রাশিয়ার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে বাংলাদেশের ১৪টি পোশাক কারখানার ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার আটকা পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি করার পর দেশের ১৪ কারখানা মালিক এক বছরের বেশি সময় ধরে ৭৬ লাখ ডলার আদায় করতে পারছেন না। লেনদেন–সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এই অর্থ পরিশোধ করতে পারছেন না রাশিয়ার ক্রেতারা।’

মেহাম্মদ হাতেম জানান, শুরুতে চীনের ব্যাংকের মাধ্যমে কিছু অর্থ এলেও পরে সেটি সম্ভব হয়নি। সমস্যা সমাধানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রাশিয়ার পাওনার সঙ্গে ১৪ পোশাক কারখানার আটকে থাকা অর্থ সমন্বয় অথবা বিনিময় ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দেন তিনি।

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ বুধবার বিকেএমইএর ২০২৫-২৭ সাল মেয়াদি পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন উপলক্ষে ইশতেহার ঘোষণা করে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স। সেই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই কথাগুলো বলেন প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের দলনেতা ও বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মনসুর আহমেদ প্রমুখ। তাঁরা প্রত্যেকেই প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের প্রার্থী।

আগামী শনিবার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে একসঙ্গে বিকেএমইএর নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। এবার ভোটার হয়েছেন ৫৮২ জন। ৩৫ পদের বিপরীতে প্রার্থী আছেন ৩৮ জন। তার মধ্যে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের প্রার্থীই ৩৫ জন।

ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলা বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘কাঁচামাল আমদানিতে সমস্যা হবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তে কড়াকড়ি থাকবে। এতে সীমান্ত বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উভয় দেশ থেকে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল আসে। ফলে যুদ্ধ শুরু হলে তুলা, সুতাসহ বিভিন্ন কাঁচামালের দাম বাড়তে পারে। সেটি হলে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ব।’

প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ১৫ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে আমদানি-রপ্তানি সহজীকরণে কাস্টমস সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে স্বচ্ছ, জবাবদিহি ও বাস্তবধর্মী নীতি প্রণয়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জোরালো পদক্ষেপ নেবে তারা।

এ ছাড়া এইচএস কোডের জটিলতা নিরসন, ভ্যাট–সংক্রান্ত হয়রানি দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, ব্যাংক খাতের জটিলতা দূর, ঢাকায় বিকেএমইএর নিজস্ব ভবন নির্মাণ করাসহ বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রগ র স ভ ন ট অ য ল য় ন স ম হ ম মদ হ ত ম ব ক এমইএর

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”

তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”

ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ