সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আবদুর রহমান স্ত্রী ও দুই বছরের কন্যাসন্তানকে নিয়ে নিজে অটোরিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন গ্রামের বাড়িতে। কিন্তু যাওয়ার পথেই ট্রাকের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে যায় অটোরিকশা। তিনি নিজে তেমন আঘাত না পেলেও তাঁর চোখের সামনেই প্রাণ হারান স্ত্রী ও সন্তান।

আজ শুক্রবার রাত সোয়া আটটার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মিয়াপুর এলাকায় চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীর নাম জমিলা সুলতানা (২১) ও তাঁর শিশুকন্যা ফাতেমা আক্তার ওরফে জুঁই (২)। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্রাকটি জব্দ করে। তার আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় আটক করা হয় ট্রাকের চালককে। তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ সময় পালিয়ে গেছেন চালকের সহকারী।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্ত্রী জমিলা সুলতানা ও দুই বছরের মেয়েকে নিয়ে বেগমগঞ্জের চৌমুহনী এলাকা থেকে নিজের অটোরিকশা চালিয়ে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার দেওপাড়া গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন আবদুর রহমান। পথে চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের মিয়াপুরে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক ধাক্কা দেয় অটোরিকশাটিকে। এতে অটোরিকশার পেছনে থাকা চালক আবদুর রহমানের স্ত্রী জমিলা ও কন্যাশিশু ফাতেমা মারাত্মকভাবে আহত হন। তাঁদের নিজেই উদ্ধার করে অটোরিকশা চালিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মা-মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানতে চাইলে দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

রুহুল আমিন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, চালক আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে নিজে অটোরিকশা চালিয়ে চন্দ্রগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মিয়াপুর এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মা-মেয়ে মারা যান। তবে অটোরিকশার চালক অক্ষত ছিলেন। তিনি নিজেই স্ত্রী-সন্তানকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ওসি জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ র রহম ন লক ষ ম প র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”

তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”

ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ