ঢাকা-২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বেনজির আহমেদের চারটি ফ্ল্যাট ও একটি প্লটসহ মোট ১৯৩ শতাংশ জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের করা পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার আবেদন দুটি করেন।

বেনজিরের নামে রাজধানীর ইস্কাটন, ধানমন্ডি ও ঢাকার ধামরাইয়ের চারটি ফ্ল্যাট ও পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট রয়েছে। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা তিনটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, একটি মোটরযান ও ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাঁর স্ত্রী সাহিনা বেগমের একটি কোম্পানির শেয়ার, একটি ডিপোজিট ও দুটি ব্যাংক হিসাবের ১ কোটি ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৩ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। বেনজিরের জব্দ সম্পদের আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ৮০ লাখ ৪৫ হাজার ২৮০ টাকা। শেয়ার, মোটরযান ও ৯ ব্যাংক হিসাবে আছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৪৯ হাজার ২৮৬ টাকা।

মৃণাল কান্তি দাসের সম্পদ জব্দ

সাবেক এমপি মৃণাল কান্তি দাস ও তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা জমি, ফ্ল্যাট, প্লট, অ্যাপার্টমেন্টসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার ঢাকার একই আদালত এ আদেশ দেন।

জব্দ করা সম্পদের মধ্যে মৃণাল কান্তি দাসের নামে রয়েছে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ১৮ লাখ টাকা মূল্যমানের একটি অ্যাপার্টমেন্ট, পূর্বাচলে ২০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি প্লট, ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা মূল্যমানের মোটরগাড়ি। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে তাঁর নামে থাকা ৮টি হিসাবে মোট ৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, মৃণালের স্ত্রী নীলিমা দাসের নামে মোহাম্মদপুরে সাড়ে ১২ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি, ২০ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৩০টি ব্যাংক হিসাবে মোট ১০ লাখ ৬১ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

পিএ জাহাঙ্গীরের কোটি টাকা অবরুদ্ধ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মো.

জাহাঙ্গীর আলমের দুটি ব্যাংক হিসাব ও সঞ্চয়পত্রের ১ কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৩২৯ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার ঢাকার একই আদালত এ আদেশ দেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবর দ ধ র একট

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ