‘ঈদজ্জোহার চাঁদ হাসে ঐ এলো আবার দুস্রা ঈদ
কোরবানি দে কোরবানি দে শোন্ খোদার ফর্মান তাকিদ।।
এমনি দিনে কোরবানি দেন পুত্রে হজরত ইব্রাহীম,
তেমনি তোরা খোদার রাহে আয় রে হবি কে শহীদ্।।’
এই পঙ্ক্তিমালা কবি কাজী নজরুল ইসলামের। ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদকে জড়িয়ে থাকা বা উদ্যাপনের এমন অনেক গান ও কবিতা আছে এই কবির। সাম্য, মানবতা ও ত্যাগের তাকিদ নিয়ে এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঘরে ঘরে আঁচ লেগেছে সেই উৎসবের, সমস্ত পশুত্বকে আরও একবার বিসর্জনের উপলক্ষ এসেছে দেশে।
আজ ৭ জুন, ১০ জিলহজ শনিবার সারা দেশে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে উদ্যাপিত হচ্ছে কোরবানির ঈদ। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনের মেলবন্ধনে আরও একবার মুখর হয়ে উঠেছে বাঙালির চিরায়ত পারিবারিক, সামাজিক শিকড়-বাকড়। চারদিকেই উৎসবের ঘ্রাণ। এরই মধ্যে পবিত্র হজের আয়োজন, আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য এবং এর বাইরে অনেক দেশেই গতকাল শুক্রবার ঈদ উদ্যাপিত হয়েছে।
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। মুসলমানদের জীবনে বছরে দুটি খুশির দিনের একটি এই ঈদুল আজহা। এই দিনে কি ধনী কি নির্ধন—সবাই যার যার সাধ্যমতো নতুন, নয়তো পরিষ্কার কাপড় পরে, গায়ে আতর-সুগন্ধি মেখে মসজিদ কিংবা ঈদগাহে এক কাতারে দাঁড়াবেন—এটাই রেওয়াজ।
নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের আশায় সামর্থ্য অনুযায়ী দেওয়া হবে পছন্দের পশু কোরবানি। বাংলাদেশে সাধারণত গরু বা ছাগল কোরবানি দেওয়া হয়। তবে মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য দেশে দুম্বা, ভেড়া ও উট কোরবানি দেওয়া হয়ে থাকে। আমাদের এ অঞ্চলে শতবছর বা তারও আগে সাধারণত বকরি বা ছাগল কোরবানি দেওয়া হতো। এ জন্য এই ঈদের পরিচিতি ছিল ‘বকরি ঈদ’ বা ‘বকরিদ’। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এ অঞ্চলে গরু কোরবানি দেওয়া বাড়তে থাকে।
আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর ঈদুল আজহা। এ উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে চরম ত্যাগের দৃষ্টান্ত। আল্লাহর নির্দেশে নিজ পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.
পবিত্র ঈদুল আজহা তাই আত্মত্যাগে ডুব দেওয়ার এবং মনের ভেতরের সুপ্ত পশুত্বকে বিসর্জনের দিন। এর শিক্ষা হলো মনের পশুকে জবেহ করে নিজেকে খোদায়ি রঙে সাজিয়ে তোলা। কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়, ‘মনের মাঝে পশু যে তোর আজকে তারে কর্ জবেহ,/ পুল্সেরাতের পুল হতে পার নিয়ে রাখ্ আগাম রসিদ্।’
ঈদুল আজহা মনে করিয়ে দেয় সব ধরনের অন্যায়, জুলুম, অবিচার, মিথ্যা ও অধর্মের বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে গর্জে ওঠার, মানবিকতার। কবির ভাষায়, ‘গলায় গলায় মিল্ রে সবে ভুলে যা ঘরোয়া বিবাদ,/ মিলনের ঈদগাহ্ গড়ে তোল্ প্রাণ দিয়ে তার তোল্ বুনিয়াদ।’
সুরা হজের ৩৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন, তোমাদের জবাই করা পশুর রক্ত-মাংস আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না। তিনি দেখেন তোমাদের তাকওয়া। আর এই তাকওয়া হচ্ছে আত্মশুদ্ধি, নিষ্কৃতি লাভ করা, ভয় করা। অর্থাৎ আল্লাহকে ভয় এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভের আশায় অন্যায় ও আল্লাহর অপছন্দের কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখা।
একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লির ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। রাজধানীর এই বড় ঈদ জামাতের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সকাল সাড়ে সাতটায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে জামাত আয়োজনের অনুপযুক্ত হলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল আটটায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাইরে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দান ও দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ ময়দানে দেশের বড় জামাতগুলো হয়ে থাকে। দূরদূরান্ত থেকে, ভিন্ন জেলা থেকেও মুসল্লিরা শরিক হন এসব ঈদের জামাতের মহামিলনে।
আরও পড়ুনজাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায়৭ ঘণ্টা আগেআজ ঈদের দিন রাজধানীতে এক পশলা বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ঢাকা বিভাগের কিছু স্থানেও সামান্য বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ জানালেন, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। তবে এর পরিমাণ খুব বেশি হবে না। রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা অনেকটাই কম।
প্রিয় পাঠক, এ লেখা যখন পড়ছেন, ততক্ষণে অনেকেরই কোরবানি দেওয়া হয়ে গেছে। ধর্মীয় বিধানমতে, যিনি কোরবানি করবেন, তিনি পাবেন এক ভাগ মাংস। বাকি দুই ভাগ আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুঃখীর মধ্যে বিলিয়ে দেওয়াই নিয়ম। সমাজে ন্যায় ও সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্যই এমন বিধান।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে ঈদুল আজহার শিক্ষা গ্রহণ করে ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আরও পড়ুনঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায়, বায়তুল মোকাররমে হবে ৫টি জামাত০৩ জুন ২০২৫ঈদুল আজহা উপলক্ষে টেলিভিশন ও রেডিওতে সম্প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। সংবাদপত্র আয়োজন করেছে বিশেষ সংখ্যার। ঈদের ছুটিতে পাঠক যেন তথ্য ও বিশ্লেষণ থেকে বঞ্চিত না হন, এ জন্য ছাপা সংবাদপত্র বন্ধ থাকলেও চালু থাকছে অনলাইনগুলো। এই ঈদে ছুটির পাঁচ দিন প্রথম আলো প্রকাশিত হচ্ছে ই-পেপারে।
ঈদ এলে যেভাবে ধনী–গরিব, বাদশা–ফকির ভেদাভেদ ভুলে যাই, সারা বছরই সেই ভেদাভেদের দেয়ালকে উপড়ে ফেলতে হবে। কবি গোলাম মোস্তফার কাছে ঈদ যেন মানবতার সমাবেশস্থল। ‘ঈদ উৎসব’ কবিতায় তিনি লিখেছেন, ‘কণ্ঠে মিলনের ধ্বনিছে প্রেম বাণী/ বক্ষে ভরা তার শান্তি/ চক্ষে করুণার স্নিগ্ধ জ্যোতিভার/ বিশ্ব–বিমোহন কান্তি/ প্রীতি ও মিলনের মধুর দৃশ্যে/ এসেছে নামিয়া যে নিখিল বিশ্বে/ দরশে সবাকার মুছেছে হাহাকার বিয়োগ–বেদনার শ্রান্তি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ঈদ ল আজহ আল ল হ ক রব ন ময়দ ন ঈদগ হ
এছাড়াও পড়ুন:
তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘৩৬ জুলাই: মুক্তির উৎসব’ আয়োজনের জন্য আর্থিক অনুদান চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। অনুদানের চিঠিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব সুপারিশ করেছেন; যার একটি কপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা ও বিতর্ক।
ঘটনাকে অনেকেই ‘চাঁদাবাজি’ বলে ফেইসবুকে সমালোচনা করেছেন। তবে বিষয়টিকে ‘ভয়াবহ মিডিয়া ট্রায়াল’ বলে অভিহিত করেছেন সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। তিনি জানান, অনেকেই তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করে। তাহলে যত প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয় সবই চাঁদাবাজি।
গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন আম্মার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী।
আরো পড়ুন:
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ
ফেসবুকে অনুদান চাওয়ার চিঠির অনুলিপি দিয়ে অনেকেই লিখেছেন, ৭৬ লাখ টাকা তোলার জন্য ৭০ প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এই সাবেক সমন্বয়ক মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) তার ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, “দুই দিনের অনুষ্ঠানের জন্য ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টাকার অনুদানের জন্য একটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। ২১ প্রতিষ্ঠান থেকে ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক অনুদানের আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪ প্রতিষ্ঠানে চিঠি পৌঁছানো হয়েছে।”
কোনো প্রতিষ্ঠানে ইংরেজিতে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, কোনোটিতে বাংলায়। চিঠির সঙ্গে অনুষ্ঠান এবং বাজেটের বিস্তারিত যুক্ত করে দেওয়া হয় বলে চিঠিতে লেখা রয়েছে।
বাংলায় করা একটি আবেদনে বলা হয়েছে, “রাজশাহীর গৌরবময় ইতিহাসে ৩৬ জুলাই একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনটি আমরা ‘জুলাই আন্দোলন’ হিসেবে স্মরণ করি, যেখানে বহু তরুণ শহীদ হয়েছিলেন এবং অনেকে আহত হয়েছিলেন গণতান্ত্রিক অধিকারের সংগ্রামে। এই ঐতিহাসিক ঘটনার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি ‘৩৬ জুলাই: মুক্তির উৎসব’। এই উৎসবে রাজশাহীর শহীদ পরিবার, আহতদের পরিবার, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং সম্মানিত সমন্বয়কবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য হলো শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও তরুণ প্রজন্মকে তাদের আত্মত্যাগের গল্প জানানো।”
আবেদনপত্রে সালাউদ্দিন আম্মার ছাড়াও সই করেছেন কেএসকে হৃদয়। তিনি ৩৬ জুলাই মুক্তির উৎসবের আয়োজক এবং ক্যাম্পাস বাউলিয়ানার পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা। গত ৯ জুলাই তাদের প্রস্তাবনায় সুপারিশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। তিনি লিখেছেন, ‘স্ট্রংলি রিকমেনডেড’।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কাছে ২১ জুলাই একটি আবেদন করা হয়েছে। তারা ২৩ জুলাই ২ লাখ টাকা অনুমোদনও করেছে।
চিঠির বিষয়ে সাবেক সমন্বয়ক আম্মার বলেন, “রাবি প্রশাসনকে প্রস্তাব দেওয়ার পর তারা জানিয়েছিলেন, আর্থিক সহায়তা দিতে না পারলেও তারা অন্যান্য সহযোগিতা করবেন। এরপর উপাচার্যের সুপারিশ নিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সিটি করপোরেশনে আবেদন করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “নগর ভবনে শুধু আমরাই অনুদানের জন্য চিঠি দিয়েছি, তা নয়। বিভিন্ন বিভাগের প্রোগ্রাম আয়োজনের ক্ষেত্রেও সেখানে অনুদান চেয়ে থাকে। আমরা একটা প্রোগ্রাম আয়োজন করব, সেজন্য সিটি করপোরেশন বরাবর একটা অনুদান চেয়ে চিঠি দিয়েছি। সেই প্রোগ্রামের স্পন্সর হিসেবে আমরা তাদের লোগোটা ব্যবহার করব। আর এটাকে যদি কেউ চাঁদাবাজি বলে, তাহলে স্পন্সর নিয়ে যত প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়, সবই চাঁদাবাজি।”
এদিকে, সাবেক এ সমন্বকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে সমালোচনা শুরু হলে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ‘আমার কিছু কথা ছিল’ শিরোনামে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন রাবির ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, “স্পন্সরশিপের সব টাকা একই প্রতিষ্ঠান দেয় না। সবাই কিছু করে দিলে একটা বড়ো এমাউন্ট হয়। আর্টসেলের মতো একটা টিমের জন্য খরচ, প্লেন ফেয়ার, আপ্যায়ন, শহীদ-আহতসহ ছাত্র-শিক্ষক-জনতা জুলাই যোদ্ধাদের উত্তরীয়, সম্মাননা, ক্রেস্ট, হল ভাড়া, ডেকোরেশন, আলোকসজ্জা, আল্পনা, ডিজিটাল মনিটর, সাউন্ড সিস্টেম. লেবার ও স্বেচ্ছাশ্রম দেওয়া শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আপ্যায়ন, ট্রাভেলিং ফ্যাসিলিটির গাড়ী ভাড়া, হোটেল খরচ, চা-কফি-নাস্তা, অন্যান্য পারফরমারদের সম্মানী ও যাতায়াত খরচ সব মিলিয়ে সর্বকালের একটা মেগা বাজেটের প্রোগ্রামে কোটি টাকা খরচ হওয়া অস্বাভাবিক? যন্ত্রীসহ নানান লোকেদের সম্মানী যোগ করলে আরও বাড়ে।”
তিনি আরো লিখেছেন, “আর যেহেতু মিডিয়া পার্টনারের অনেকে মিলে পৃথক পৃথক এমাউন্ট দেয়, কাজেই টাকা সংগ্রহ করে পাওনাদারকে পরিশোধের যে প্যারা তা ভুক্তভোগীই জানে। নিয়ম মেনে অন্যান্য প্রোগ্রামের আয়োজকদের জন্য যে খসড়া বাজেট ও আবেদন, তেমন দেখে আমি নিজেও সুপারিশ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটির সুপারিশ না থাকলে কেউ টাকা দিতে আস্থা পায় না। তাহলে এটাকে চাঁদা বলে প্রচার করা অনৈতিক।”
ছাত্র উপদেষ্টা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে বড়ো বড়ো কনসার্ট ও প্রোগ্রাম হয় স্পন্সরশিপ নিয়েই। একেকজন একেকটি পার্ট হিসেবে টাকা দেন। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর আগে বিবেচনা করা উচিত ছিল। রাবিতে স্মরণকালের একটা মেগা বাজেটের প্রোগ্রাম করার কথা ভবিষ্যতে কেউ করতে উৎসাহ পাবে কি না সংশয় রয়েছে। আর সমন্বয়কের চাঁদাবাজি নামক প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে জুলাই অর্জনকেই প্রশ্নের মুখে ফেলা হলো। নিজের গায়ে থুতু ফেলে যারা চাঁটছে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।”
এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। তবে তিনি তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “রেকোমেন্ডেশন চেয়েছে, কিন্তু পায়নি- এমন মনে করতে পারি না। আমি মনে করি, কো-কারিকুলার, এক্সট্রা-কারিকুলার, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য আমাদের ছাত্র-ছাত্রিরা যে উদ্যোগ নেবে, তাতে আমার দিক থেকে সহযোগিতা থাকা প্রয়োজন। এটা আমি শুরু থেকেই করে আসছি।”
তিনি আরো বলেন, “আজ ঠিক এই ধরনের একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সোর্স থেকে একের পর এক আমাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে। আমি একদম প্রথম দিন থেকে যেভাবে এই সমস্ত উদ্যোগের সাথে ছিলাম, সেভাবেই থাকতে চাই। কিন্তু পরিবেশ এতটাই বিষাক্ত যে, এরপর যেকোনো উদ্যোগে সাহায্য করার আগে আমাকে ১০ বার ভাবতে হবে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী