চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের তুলাতলী মৌজায় বনভূমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ‘কোহিনূর স্টিল’ নামের একটি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

বুধবার (২৫ জুন) সকাল থেকে চালানো এ অভিযানে প্রতিষ্ঠানটির অফিসসহ দুটি ভবন, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, খুঁটি ও কাঁটাতারের ঘেরা পুরো স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, অনুমোদন ও ইজারা ছাড়াই আনুমানিক ৭ দশমিক ১০ একর বনভূমির ওপর দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এ সংক্রান্ত একাধিক নোটিশ দেওয়ার পরও দখল না ছাড়ায়, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.

আল আমিন হোসেন ও মো. মঈনুল হাসানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। সেনাবাহিনীর একটি দল, র‍্যাব, পুলিশ, আনসার, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা অভিযানে অংশ নেয়।

তুলাতুলী মৌজার বি.এস. খতিয়ান নম্বর এবং দাগ নম্বর ৪৯৪ অনুযায়ী উক্ত জমি গেজেটভুক্ত বনভূমি হওয়ায় সেখানে জাহাজ ভাঙা ইয়ার্ড স্থাপন বৈধ নয়। অতীতে কখনোই এই দাগে শিল্প প্রতিষ্ঠানের ইজারা দেওয়া হয়নি। এমনকি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, রাজা কাশেম ও তার স্ত্রীর নামে বরাদ্দ চেয়ে করা আবেদনও নামঞ্জুর করে জেলা প্রশাসন।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অনুমোদিত ৭টি শিল্পমৌজায় শিল্প কারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে, কিন্তু তুলাতুলী অঞ্চল এসবের অন্তর্ভুক্ত নয়, এটি বনভূমি। সে কারণে পরিবেশ রক্ষায় ও আইন অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এই অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছে। উচ্ছেদ শেষে জমিটি সরকারের হেফাজতে নেওয়া হয় এবং পুনরায় দখল রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, গাজীপুরের বাউপাড়া বিট এলাকায় প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ১০ শতাংশ বনভূমি উদ্ধার করে সেখানে নতুন করে বনায়ন করেছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশের আড়াইশ প্রাসাদ মৌজার আরএস ৬৫১ নম্বর দাগের এই সরকারি বনভূমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছিল নিটল মটরস লিমিটেড।সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি সেখানে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করলে বন বিভাগ তা বন্ধ করার চেষ্টা করেন।তবে নিটল মটরসের কর্মকর্তারা নিষেধ উপেক্ষা করে রাতে গোপনে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যান। ঘটনার পর বিট কর্মকর্তা ঘটনাস্থল থেকে নির্মাণ সামগ্রী জব্দ করেন এবং একটি মামলা করা হয়। বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে বনভূমিটি দখলমুক্ত করা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বনভ ম

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”

তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”

ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ