১৯ মার্চ ১৯৭২, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চুক্তি

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের ভূমিকাকে স্বীকৃতি ও কৃতজ্ঞতার নিদর্শন হিসেবে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চুক্তি সই হয়। এটি ছিল দুই দেশের মধ্যে ২৫ বছরের একটি কৌশলগত ও কূটনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি। প্রাথমিকভাবে ২৫ বছরের জন্য চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। মেয়াদ শেষে ১৯৯৭ সালে এই চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে নবায়ন করা হয়নি।

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চুক্তি ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য প্রথম কৌশলগত বন্ধুত্বপূর্ণ চুক্তি। যদিও এ চুক্তিকে ‘ভারতের আধিপত্যবাদ’ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা বলেও সমালোচনা আছে।

২৮ মার্চ ১৯৭২, প্রথম দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে প্রথম দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয় ১৯৭২ সালের ২৮ মার্চ। এ নিয়ে ২৯ ও ৩০ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রথম বাণিজ্য চুক্তি অনুসারে উভয় দেশ আন্তর্জাতিক সীমানার ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে পণ্যসামগ্রী বিনিময় করবে এবং ট্রানজিট–সুবিধা পাবে। চুক্তিটি এক বছর মেয়াদের জন্য, তবে ছয় মাস পরে দুই দেশ বাস্তবায়ন পুনর্বিবেচনা করবে। চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন বাণিজ্যমন্ত্রী এম আর সিদ্দিকী এবং ভারতের পক্ষে বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী এল এন মিশ্র।

চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে আগামী এক বছরে ১০০ কোটি টাকা মূল্যের বাণিজ্য অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় বাংলাদেশ থেকে ভারতে আমদানি করবে মাছ, কাঁচা পাট, ফারনেস অয়েল, ন্যাপথাল, জুট ব্যাচিং অয়েল, আধা পাকা গরুর চামড়া, সিল্কের সুতা, তাঁতের তৈরি সুতি দ্রব্য, গুড়, আয়ুর্বেদীয় ওষুধ এবং বইপুস্তক ও সাময়িক পত্রপত্রিকা। ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানি করবে সিমেন্ট, অ্যাসফল্ট, স্টোন, জিপসাম, লাইমস্টোন, তুলার সুতা, কেমিক্যাল ও ওষুধপত্র, মসলা, তামাক, যন্ত্রের খুচরা অংশ, বইপুস্তক ও সাময়িক পত্রপত্রিকা।

ভারত–বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী মোদির

কলকাতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৬তম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন (সিসিসি) উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেনা সম্মেলন একটি দ্বিবার্ষিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত শীর্ষস্তরীয় মতবিনিময়ের আসর।

অপারেশন সিঁদুরে’র পর এটিই প্রথম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, তিন বাহিনীর প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান, প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধানও।

আরো পড়ুন:

অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি নরম হওয়ার দিন শেষ: ট্রাম্প

আসামে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, ৫ বাংলাদেশি ছাত্রকে বহিষ্কার

ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড সদর দপ্তর কলকাতার বিজয় দুর্গে তথা ফোর্ট উইলিয়ামে আগামী তিনদিন এই সম্মিলিত সেনা সম্মেলন চলবে। 

এই সম্মেলন সেনার তিন বাহিনীর সর্বোচ্চ চিন্তাভাবনামূলক ফোরাম, যা দেশের শীর্ষ অসামরিক ও সামরিক নেতৃত্বকে ধারণাগত ও কৌশলগত স্তরে মতামত বিনিময়ের জন্য আয়োজন করা হয়েছে ৷ কলকাতার আগে সর্বশেষ সম্মিলিত সেনা সম্মলেন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২৩ সালে ভোপালে। অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপটে, এই বছরের সম্মেলন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এবারের সম্মেলনে সংস্কার, রূপান্তর, পরিবর্তন এবং অপারেশনাল প্রস্তুতির উপর জোর দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের  বিবৃতি অনুযায়ী, ‘সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দু সশস্ত্র বাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, সংহতিকরণ এবং প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণে বিশেষ জোর দেওয়া। একই সঙ্গে শীর্ষস্তরের একাধিক ক্ষেত্রে অপারেশনাল প্রস্তুতির উপরও জোর দেওয়া হবে। তিনদিনের এই সম্মেলন সশস্ত্র বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা করা হবে, যাতে ক্রমবর্ধমান জটিল ভূ-কৌশলগত পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়।’

রবিবার আসাম সফর সেরে নির্ধারিত সময়ের থেকে বেশ কিছুটা পর দমদম বিমানবন্দরে নামেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা এবং উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। দলীয় কোনো কর্মসূচি না থাকলেও মোদিকে দেখতে ভিড় ছিল বিজেপি সমর্থকদের। ভিড় দেখে গাড়ি থামিয়ে হাত নেড়ে জনসংযোগ সারেন মোদি। সেখান থেকে তার ২৪ গাড়ির কনভয় পৌঁছায় রাজভবনে। সেখানেই রাত্রিবাস করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। তিনি রাত কাটান ফোর্ট উইলিয়ামে।

চলতি বছরে এই নিয়ে চতুর্থবার পশ্চিমবঙ্গে এলেন নরেন্দ্র মোদি। সকাল ৯ টাতেই রাজভবন থেকে ফোর্ট উইলিয়ামের দিকে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ফোর্ট উইলিয়ামে ছিলেন মোদি। দেড়টার পরে কলকাতা থেকে বিহারের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।

একদিকে বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি। অন্যদিকে অস্থির চিন সীমান্ত। তার মধ্যে আবার নেপালে পালাবদল। দিনকয়েক আগে বাংলাদেশের উত্তরে চিন বিমানঘাঁটি তৈরি করতে চলেছে বলে একটি খবর ছড়ায়। ঘাঁটিটি নাকি আবার তৈরি হবে চিকেনস নেকের কাছেই। সবমিলিয়ে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিরাট এক জটিল সমীকরণ তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় কলকাতার বিজয় দুর্গে সেনা সম্মেলনের আয়োজন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কমিউনিটি ব্যাংক ও বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের মধ্যে কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষর
  • প্রতিবেশী দেশগুলো অস্থির, ভারত এখন কী করবে
  • কারও ওপর আক্রমণ হলে যৌথভাবে জবাব দেবে পাকিস্তান ও সৌদি আরব
  • কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী মোদির