রাশিয়ার ক্রেতাদের কাছে ১৪টি পোশাক কারখানার ৭৬ লাখ ডলার আটকা: বিকেএমইএ
Published: 7th, May 2025 GMT
রাশিয়ার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে বাংলাদেশের ১৪টি পোশাক কারখানার ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার আটকা পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি করার পর দেশের ১৪ কারখানা মালিক এক বছরের বেশি সময় ধরে ৭৬ লাখ ডলার আদায় করতে পারছেন না। লেনদেন–সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এই অর্থ পরিশোধ করতে পারছেন না রাশিয়ার ক্রেতারা।’
মেহাম্মদ হাতেম জানান, শুরুতে চীনের ব্যাংকের মাধ্যমে কিছু অর্থ এলেও পরে সেটি সম্ভব হয়নি। সমস্যা সমাধানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রাশিয়ার পাওনার সঙ্গে ১৪ পোশাক কারখানার আটকে থাকা অর্থ সমন্বয় অথবা বিনিময় ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দেন তিনি।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ বুধবার বিকেএমইএর ২০২৫-২৭ সাল মেয়াদি পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন উপলক্ষে ইশতেহার ঘোষণা করে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স। সেই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই কথাগুলো বলেন প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের দলনেতা ও বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মনসুর আহমেদ প্রমুখ। তাঁরা প্রত্যেকেই প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের প্রার্থী।
আগামী শনিবার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে একসঙ্গে বিকেএমইএর নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। এবার ভোটার হয়েছেন ৫৮২ জন। ৩৫ পদের বিপরীতে প্রার্থী আছেন ৩৮ জন। তার মধ্যে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের প্রার্থীই ৩৫ জন।
ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলা বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘কাঁচামাল আমদানিতে সমস্যা হবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তে কড়াকড়ি থাকবে। এতে সীমান্ত বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উভয় দেশ থেকে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল আসে। ফলে যুদ্ধ শুরু হলে তুলা, সুতাসহ বিভিন্ন কাঁচামালের দাম বাড়তে পারে। সেটি হলে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ব।’
প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ১৫ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে আমদানি-রপ্তানি সহজীকরণে কাস্টমস সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে স্বচ্ছ, জবাবদিহি ও বাস্তবধর্মী নীতি প্রণয়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জোরালো পদক্ষেপ নেবে তারা।
এ ছাড়া এইচএস কোডের জটিলতা নিরসন, ভ্যাট–সংক্রান্ত হয়রানি দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, ব্যাংক খাতের জটিলতা দূর, ঢাকায় বিকেএমইএর নিজস্ব ভবন নির্মাণ করাসহ বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রগ র স ভ ন ট অ য ল য় ন স ম হ ম মদ হ ত ম ব ক এমইএর
এছাড়াও পড়ুন:
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে
প্রযুক্তির উৎকর্ষের মধ্যেও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে প্রায়ই বিকৃতভাবে বা ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। গুগলে ‘ইনডিজেনাস পিপল’ লিখে খোঁজা হলে মাঝেমধ্যে এমন ছবি দেখানো হয়, যা তাদের ‘আদিম’, ‘বন্য’, ‘বর্বর’, ‘জংলি’ ও ‘হিংস্র’ আকারে উপস্থাপন করে।
সোমবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিযোগ করেন। ‘আদিবাসী নারীর অধিকার রক্ষা ও ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক।
আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের ঘিরে এমন উপস্থাপনের প্রভাব নারীদের ওপরও পড়বে।
মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, দেশে জাতিসংঘের অনেকগুলো দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলেও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করা হয় না। তিনি বলেন, বুঝুক আর না বুঝুক বাংলাদেশ জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনকে তড়িঘড়ি করে সমর্থন করে। কিন্তু এই কনভেনশনকে সমর্থন করেনি। সরকার বুঝেশুনেই সমর্থন করেনি। আগের সরকার বলেছে, বাংলাদেশে আদিবাসী নেই, এই সরকারও আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না।
একটাই ধর্ম ও জাতিসত্তা থাকবে, এমন মনোভাব কাম্য নয় উল্লেখ করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘কিসের ভয়ে আমরা দেশে ভিন্ন ধর্ম, চিন্তা ও জাতিসত্তার মানুষকে থাকতে দেব না? কে অধিকার দিয়েছে যে একটি মাত্র মতবাদ, চিন্তা, ভাষা জাতি ও ধর্ম থাকবে? রাষ্ট্রের জন্য এটা কাম্য হতে পারে না।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে সমতল ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে খুশী কবির বলেন, অভ্যুত্থানের পরে আর নারীদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। নারী কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু কমিশনের কোনো কিছু গ্রহণ করা হয়নি। এর অর্থ সরকার নারীদের ভয় পায়। এই অবস্থা টিকে থাকার জন্য অভ্যুত্থান হয়নি। তাই অধিকার আদায়ে নারীদের শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। এখনই উত্তম সময়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির ছবি: প্রথম আলো হেডিং: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে