৩৫ বছরের কর্মজীবন শেষে রাজকীয় বিদায় পেলেন ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুলের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। সন্তোষ লাল নামের ষাটোর্ধ্ব পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বিদায়ের দিনটি পরিণত হয়েছিল আবেগঘন মিলনমেলায়। প্রাক্তন–বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সহকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সবার প্রিয় ‘সন্তোষদা’ বিদায় নেন ফুলসজ্জিত গাড়িতে। স্কুলের স্কাউট শিক্ষার্থীরা তাঁকে দেয় বিদায়ী ‘গার্ড অব অনার’। গলায় ফুলের মালা, হাতে উপহারের ব্যাগ নিয়ে সজল চোখে তাঁর বিদায় হয়ে ওঠে স্মরণীয়।

স্কুল সূত্র জানায়, ২২ জুন ছিল ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুলের পরিচ্ছন্নতাকর্মী সন্তোষ লালের বিদায়ী দিন। এ উপলক্ষে বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে আয়োজিত হয় বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। বিদায়ী উপহার হিসেবে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি, প্রধান শিক্ষক, প্রভাতি ও দিবা শাখার শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় উপহার। দিবা শাখার শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে ৫৪ হাজার টাকা, প্রভাতি শাখা থেকে ৫০ হাজার, দিবা শাখার শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৬০ হাজার ৫৭০, প্রভাতি শাখার শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৫৯ হাজার ১৩০ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭৫০ টাকাসহ মোট ৪ লাখ ৪৫০ টাকা তুলে দেওয়া হয় তাঁর হাতে।

সন্তোষ লালের বাবা কানু লালও ছিলেন এ বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। পরে যোগ দেন সন্তোষ লাল ও তাঁর স্ত্রী সনজু রানী। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে স্ত্রীও এ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে সন্তোষ লাল ফেনী পৌর এলাকার সুলতানপুরে বসবাস করছেন। হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস ও পায়ে সংক্রমণের কারণে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যান।

বিদায়বেলায় টাকার পাশাপাশি পেয়েছেন আসবাবসহ নানা উপহার। আবেগাপ্লুত সন্তোষ লাল চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি এমন ভালোবাসা পেয়ে। স্কুল প্রাঙ্গণে তাঁকে স্কাউট দল ব্যান্ড বাজিয়ে গার্ড অব অনার দেয়। শেষে ফুলসজ্জিত গাড়িতে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

বিদায়ের মুহূর্তে সন্তোষ লাল বলেন, ‘আপনাদের ভালোবাসায় আমি আবেগাপ্লুত। একদিকে খুবই আনন্দিত, আবার অপর দিকে খুব কষ্ট হচ্ছে যে আমাকে স্কুল ছেড়ে যেতে হচ্ছে। আমার মতো একজন সাধারণ কর্মচারীকে এত শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দিয়ে বিদায় জানানো হবে, তা কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। দীর্ঘ কর্মজীবনের অনেক স্মৃতি আজ ভেসে উঠছে, এই স্মৃতিগুলো নিয়েই বাকি জীবন কাটিয়ে দেব।’

বিদায়ের সময় সন্তোষলালের হাতে তুলে দেওয়া নগদ টাকাসহ উপহার সামগ্রী। ২২ জুন ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুল মিলনায়তনে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপহ র

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। 

নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়।  পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ