ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৬ বছরে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের তথ্য আহ্বান
Published: 26th, June 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি-সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ থাকলে তথ্যপ্রমাণসহ লিখিত আকারে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে এ বিষয়ক তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। তাঁর বরাবর অভিযোগ দাখিলের অনুরোধ করা হয়েছে।
গত ১৭ মার্চ সিন্ডিকেট বৈঠকে এ-সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও সিন্ডিকেট সদস্য তাজমেরী এস এ ইসলামকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ, লোকপ্রশাসন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও সিন্ডিকেট সদস্য আ কা ফিরোজ আহমদ, আইন অনুষদের বর্তমান ডিন। সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
‘একটি জাতি কতটা সভ্য, তা নির্ভর করে শিক্ষকদের মর্যাদা দেওয়ার ওপর’
‘একটি জাতি কতটা সভ্য, তা নির্ভর করে শিক্ষকদের মর্যাদা দেওয়ার ওপর। দেশের মেরুদণ্ড ঠিক রাখতে হলে শিক্ষকদের ভালো রাখতে হবে। শিক্ষকেরা আর্থিক, সামাজিকভাবে মর্যাদা না পেলে সে জাতি শিক্ষিত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারে না।’
আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা অনুষ্ঠান-২০২৫ উপলক্ষে ফরিদপুর অঞ্চলের সুধী সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতির সদস্যসচিব প্রবীণ শিক্ষক শেখ আব্দুস সামাদ। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর জিলা স্কুল মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
শেখ আব্দুস সামাদ তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বাড়িতে এক প্রাক্তন ছাত্র গিয়েছিলেন দেখা করতে, সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন দুই কেজি মিষ্টি। ওই মিষ্টি দেখে স্যার বলেছিলেন, দুই কেজি মিষ্টি না এনে দুই কেজি চাল নিয়ে এলে আমার অনেক উপকার হতো।’ কথাগুলো বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন শেখ আব্দুস সামাদ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ফরিদপুর মুসলিম মিশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এম এ সামাদ বলেন, ‘আমার জীবনে অনেক প্রিয় শিক্ষক আছেন। মাদ্রাসায় ছিলেন, স্কুলে ছিলেন, কলেজে ছিলেন। তাঁদের কাছে আমার জীবনের ঋণ ভোলার নয়।’
প্রবীণ শিক্ষক ও সাহিত্যের ফেরিওয়ালা হিসেবে খ্যাত অধ্যাপক আলতাফ হোসেন বলেন, বাবা ও মায়ের সঙ্গে ছেলে–মেয়েদের সম্পর্ক যেমন অবিচ্ছেদ্য, তেমনি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তিনি আইপিডিসি কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ বছর যাঁরা প্রিয় শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হবেন, তাঁদের জীবনকথা এবং নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁদের আবেগ-অনুভূতি নিয়ে যেন একটি বই প্রকাশ করা হয়। এটি করা গেলে তা অন্য শিক্ষকদের জন্য একটি আকর গ্রন্থ হয়ে থাকবে।
ফরিদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি শিপ্রা রায় বলেন, ‘দেশে শিক্ষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে। এক সরকার আসে নতুন নতুন শিক্ষা কমিশন করে, পাল্টে দেয় শিক্ষার কারিকুলাম। শিক্ষার্থীদের এই গিনিপিগ দশা থেকে উদ্ধার করা জরুরি।’ পাশাপাশি তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফরিদপুর মুসলিম মিশন কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্লা আল মামুন, ফরিদপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রীতিলতা সরকার, ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমল কুমার সাহা, ফরিদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ব্লাস্ট্রের সমন্বয়কারী শিপ্রা গোস্বামী। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ফরিদপুরের নিজস্ব প্রতিবেদক প্রবীর কান্তি বালা। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন আইপিডিসি ফরিদপুরের শাখা ব্যবস্থাপক রিজভী আহমেদ। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপনী বক্তব্য দেন আইপিডিসির বিপণন বিভাগের প্রধান মো. শহীদুল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফরিদপুর জেলা খেলাঘর এর সভাপতি আলতাফ হোসেন। অনুষ্ঠানের মাঝে ‘মজুমদার স্যার’ ও ‘আকতার স্যার’ শিরোনামে দুটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
জাতীয় সংগীত দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে গত ২১ জুলাই ঢাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ট্র্যাজেডিতে নিহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আয়োজকেরা জানান, শিক্ষকদের সম্মান জানাতে আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি ও প্রথম আলোর যৌথ উদ্যোগে পঞ্চমবারের মতো শুরু হয়েছে ‘আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২৫’। আগ্রহী ব্যক্তিরা অনলাইনে (www.priyoshikkhok.com) এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মনোনয়ন করতে পারবেন। চলতি বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক—এই দুই ক্যাটাগরি থেকে মোট সাতজন শিক্ষককে ‘প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২৫’ দেওয়া হবে। এই সম্মাননার জন্য মনোনয়নযোগ্য শিক্ষক হতে হলে তাঁর বয়স কমপক্ষে ৪০ বছর হতে হবে। কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত—উভয় অবস্থাতেই মনোনয়নযোগ্য। মনোনয়নদাতা ও শিক্ষক উভয়কেই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনজন শিক্ষককে মনোনয়ন দিতে পারবেন। এ ছাড়া এই মহান পেশার মানুষদের স্বপ্ন যেন শুধু অন্যদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে, তাই জীবন বদলের কারিগর সব শিক্ষকের স্বপ্নপূরণে আইপিডিসি নিয়ে এসেছে বিশেষ লোন—‘প্রজ্ঞা’।