মা হারালেন ভারতীয় সিনেমার প্রাক্তন অভিনেত্রী সানা খান। মঙ্গলবার (২৪ জুন) মুম্বাইয়ে অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান সানার মা সাইদা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

সানা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে দেওয়া পোস্টে এই দুঃসংবাদ জানান। তিনি লেখেন, “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আমার প্রিয় মা মিসেস সাইদা অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করার পর আল্লাহর কাছে ফিরে গিয়েছেন। এশার নামাজের পর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ওশিওয়ারা কবরস্থানে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আমার মায়ের জন্য আপনাদের দোয়া সহায়ক হবে।”

মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে পা রাখেন সানা খান। বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে টেলিভিশন রিয়েলিটি শোয়ে অংশ নিয়েছেন। জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস সিজন-সিক্স’-এ সেরা তিনে জায়গা করে নিয়েছিলেন।

আরো পড়ুন:

কুবেরা: কে কত কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিলেন?

দেশি লুকে রাশমিকা, শাড়ির মূল্য কত?

২০০৫ সালে ‘ইয়েহি হ্যায় হাই সোসাইটি’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন। ২০০৬ সালে ‘ই’ সিনেমার মাধ্যমে তামিল ভাষার সিনেমায় অভিষেক ঘটে সানার। ২০১০ সালে ‘কল্যাণরাম কাথি’ সিনেমার মাধ্যমে তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন সানা। ২০১৩ সালে ‘ক্ল্যাইমেক্স’ সিনেমার মাধ্যমে মালায়ালাম ভাষার সিনেমায় অভিষেক ঘটে। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী।

২০২০ সালে সানা অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন। মানবিক কাজ ও ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করে বাকি জীবন কাটানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। একই বছর মুফতি আনাস সাঈদকে বিয়ে করেন সানা। এ সংসারে তাদের দুটো পুত্রসন্তান রয়েছে।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া কীভাবে করব

ইসলামে অসুস্থতা একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়, যা মুমিনের ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসাকে শক্তিশালী করে। অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করা একটি ফজিলতপূর্ণ আমল, যা রোগীর জন্য শান্তি ও সুস্থতা নিয়ে আসে এবং দোয়াকারীর জন্য আল্লাহর রহমত অর্জনের মাধ্যম।

মহানবী (সা.) অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ দোয়া ও আমল শিখিয়েছেন, যা হাদিসে বর্ণিত আছে।

রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত।অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া

ইসলামে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ব্যাপারে নবীজি (সা.) কয়েকটি নির্দিষ্ট দোয়া শিখিয়েছেন। এই দোয়াগুলো রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন। নিচে কয়েকটি প্রধান দোয়া উল্লেখ করা হলো:

১. নবীজি (সা.)-এর শেখানো দোয়া

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ ব্যক্তির জন্য এই দোয়া পড়তেন:

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বান নাস, আযহিবিল বাস, ইশফি আনতাশ শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফাউক, শিফাআন লা ইউগাদিরু সাকামা।

অর্থ: হে আল্লাহ! মানুষের প্রভু, রোগ দূর করো, সুস্থতা দাও, তুমিই সুস্থতা দানকারী। তোমার সুস্থতা ছাড়া কোনো সুস্থতা নেই, এমন সুস্থতা দাও যা কোনো রোগ রাখে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৪৩)

পড়ার নিয়ম:

রোগীর ডান হাত দিয়ে তার কপাল বা শরীরের ব্যথার স্থানে হাত রেখে এই দোয়া পড়া।

তিনবার বা সাতবার পড়া উত্তম।

রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন।

আরও পড়ুননববিবাহিতদের জন্য তিনটি দোয়া২১ জুলাই ২০২৫

২. সুরা ফাতিহা পড়া

সুরা ফাতিহা রোগ নিরাময়ের জন্য অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে আছে, সুরা ফাতিহা শিফা বা নিরাময়ের জন্য পড়া যায়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, একজন সাহাবি সুরা ফাতিহা পড়ে একজন রোগীকে সুস্থ করে দিয়েছিলেন, এবং নবীজি (সা.) এটি অনুমোদন করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৩৬)

যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২

পড়ার নিয়ম:

সুরা ফাতিহা সাতবার পড়ে রোগীর শরীরে ফুঁ দেওয়া।

রোগীর কপালে বা ব্যথার স্থানে হাত রেখে পড়া উত্তম।

৩. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস

এই তিনটি সুরা (সুরা ইখলাস: ১১২, সুরা ফালাক: ১১৩, সুরা নাস: ১১৪) অসুস্থতা থেকে সুস্থতা ও সুরক্ষার জন্য পড়া হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ হলে এই তিনটি সুরা পড়তেন এবং শরীরে ফুঁ দিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং: ৫,০১৭)

তিনটি সুরা তিনবার করে পড়া।

পড়ার পর হাতে ফুঁ দিয়ে রোগীর শরীরে মুছে দেওয়া।

৪. সাধারণ দোয়া

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য নিজের ভাষায়ও দোয়া করা যায়। উদাহরণ: ‘হে আল্লাহ! আমার/তার রোগ দূর করো, সুস্থতা দান করো, তুমি সব ক্ষমতার মালিক।’ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ইবাদতের মূল।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩,৩৭১)

নিজের ভাষায় দোয়া করার সময় আন্তরিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা জরুরি।

আরও পড়ুনসন্তানকে বদ দোয়া করবেন না২১ এপ্রিল ২০২৫অসুস্থ ব্যক্তির জন্য আমল

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায়, তার জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন: তুমি পবিত্র হও, তোমার পথ পবিত্র হোক এবং তুমি জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৫৬৮)

রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে মুমিন ধৈর্যের সঙ্গে অসুস্থতা সহ্য করে, আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৫২)

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ফজিলত অপরিসীম। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।’’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২)

এছাড়া, অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।

দোয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা গ্রহণ করা, কারণ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি রোগের জন্য চিকিৎসা রয়েছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৭৮)

দোয়া করার সময় শিরক বা অপ্রমাণিত পদ্ধতি এড়ানো দরকার। শুধু কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত দোয়া ব্যবহার করব আমরা।

আরও পড়ুনদোয়া কীভাবে করতে হয়২০ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ