যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এবার নিজেদের আকাশসীমা সব ধরনের উড়োজাহাজের জন্য খুলে দিয়েছে পাকিস্তান। অন্যদিকে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরেও পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। খুলছে দোকানপাট।

পাকিস্তান এয়ারপোর্ট অথরিটি (পিএএ) জানায়, দেশটির আকাশসীমা এখন উন্মুক্ত রয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর প্রকাশ করেছে।

পিএএ-এর একজন মুখপাত্র বলেন, পাকিস্তানের সব বিমানবন্দর উড়োজাহাজের স্বাভাবিক চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের আকাশসীমায় উড়োজাহাজের চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে।

এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরদিন আজ রোববার সকাল থেকে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগর শহরের সড়কে স্বস্তির ভাব দেখা গেছে। খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। মানুষ নিত্যদিনের স্বাভাবিক কাজে ফিরছেন। যদিও অনেকে বলছেন, তাঁরা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সতর্ক আছেন।

শ্রীনগরের হায়দারপোরা এলাকায় একটি মুদিদোকান চালান মোহাম্মদ আনাস। যুদ্ধবিরতির পর দোকান খুলেছেন তিনি। বললেন, ‘আমরা সতর্ক আছি। কেননা এ যুদ্ধবিরতি কত দিন টিকবে, সেটা কেউ জানে না।’

আজ ভোরে অনেকে একটি বেকারির সামনে ভিড় করেছিলেন। রুটি কেনার জন্য সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা শাকিলা জান বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির খবরে আমি খুব খুশি। কিন্তু গত রাতেও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। এটা আমাকে আবারও উদ্বিগ্ন করেছে।’

শাকিলা আরও বলেন, ‘আমরা আর কোনো দেশকেই বিশ্বাস করি না। তারা যেকোনো মুহূর্তে মন পরিবর্তন করতে পারে।’

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি বারবার লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান: ভারত১২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি ‘ভঙ্গ করা’ নিয়ে ভারত–পাকিস্তান বাহাস, শ্রীনগরে বিস্ফোরণের শব্দ৪ ঘণ্টা আগে

‘আমরা সবাই শান্তি চাই। মর্যাদার সঙ্গে স্বাভাবিক জীবন চাই। রাজনীতির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই’, যোগ করেন শাকিলা।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় অনেকটা হুট করেই যুদ্ধবিরতির খবর দেন ট্রাম্প। তিনি জানান, ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে সম্মত রয়েছে ভারত ও পাকিস্তান।’

যুদ্ধবিরতি শুরুর পর আজ রোববার সকালে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে একটি বিপণিবিতানের সামনে হাঁটছেন এক মা ও তাঁর মেয়ে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ র নগর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”

তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”

ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ