গোপালগঞ্জে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব, প্রধান শিক্ষককে গণধোলাই
Published: 6th, May 2025 GMT
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্তের ভাই প্রধান শিক্ষককে গণধোলাই দিয়েছে এলাকাবাসী। এ সময় অভিযুক্তসহ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। উল্লেখ্য অভিযুক্ত একই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সকালে উপজেলার মান্দ্রা-রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিরউদ্দিনের ভাই বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজল বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিভিন্ন সময় এসব ঘটনা জানাজানি হলেও প্রধান শিক্ষকের প্রভাবে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
গতকাল সোমবার রাতে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে কুপ্রস্তাব দিলে ওই ছাত্রী কৌশলে সাইফুদ্দিন কাজলের কথা রেকর্ড করে অভিভাবকদের জানায়। পরে অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
মঙ্গলবার প্রতিদিনের মতো স্কুলের কার্যক্রম শুরু হয়। অ্যাসেম্বলি শেষে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজলের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা মিছিল নিয়ে রাধাগঞ্জ-কুশলা সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় প্রধান শিক্ষক নাসিরউদ্দিন বিদ্যালয়ে আসছিলেন। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর রোষানলে পড়ে তিনি গণধোলাইয়ের শিকার হন।
খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, ‘‘একজন শিক্ষক হয়ে মেয়ের বসয়ী ছাত্রীকে সে কীভাবে কুপ্রস্তাব দেয়? সাইফুদ্দিন কাজল দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মেয়েকে কুস্তাব দিচ্ছে। আমরা একাধিকবার প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানালেও তিনি তার ভাইয়ের বিচার করেননি।’’
দশম শ্রেণীর অপর শিক্ষার্থী সুরভী অভিযোগ করে বলেন, ‘‘সাইফুদ্দিন কাজল স্যার ক্লাসে ও প্রাইভেট পড়ার সময় প্রায়ই ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করত এবং কুপ্রস্তাব দিতো। আমরা প্রতিবাদ করতে চাইলে পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দিতো। ভয়ে আমরা চুপ থাকতাম।’’
এ বিষয়ে জানার জন্য বিদ্যালয়ে ও বাড়িতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক নাসিরউদ্দিন এবং সাইফুদ্দিন কাজলকে পাওয়া যায়নি। দুজনের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
এ দিকে কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘বিদ্যালয়টির পরিবেশ বর্তমানে শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ ঘটনায় উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার এসএম শাহজাহান সিরাজকে প্রধান করে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দুই কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বাদল//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক প রস ত ব দ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ক্লাসে ফেরেননি শিক্ষকরা, বিপাকে ৭ হাজার কুয়েট শিক্ষার্থী
একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার তৃতীয় দিনেও ক্লাসে ফেরেননি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা। লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরোদমে কবে নাগাদ ক্লাস শুরু হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। পাশাপাশি সেশনজট বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সাহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পর কিছু শিক্ষার্থী ১০ থেকে ১৫ শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। জড়িতদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস-পরীক্ষা নেবেন না।
এদিকে, শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এরই মধ্যে দুই দফা ক্ষমা চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। শিক্ষকরা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছেন। আগে থেকেই প্রায় দেড় বছরের সেশনজট রয়েছে। এর ওপর গত আড়াই মাস কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা হয়নি। এ অবস্থা চলমান থাকায় বাড়ছে সেশনজট।
কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, উপাচার্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সংকট নিরসনের চেষ্টা করছেন।