টিএসসি ও ভিসি চত্বরে সব সময় পুলিশ থাকবে, ক্যাম্পাসজুড়ে টহলও দেবে
Published: 25th, June 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করতে টিএসসি ও ভিসি চত্বর এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। আজ বুধবার এ তৎপরতা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের মূল সড়কগুলোয় প্রক্টরিয়াল টিমের সঙ্গে পুলিশের টহলও অব্যাহত থাকবে।
আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে আজ এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলমসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ক্যাম্পাসের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা.
এদিকে গতকাল টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে ককটেল ফোটানোর ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এতে বলা হয়, ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্মিলিতভাবে অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে কাজ করছে।
জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। অচিরেই এই মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। একই সঙ্গে তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়াও এগিয়ে চলেছে। পিবিআই মামলার তদন্ত কাজ প্রায় শেষ করেছে। আগামী ২৪ জুলাই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা জোরদার করতে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের স্মারকলিপি
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা জোরদার করতে ৬ দফা দাবিতে প্রক্টরের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। আজ বিকেলে প্রক্টর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের দাবিগুলো হলো, অতিসত্ত্বর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করা, সংরক্ষণ ও নজরদারি বাড়ানো; নতুন করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সিসিটিভি স্থাপন করা; দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদের টহল বাড়ানো; নিরাপত্তা টহলের গাড়িসহ প্রয়োজনীয় টুলের সংখ্যা বাড়ানো; ইতিমধ্যে সংঘটিত ‘সব সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা এবং ছাত্রীদের হলে প্রক্টরিয়াল টিমের বিশেষ নজরদারি বাড়ানো ও উদ্বাস্তু উচ্ছেদ করে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এ বিষয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, প্রক্টর স্যারের সঙ্গে দেখা করে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা জোরদার করতে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরা হয়। পুরো ক্যাম্পাসকে সিসিটিভির আওতায় আনা, অকার্যকর ও অচল সিসি ক্যামেরাগুলো প্রতিনিয়ত তদারক করার মাধ্যমে সচল করাসহ নারীদের দূরবর্তী হলগুলোয় বিশেষ তদারকির দাবি জানানো হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
যাচ্ছিলেন বিয়ের দিন ঠিক করতে, পথে ২ জনকে পিটিয়ে হত্যা
রংপুরের তারাগঞ্জে ভ্যানচোর সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে ৯টার দিকে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
রবিবার (১০ আগস্ট) তারাগঞ্জ থানার ওসি এমএ ফারুক বলেন, “গণপিটুনিতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। মামলা প্রস্তুতি চলছে।”
নিহতরা হলেন, তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুরের রুপলাল দাস (৪০) এবং মিঠাপুকুরের বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)। সম্পর্কে তারা আত্মীয়।
আরো পড়ুন:
সিলেটে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
সাংবাদিক তুহিন হত্যা: আরো একজন গ্রেপ্তার
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী জানান, নিহত রুপলাল দাসের মেয়ে নুপুর দাসের বিয়ের কথা চলছিল মিঠাপুকুরের শ্যামপুর এলাকার লালচাদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। রবিবার বিয়ের দিনতারিখ ঠিক করার কথা ছিল।
মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ের প্রদীপ দাস আত্মীয় রুপলাল দাসের বাড়ির দিকে রওনা হন। গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় গিয়ে রুপলালকে ফোন করেন। রুপালাল গেলে তারা দুইজনে ভ্যানে করে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন।
রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যান চোর সন্দেহে তাদের কয়েকজন আটক করেন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে প্রদীপ দাসের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল বের করেন লোকজন। এর একটি বোতল খুললে ভেতরে থাকা তরলের ঘ্রাণে অসুস্থ হয়ে পড়েন পাশারিপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক আলমগীর হোসেন ও বুড়িরহাটের মেহেদী হাসান। ফলে লোকজনের সন্দেহ আরো বেড়ে যায়।
এরপর ভ্যান চোর সন্দেহে তাদের মারধর শুরু করেন এলাকাবাসী। বটতলা থেকে মারতে মারতে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে আসা হয় তাদের। মারধরের একপর্যায়ে অচেতন হলে সেখানে ফেলে রাখা হয় তাদের। রাত ১১টায় আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
তারাগঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসক রুপলাল দাসকে মৃত্য ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে। আজ রবিবার ভোরে তিনিও মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন নিহত রুপলাল দাসের ভাই খোকন দাস।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ