নোয়াখালীতে ফ্ল্যাট দখলে জেলা যুবদল সভাপতির সহায়তার অভিযোগ
Published: 19th, May 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী শহরে একটি ফ্ল্যাট দখলের ঘটনায় জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম ওরফে সুমনের সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় কাজল রেখা নামের এক নারী নোয়াখালী প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কাজল রেখা অভিযোগ করেন, ২০১০ সালে তাঁর বড় ছেলে আল মাহমুদের বন্ধু উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নূর হোসেনকে তাঁদের মালিকানাধীন চৌমুহনী পৌরসভার কুরিপাড়া এলাকার একটি তিনতলা বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্ব দেন। এরপর তিনি ছেলের পড়ালেখার সুবিধার্থে ঢাকায় চলে যান। তখন থেকে নূর হোসেন তাঁর বাড়ি দেখাশোনা করছিলেন। একপর্যায়ে নূর হোসেন তাঁর বাড়ির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট দখল করে নেন এবং বাড়িতে থাকা অন্য ভাড়াটেদের বের করে দেন।
কাজল রেখা অভিযোগ করেন, নূর হোসেনের দলীয় প্রভাবের কারণে তিনি অনেক চেষ্টা করেও গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাড়ি দখলমুক্ত করতে পারেননি। পরে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর যুবলীগ নেতা নূর হোসেন আত্মগোপন করলে গত ৮ মার্চ তিনি তাঁর বাড়িটি দখলে নেন। এরপর নূর হোসেন জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিমের শরণাপন্ন হয়ে তাঁর (মঞ্জুরুল আজিম) লোকজনের মাধ্যমে ফ্ল্যাটটি পুনরায় দখল করেন।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কাজল রেখা নামের ওই নারীর ফ্ল্যাট দখলের ঘটনায় তিনি কিংবা তাঁর কোনো লোক জড়িত নন। তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ওই নারীকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করেছেন।
এদিকে ফ্ল্যাট দখল করে রাখার বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গত ১৬ মার্চ জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কাজল রেখা। তিনি বলেন, অভিযোগ দায়েরের পর বেগমগঞ্জ থানা থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত করে এলেও ফ্ল্যাটটি এখনো দখলমুক্ত হয়নি।
জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার মো.
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি সালিসের মাধ্যমে মীমাংসা হওয়ার কথা। হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না। মীমাংসা না হয়ে থাকলে ওই নারী আদালতে যেতে পারেন। তবে যাঁদের বিরুদ্ধে দখলের অভিযোগ করা হচ্ছে, তাঁরা ফ্ল্যাটের মালিকানার টাকাপয়সা লেনদেনের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব গমগঞ জ থ ন ফ ল য ট দখল ক জল র খ ওই ন র য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়: মুজিবুর রহমান
‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়, আর বিচার ছাড়া অপরাধীদের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট সরকার বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতারিত হয়েছে এবং সামনের দিনে তাদের ধ্বংস অপেক্ষা করছে। কেউ যদি তওবা করে ভালো মানুষ হয়, হতে পারে; কিন্তু যারা অপরাধ করেছে তাদের অবশ্যই বিচার হতে হবে। বিচার হওয়ার আগে তাদের কোন অধিকার স্বীকার করা উচিত নয়। আর তারা যেসব অন্যায় কাজ করেছে, সেগুলোকে রেখে নির্বাচন করলে এই নির্বাচন সঠিক নির্বাচন হবে না। এজন্য সংস্কার করতে হবে।’’
শনিবার রাতে পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে পঞ্চগড় জেলা জামায়াত আয়োজিত ওয়ার্ড ও ইউনিট সভাপতি সম্মেলনে প্রধান অথিতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘‘বিচার যদি বলে নিরপরাধরা সব অধিকারই ফিরে পেতে পারে, কিন্তু যারা অপরাধী তাদের অধিকার স্বীকার করা মানবতাবাদী কথা হতে পারে না। আমরা সেটাই দাবি করছি- নির্বাচনটা সেভাবেই হবে। উপদেষ্টা সরকারকে আমরা বলেছি, আপনারা সংস্কার করেন, এরপর নির্বাচন দেন। আর বিচার করেন, এরপর সিদ্ধান্ত নেন কারা যোগ্য নির্বাচন করার; আর কারা যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন।’’
জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসকে ধ্বংস করা হয়েছে কেয়ারটেকার সরকার নিষিদ্ধের মাধ্যমে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেয়ারটেকার সরকার এনেছে এবং অধ্যাপক গোলাম আজম ছিলেন এই কেয়ারটেকার সরকারের রূপকার। সেসময় কেয়ারটেকার সরকার দিয়েই নির্বাচন করার বিষয়টি সবাই মেনে নেয়; এমনকি ফ্যাসিস্ট সরকারও মেনে নিয়েছিল। মেনে নেয়ার পর আবার নিরপেক্ষ নির্বাচনকে হত্যা করা হলো সংবিধান থেকে কেয়ারটেকার সরকারকে বিদায় করার মাধ্যমে।’’
জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা দেলওয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় এই সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।
এ ছাড়াও অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পঞ্চগড় জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি জুলফিকার রহমান, জেলা জামায়াতের মানবসম্পদ বিভাগীয় সভাপতি শাহীদ আল ইসলাম প্রমুখ।
নাঈম//