাঁধ ভাঙতে যান বকশীগঞ্জ ইউএনও মাসুদ রানা। এ সময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে বাঁধ ভাঙতে বাধা দেন এলাকাবাসী। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাঁধ অপসারণে বাধা দেন তারা। এ সময় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এ সময় সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে আইড়মারী গ্রামের রহমত আলী (৪০) ও ইউসুফ আলী (৩২) নামে দু’জনকে আটক করে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে বাধার মুখে বাঁধ অপসারণ না করেই ফিরে যান ইউএনও। বাঁধ পাহারা দিতে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন কয়েকশ মানুষ। এ অবস্থার মধ্যেই গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কয়েক গ্রামের মানুষ জোট বেঁধে গিয়ে বাঁধ দুটি অপসারণ করেন।
বকশীগঞ্জের ইউএনও মাসুদ রানা বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় জনস্বার্থে বাঁধ অপসারণ করা হবে। এতে নমনীয় হন তারা। পরে এলাকাবাসী বাঁধ দুটি অপসারণ করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর
এছাড়াও পড়ুন:
আনোয়ারায় মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় মানসিক প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে (২২) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গতকাল রোববার বিকেলে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানসিক প্রতিবন্ধী ওই তরুণী কয়েক মাস ধরে আনোয়ারা এলাকায় রয়েছেন। ধর্ষণের কারণে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে তিনি কাতরাচ্ছিলেন। বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে এলে তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেন। এরপর জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মানসিক প্রতিবন্ধী ওই তরুণীকে একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছেন। চিকিৎসার প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনোয়ারার ইউএনও তাহমিনা আক্তার বলেন, স্থানীয়ভাবে মানসিক প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে ধর্ষণের খবর পেয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।