৩৫ বছরের কর্মজীবন শেষে রাজকীয় বিদায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীর
Published: 24th, June 2025 GMT
৩৫ বছরের কর্মজীবন শেষে রাজকীয় বিদায় পেলেন ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুলের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। সন্তোষ লাল নামের ষাটোর্ধ্ব পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বিদায়ের দিনটি পরিণত হয়েছিল আবেগঘন মিলনমেলায়। প্রাক্তন–বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সহকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সবার প্রিয় ‘সন্তোষদা’ বিদায় নেন ফুলসজ্জিত গাড়িতে। স্কুলের স্কাউট শিক্ষার্থীরা তাঁকে দেয় বিদায়ী ‘গার্ড অব অনার’। গলায় ফুলের মালা, হাতে উপহারের ব্যাগ নিয়ে সজল চোখে তাঁর বিদায় হয়ে ওঠে স্মরণীয়।
স্কুল সূত্র জানায়, ২২ জুন ছিল ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুলের পরিচ্ছন্নতাকর্মী সন্তোষ লালের বিদায়ী দিন। এ উপলক্ষে বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে আয়োজিত হয় বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। বিদায়ী উপহার হিসেবে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি, প্রধান শিক্ষক, প্রভাতি ও দিবা শাখার শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় উপহার। দিবা শাখার শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে ৫৪ হাজার টাকা, প্রভাতি শাখা থেকে ৫০ হাজার, দিবা শাখার শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৬০ হাজার ৫৭০, প্রভাতি শাখার শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৫৯ হাজার ১৩০ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭৫০ টাকাসহ মোট ৪ লাখ ৪৫০ টাকা তুলে দেওয়া হয় তাঁর হাতে।
সন্তোষ লালের বাবা কানু লালও ছিলেন এ বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। পরে যোগ দেন সন্তোষ লাল ও তাঁর স্ত্রী সনজু রানী। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে স্ত্রীও এ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে সন্তোষ লাল ফেনী পৌর এলাকার সুলতানপুরে বসবাস করছেন। হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস ও পায়ে সংক্রমণের কারণে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যান।বিদায়বেলায় টাকার পাশাপাশি পেয়েছেন আসবাবসহ নানা উপহার। আবেগাপ্লুত সন্তোষ লাল চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি এমন ভালোবাসা পেয়ে। স্কুল প্রাঙ্গণে তাঁকে স্কাউট দল ব্যান্ড বাজিয়ে গার্ড অব অনার দেয়। শেষে ফুলসজ্জিত গাড়িতে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
বিদায়ের মুহূর্তে সন্তোষ লাল বলেন, ‘আপনাদের ভালোবাসায় আমি আবেগাপ্লুত। একদিকে খুবই আনন্দিত, আবার অপর দিকে খুব কষ্ট হচ্ছে যে আমাকে স্কুল ছেড়ে যেতে হচ্ছে। আমার মতো একজন সাধারণ কর্মচারীকে এত শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দিয়ে বিদায় জানানো হবে, তা কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। দীর্ঘ কর্মজীবনের অনেক স্মৃতি আজ ভেসে উঠছে, এই স্মৃতিগুলো নিয়েই বাকি জীবন কাটিয়ে দেব।’
বিদায়ের সময় সন্তোষলালের হাতে তুলে দেওয়া নগদ টাকাসহ উপহার সামগ্রী। ২২ জুন ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুল মিলনায়তনে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপহ র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল
তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”
তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।
জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”
ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”
তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল