আগামী ২৮ জুন ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের মহাসমা‌বেশ। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ‌্যা‌নে অনু‌ষ্ঠিত হ‌বে এই মহাসমা‌বেশ।সমা‌বে‌শে রাজনৈতিক নেতা‌দের মিলন ঘটা‌নোর পাশাপা‌শি দশ লাখ লো‌কের জমা‌য়েত ক‌রে বড় ধর‌নের শোডাউন করার প্রস্তু‌তি নি‌য়ে‌ছে দল‌টি।

মহাসমা‌বেশ প্রস্তু‌তি নি‌য়ে দল‌টির মহাস‌চিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, “এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে আমরা গে‌ছি। সংস্কার, বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জনমানুষের কাছে ‌পৌঁছে দি‌য়ে‌ছি। দেশের প্রতিটি এলাকায় পোস্টার, লিফলেট, ফেস্টুন, ব্যানার টানা‌নো হয়েছে। এলাকায় এলাকায় গণমিছিল, মোটরসাইকেল শোডাউন হয়েছে।”

তিনি বলেন, “সমা‌বে‌শে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকেই যানবাহন ভাড়া করা হয়েছে। দশ লাখ জনতা ২৮ তারিখে ঢাকায় জমায়েত হবে ইনশাআল্লাহ।”

মহাসমা‌বে‌শের সর্ব‌শেষ প্রস্তু‌তি নি‌য়ে বৃহস্প‌তিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ স‌ম্মেলনের আ‌য়োজন ক‌রে ইসলামী আন্দোলন।

ব্রিফিংয়ে আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে নানাদিক তুলে ধরেন।

তিনি জানান, মহাসমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দলের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমকে আহ্বায়ক করে ২৪ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১২টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। মহাসমাবেশের মাঠ তথা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রশাসনিক অনুমতি সম্পন্ন হয়েছে। স্টেজ নির্মাণসহ সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ের রয়েছে।মহাসমাবেশ এলাকার নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় নিজস্ব বিশাল স্বেচ্ছাসেবক দল ইতিমধ্যে প্রস্তুত রয়েছে।

তি‌নি বলেন, “আমাদের মহাসমাবেশের প্রচারণায় দেশব্যাপী মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়েছি তাতে আমরা আপ্লুত। তবে ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল আমাদের প্রচারকার্য ব্যবত করার জন্য মুন্সীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মহাসমাবেশের ব্যানার বিলবোর্ড ছিড়ে ফেলেছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নব্য ফ্যাসিবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ। আমরা এসব কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই।”

এ সময় দ‌লের যুগ্ম মহাসচিব এবং দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, “আমরা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তারা আমাদের আমন্ত্রণ উৎসাহের সাথে গ্রহণ করছেন। ইনশাআল্লাহ জাতীয় নেতাদের একটি মিলনমেলা হতে যাচ্ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ২৮ জুনের মহাসমাবেশ।”

তি‌নি বলেন, “গণহত্যার বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরে আমরা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন চাই।”

গাজী আতাউর রহমান জাতীয় মহাসমাবেশ সফলের লক্ষ্যে ঢাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি পুলিশের হাইওয়ে ও ট্রাফিক বিভাগের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, “সারা দেশ থেকে কয়েক হাজার গাড়ি শুক্রবার রাতে ঢাকায় প্রবেশে করে শনিবার রাতে বের হবে। ফলে হাইওয়েগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে নেতাকর্মীদের আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আহ্বান করছি।”

লাইভ সম্প্রচারসহ মহাসমাবেশের ছবি ও সংবাদ প্রচারে মিডিয়া কর্মীদের সহায়তা কামনা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব।

তিনি মিডিয়া কর্মীদের জন্য গোছানো ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা হবে ব‌লেও আশ্বাস দেন।

উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব কেএম আতিকুর রহমান, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, উপদেষ্টা কৃষিবিদ আফতাব উদ্দীন, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) মাওলনা আরিফুল ইসলাম, সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য মুফতি মোস্তফা কামাল।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক য় প রস ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্‌যাপন

উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।

আরো পড়ুন:

কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি

চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি

ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।

তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্‌যাপিত হবে জন্মদিন।

১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়। 

যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে। 

দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ