ইবির ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ভর্তি শুরু ২৯ জুন
Published: 21st, June 2025 GMT
গত মাসের ১১ মে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ধর্মতত্ত্ব অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ২০২৪-২৫ বর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলের ভিত্তিতে আগামী ২৯ জুন থেকে ১ জুলাই শুরু হবে ডি ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম।
এতে ৩২০ আসনের জন্য মেধাক্রমানুসারে সাক্ষাৎকার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত অনুষদ ভবনের চতুর্থ তলায় ইউনিটের সমন্বয়কারীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার (২১ জুন) ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন ও ডি ইউনিটের সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
আরো পড়ুন:
শার্ট ও ক্যাপ পরিয়ে বান্ধবীকে হলে নিয়ে রাত্রিযাপন রাবি ছাত্রের
নতুন বাজারে সড়ক অবরোধ করে ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, সাক্ষাৎকার সভায় উপস্থিতির ভিত্তিতে চূড়ান্ত ভর্তির অনুমতিপত্র প্রদান করা হবে। আগামী ৬ জুলাইয়ের মধ্যে ভর্তি ফি প্রদান করে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে না পারলে পরবর্তীতে ভর্তি হওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকবে না। ১ম মেধা তালিকার ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর কোন পরীক্ষার্থী বিভাগ পরিবর্তন করতে চাইলে আগামী ৭ জুলাই থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করতে পারবে।
এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, আসন খালি থাকা সাপেক্ষে ২য় মেধা তালিকার প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার আগামী ১৪ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই। পরে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে ৩য় মেধা তালিকার প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের তারিখ ও সময় পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
জানা যায়, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যেসব কাগজপত্র সাক্ষাৎকারে উপস্থাপন করতে হবে তা হলো-ভর্তি পরীক্ষার হলের পরিদর্শক কর্তৃক স্বাক্ষরিত ভর্তি পরীক্ষার মূল প্রবেশপত্র। মাধ্যমিক/সমমান এবং উচ্চ মাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষার মূল প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট অথবা সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশংসাপত্র। সদ্য তোলা আট কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে ক্লাস শুরুর তারিখ জানানো হবে। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংশোধনের ক্ষেত্রে ইউনিট কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
ঢাকা/তানিম/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র ইউন ট র র ভর ত ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
হজরত আদম (আ.) এবং পৃথিবীতে তাঁর প্রথম আবাস
আমাদের এই পৃথিবীতে মানবজাতির ইতিহাস শুরু হয়েছিল নবী হজরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমে। আল্লাহ তায়ালা যখন ফেরেশতাদের উদ্দেশে ঘোষণা করলেন, ‘আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে যাচ্ছি,’ তখনই মূলত সূচনা ঘটে মানব ইতিহাসের। ফেরেশতারা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আপনি কি এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে সেখানে ঝগড়া-ফাসাদ ও রক্তপাত ঘটাবে?’
আল্লাহ তায়ালা তখন বলেন, ‘আমি যা জানি তোমরা তা জানো না।’ (সুরা বাকারা, ৩০-৩৪)
কোরআনে উল্লেখ আছে, আল্লাহ তাঁকে সৃষ্টি করেছেন ‘শুষ্ক কাদামাটি থেকে, যা রূপান্তরিত হয়েছিল কালচে শুকনো মাটিতে।’ (সুরা হিজর, ২৬)
আল্লাহ নিজ হাতে আদম (আ.)-এর অবয়ব তৈরি করেন, তাতে প্রাণ ফুঁকে দেন এবং ফেরেশতাদের আদেশ করেন তাকে সেজদা করতে।আল্লাহ নিজ হাতে আদম (আ.)-এর অবয়ব তৈরি করেন, তাতে প্রাণ ফুঁকে দেন এবং ফেরেশতাদের আদেশ করেন তাকে সেজদা করতে। সকল ফেরেশতা তাকে সেজদা করলেও শয়তান অহংকারের কারণে তা অস্বীকার করে এবং চিরকালীন অভিশপ্ত হয়ে যায়। এই অহংকার-অবাধ্যতার প্রতিচ্ছবি পরবর্তীকালে মানবজীবনের পরীক্ষার অংশ হয়ে যায়। (সুরা হিজর-এর ব্যাখ্যা, তাফসিরে তাবারি)
জান্নাতে আদম (আ.) শান্তি ও আনন্দে জীবনযাপন করছিলেন। আল্লাহ তাঁর জন্য সঙ্গী হিসেবে সৃষ্টি করলেন হাওয়া (আ.)-কে। উভয়েই জান্নাতের ফলভরা বাগানে নির্ভাবনায় ছিলেন, যতক্ষণ না শয়তান তাঁদের প্রতারণায় ফেলে দেয়। শয়তান আল্লাহর নিষেধ করা গাছের ফল খেতে প্রলুব্ধ করে। ফলে তাদের জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়।
আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সবাই নামো পৃথিবীতে, একে অপরের শত্রু হিসেবে। সেখানে তোমাদের জন্য থাকবে বাসস্থান ও জীবিকা কিছু সময়ের জন্য।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত: ২৪)
আরও পড়ুনআদম (আ.)–কে যে দোয়া শিখিয়ে দেন আল্লাহ ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪বিভিন্ন তাফসির গ্রন্থের ভাষ্যমতে, আদম (আ.) অবতরণ করেন পৃথিবীর দক্ষিণ প্রান্তে, বর্তমান শ্রীলঙ্কার সেরেন্দিব বা আদম ’স পিক নামক এক পাহাড়ে। ইবনে আব্বাস রা.-এর সূত্রে ইমাম তাবারি ও ইবনে কাসিরের বর্ণনা অনুযায়ী, আদম (আ.)-এর পায়ের ছাপ সেই পাহাড়ের চূড়ায় দীর্ঘকাল ধরে মুসলিম, বৌদ্ধ ও হিন্দু ঐতিহ্যে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে হাওয়া (আ.) অবতরণ করেন আরবের জেদ্দা শহরে, যার নামের অর্থই ‘দাদি’। ইসলামি ইতিহাসবিদ ইমাম সুয়ুতি উল্লেখ করেন, বহুদিন পর তাঁদের পুনর্মিলন ঘটে মক্কার নিকটে আরাফাতের ময়দানে। সে কারণেই এ স্থানটির নাম ‘আরাফাত’, যার অর্থ ‘পরিচিত হওয়া’। (ইমাম তাবারি, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক; ইমাম ইবনে কাসির, কাসাসুল আম্বিয়া; ইমাম সুয়ুতি, আদ-দুররুল মানসুর)
পৃথিবীতে এসে আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) মানবজীবনের প্রথম অধ্যায় রচনা করেন। আল্লাহ তাদের কৃষিকাজ, পোশাক তৈরির জ্ঞান এবং পারস্পরিক সহাবস্থানের শিক্ষা দেন। ইবনে কাসির (রহ.) বর্ণনা করেন, আদম (আ.) ছিলেন প্রথম নবী ও প্রথম শিক্ষক যিনি তার সন্তানদের আল্লাহর একত্ববাদ ও ন্যায়পরায়ণতার শিক্ষা দিতেন।
মানবজাতির প্রথম সংঘাতও ঘটে তাদের সন্তান কাবিল ও হাবিলের মাধ্যমে। এই ঘটনাই মানবসমাজে ন্যায়বিচার ও অনুশোচনার প্রাথমিক শিক্ষা হিসেবে গৃহীত হয়। (সুরা মায়িদাহ, ২৭–৩১; তাফসিরে ইবনে কাসির; ইমাম নববি, শারহে মুসলিম)
আরও পড়ুনআদম-হাওয়া (আ.)-এর বিয়ে ও সন্তান১৭ নভেম্বর ২০২৪মানবজাতির প্রথম সংঘাতও ঘটে তাদের সন্তান কাবিল ও হাবিলের মাধ্যমে। এই ঘটনাই মানবসমাজে ন্যায়বিচার ও অনুশোচনার প্রাথমিক শিক্ষা হিসেবে গৃহীত হয়।কোনো কোনো তাফসিরকার উল্লেখ করেছেন, আদম (আ.) পরবর্তীতে মক্কা অঞ্চলে চলে আসেন এবং সেখানে প্রথম ইবাদতের ঘর বাইতুল্লাহ নির্মাণ করেন। ইমাম ইবনে কাসির ও ইমাম কুরতুবির মতে, এই ঘরটি পৃথিবীর প্রথম ইবাদত কেন্দ্র, যা পরে নবী ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) পুননির্মাণ করেন। (ইবনে কাসির, কিসাসুল আম্বিয়া; কুরতুবি, তাফসিরে সুরা আল-বাকারা)
ইসলামি বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী যদিও পৃথিবীতে আদম (আ.)-এর পদচিহ্ন সম্পর্কিত স্থানগুলোর নির্দিষ্ট কোনো ভিত্তি নেই, তবু শ্রীলঙ্কার আদম’স পিক এখনো বহু মুসলমানের কাছে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত। অন্যান্য ধর্মের মানুষও এ স্থানকে পবিত্রজ্ঞান করে থাকে।
জেদ্দায় হাওয়া (আ.)-এর সমাধিস্থল হিসেবে পরিচিত স্থানের ঐতিহ্য ইসলামি ঐতিহাসিক সূত্রে বিদ্যমান, যদিও আধুনিক কালে তা চিহ্নিত নয়। আরাফাত ময়দান আজও হজের অন্যতম কেন্দ্র; যেখানে লক্ষ লক্ষ মুসলমান আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর পুনর্মিলনের স্মৃতিতে দাঁড়িয়ে তাওবা করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে।
আরও পড়ুনহজরত আদম (আ.) বিশ্বের প্রথম নবী০৭ জানুয়ারি ২০২৫