যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কয়েক দশক পিছিয়েছে: ট্রাম্প
Published: 25th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কারণে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কতটা পিছিয়েছে বলে মনে করেনি তিনি। জবাবে বলেন, তিনি মনে করেন, ‘মূলত কয়েক দশক। আমি মনে করি তারা যদি এটি পেত তাহলে তারা নরকে যেত। সবশেষ তারা সমৃদ্ধকরণ করতে চেয়েছিল। ওই আঘাত যুদ্ধের সমাপ্তি টেনেছে।’ খবর-বিবিসি
উল্লেখ্য, পেন্টাগনের একটি গোয়েন্দা পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা দেশটির পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি। সম্ভবত এটি ‘কয়েক মাস পিছিয়েছে’।
ট্রাম্প ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাতের বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে, ‘দুটি বাচ্চা একই স্কুল প্রাঙ্গণে’।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজা যুদ্ধের ক্ষেত্রেও ‘বড় অগ্রগতি’ হচ্ছে। গাজার বিষয়ে একটি চুক্তির একেবারেই কাছে আমরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরম ণ য ক তর ষ ট র র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনায় দেশে–বিদেশে কাউকে পাশে না পেয়েও কেন অনড় নেতানিয়াহু
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের দুই বছর হতে আর দুই মাসের কম সময় বাকি। আর এমন সময় গাজায় সামরিক অভিযান আরও বিস্তৃত করতে ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভায় একটি প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। প্রস্তাবটি হলো—গাজা উপত্যকার গাজা সিটির দখল নেওয়া। পরিকল্পনাটি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নিজেরই তৈরি করা। তিনিই এটি উত্থাপন করেছেন। পরিকল্পনাটি যতটা না সামরিক কৌশল, তার চেয়ে বেশি নেতানিয়াহুর নিজের রাজনৈতিক অবস্থান জোরদারের প্রচেষ্টাটা।
প্রস্তাবটি নিয়ে ইসরায়েলের সামরিক নেতৃত্ব ব্যাপক আপত্তি জানিয়েছিল। এ নিয়ে সতর্কও করা হয়েছিল। এরপরও পরিকল্পনাটি অনুমোদন করা হয়েছে। সামরিক নেতৃত্ব বলেছিল, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে গাজায় মানবিক সংকট আরও বাড়বে এবং সেখানে থাকা ৫০ জিম্মির জীবন বিপন্ন হবে।
অনেক জরিপে দেখা গেছে, ইসরায়েলের বেশির ভাগ মানুষ চায় যুদ্ধ বন্ধ হোক এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা হোক। তবে নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তটি সেনা বা সাধারণ মানুষের মতের সঙ্গে মিলছে না। বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিজের রাজনৈতিক অবস্থান টিকিয়ে রাখাটাই এখন নেতানিয়াহুর মূল চিন্তা ।সামরিক অভিযান বিস্তৃত করার পরিকল্পনাটি এমন সময়ে করা হয়েছে, যখন কিনা বিশ্বে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন কমে গেছে। এমনকি গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলি জনগণের সমর্থনও কমে গেছে।
তবু নেতানিয়াহু তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে হাঁটছেন। কারণ, এর মধ্য দিয়ে তাঁর অন্ততপক্ষে একটি হলেও রাজনৈতিক ফায়দা হবে। সেটি হলো, এর মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য লড়াই করার সময় পাবেন। তাঁর কট্টর ডানপন্থী জোটের সঙ্গীরাও চান যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হোক।
নেতানিয়াহুর মিত্র আরও দুই উগ্রবাদী ইহুদি নেতা ইতামার বেন গভির এবং বেজালেল স্মোট্রিচ একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন যে যুদ্ধ বন্ধ হলে তাঁরা জোট সরকার ভেঙে দেবেন। আর এই হুমকির মধ্য দিয়ে তাঁরা বারবারই যুদ্ধবিরতি আলোচনার অগ্রগতি আটকে দিয়েছেন।
নেতানিয়াহু এমন একটি পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিচ্ছেন, যা কারোরই মনই জোগাতে পারছে না। একদিকে যেমন বিদেশে ইসরায়েলের মিত্র, দেশের সামরিক নেতৃত্ব, যুদ্ধ থামাতে চাওয়া সাধারণ মানুষ—কারোরই সমর্থন পাচ্ছে না এটি; অপর দিকে নেতানিয়াহুর জোটের কট্টরপন্থী নেতারাও এই পরিকল্পনা নিয়ে অখুশি। তাঁরা মনে করছেন, পরিকল্পনাটি যথেষ্ট নয়।বেন গভির এবং স্মোট্রিচ যা চান, সে তুলনায় নেতানিয়াহুর গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনাটি কমই বলা চলে। কারণ, বেন গভির ও স্মোট্রিচ চান প্রথম ধাপে পুরো গাজা উপত্যকা দখল করে সেখানে নতুন করে ইহুদি বসতি স্থাপন শুরু করতে। আর শেষ পর্যন্ত তাঁরা পুরো ভূখণ্ডটিকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করে নিতে চান। বৈঠকের আগে নেতানিয়াহু নিজেও যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সে তুলনায়ও তাঁর নতুন পরিকল্পনার পরিসর ছোট।
গত বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইসরায়েল পুরো গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। তিনি এমনভাবে বলছিলেন, যেন অঞ্চলটি পুরোপুরি দখলের সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নিয়ে ফেলেছেন।
তবে ইসরায়েলের নেতা এখন ধাপে ধাপে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছেন। প্রথম ধাপের লক্ষ্য হলো, শুধু গাজা সিটির দখল নেওয়া। কাছাকাছি থাকা অন্যান্য শিবিরের দখল এখনই নেওয়া হবে না।
ধারণা করা হয়, ওই শিবিরগুলোতে ২০ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। নেতানিয়াহু খুব সচেতনভাবে অভিযান শুরুর জন্য দুই মাসের ঢিলেঢালা একটি সময়সীমা দিয়েছেন। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে কূটনৈতিক চেষ্টার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তির সুযোগ রাখা হয়েছে। পুরো পরিকল্পনা বাতিল করারও সুযোগ আছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু